সম্পাদকীয়: রাজনৈতিক দল গুলোর পরকাল শাখা চাই

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ ঢাকা নারী ও শিশু ফুলজান বিবির বাংলা বাংলার মুখোমুখি বাধ ভাঙ্গা মত সম্পাদকীয় সারাদেশ সারাবিশ্ব

DSC07875

বাংলাদেশের রাজনীতির সর্বশেষ আপডেট আমরা সকলেই জানি। মৃত্যুর পর শহীদ মিনারে কার কার লাশ আসতে পারবে তার তালিকা তৈরীর কাজ চলছে বলা আর ভূল হবে না। তবে তালিকাটি সরকার না মুক্তিযুদ্ধের পর জন্মগ্রহনকারীরা করছেন তা এখনো স্পষ্ট নয়। অবস্থাদৃষ্টে এই টুকু বলার মনে হয় সময় হয়েছে যে, আমাদের রাজনীতিকেরা ইহকাল শেষ করে এখন পরকালের দিকে দাবিতে হচ্ছেন। জীবদ্দশায় রাজনীতি করতে করতে নেতারা এখন পরকালের রাজনীতি চর্চা শুরু করেছেন। যারা মৃত্যুর পর  শহীদ মিনারে যাদের লাশ আনা হবে তাদের তালিকা করছেন তারা নিশ্চয়ই ওই সকল দলের পরকাল শাখার নেতাই হবেন। শহীদ মিনারে লাশ রাখতে বাঁধা প্রদানের প্রতিবাদ যারা করছেন তারাও পরকাল শাখার কাজ করছেন।

সুতরাং আমাদের রাজনীতি এখন পরকালের দিকে দাবিত হচ্ছে। পরকাল শাখার কাজ চলছে। সরকারী ও বিরোধী দলের উচিত ইহকাল ছেড়ে এখন পরকাল শাখার সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করা।

আওয়ামীলীগ,বিএনপি ও জাতীয় পার্টি যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন একজন নাগরিক হিসেবে আমরা লজ্জা পাই। কারণ তিনটি দলই জোরপূর্বক ভোট নিয়ে ক্ষমতা ভোগ করেছে ও করছে। আর আওয়ামীলীগ ও বিএনপি যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছে। এখন দুই দলই দাবি করছে তারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি।

তৃনমূল পর্যায়ের খবর পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, গ্রাম এলাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, ক্লাব বা সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয় পোষ্টার করে তুমুল প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ন নির্বাচনের মাধ্যমে।

DSC07815

দূর্ভাগ্য যে, ১৯৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী বিএনপি ৪৮টি আসনে প্রতিদ্বন্ধি এমপি প্রার্থীই খুঁজে পায় নি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী  আওয়ামীলীগ ১৫৩ আসনে প্রতিদ্বন্ধি এমপি প্রার্থী খুঁজতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। আর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সাহেব সকল দলের অংশ গ্রহনে কোন নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তাই অনুভব করেননি।

সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ভোটই দেননি। এরশাদ সাহেব মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকতে বাধ্য হয়েছেন। এরপরও তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। শপথ গ্রহন করেছেন। বর্তমানে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় আছেন।

আশ্চর্যলাগে বর্তমানে ওই তিনটি দলের প্রধানরা যখন গণতন্ত্রের কথা বলেন। জনগন সকল ক্ষমতার উৎস এই কথাটি মাইক দিয়ে বলেন। কিন্তু তাদের জানা নেই, তাদের কথা গুলো সত্য না মিথ্যা তা জনগন ভাল করেই জানেন।

বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি দূর্বল থাকার কারণে আওয়ামীলীগ সাংবিধানিক নির্বাচন করে এখন গনতান্ত্রিক সরকার হয়ে গেছে। আমরা বলতে শুনেছি, আওয়ামীলীগ নির্বাচনের সময় বলেছে, এটি সংবিধান রক্ষার নির্বাচন। এখন বলছে, ৫ বছরের আগে আর নির্বাচন নয়।

DSC07712

১৯৯৬ সালে বিএনপিও একই কথা বলেছিলো। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তারা চিনতই না। তবে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক শক্তির কাছে হার মানার কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সর্বদলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ভাগ্য আমাদের খারাপ যে, আওয়ামীলীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করলেও এখন বলছে দরকার নাই। আর বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার না চিনলেও এখন অচেনা সরকারের জন্য আন্দোলন করছে।

তাই আমরা সকলকেই চিনি। কে কতটুকু দেশপ্রেমিক তা আর জানার বাকী আমাদের নেই।

DSC07794

পরিশেষে বলতে হয়, গণতন্ত্রের আবরণে চলমান শাষন শোষন জনগন এখন আর চায় না। গনতন্ত্র নয়, রাজতন্ত্র হলে ভাল হয়। কারণ অকারণে জনগনকে পন্য হিসেবে ব্যবহার না করাই ভাল। রাজার ছেলে রাজা হবে প্রজার ছেলে প্রজা হবে এই প্রথাই আমাদের কাম্য। শুধু গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ বলে বুলি উড়িয়ে জনগনকে উপহাস করা মনে হয় ঠিক না।

সুতরাং আমাদের রাজনীতি গরীবের কুঁড়ে ঘর থেকে রাজার ঘরে চলে যাক। জনগণ আশামুক্ত হউক। এছাড়াও চিন্তার তেমন কোন কারণ নেই যে, ইহকালে নেতাদের সান্নিধ্যে থাকতে পারলে পরকালেও শান্তি হবে। কারণ আমাদের নেতারা এখন দলগুলোর পরকাল শাখার কাজ করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *