তত্ত্বাবধায়ক নয়, সহায়ক সরকারের প্রস্তাব খালেদার

Slider জাতীয় রাজনীতি

40792_khaleda

 

ঢাকা; নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে অবস্থান পরিবর্তন করেছে বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বদলে এখন তারা চাইছে ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার’। আগামীতে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা জাতির সামনের উপস্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও এর কাঠামো সম্পর্কে দলটির তরফে দেশবাসীর উদ্দেশে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবনা উপস্থানের সময় তিনি এ ঘোষণা দেন। খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনই যথেষ্ট নয়। নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক প্রশাসনিক ও লজিস্টিক সহযোগিতা প্রদান এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান ও নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা অসম্ভব। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার ব্যতিরেকে নতুন নির্বাচন কমিশনের সকল সহযোগিতা নিশ্চিত করা এবং সুষ্ঠু অবাধ , নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন যাতে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারে সেই উদ্দেশ্যেই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রয়োজন। আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ভবিষ্যতে যথাসময়ে জাতির সামনে উপস্থাপন করব। রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে গতকাল বিকালে অনুষ্ঠিত এ ‘প্রস্তাবনা উপস্থাপন’ অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন গঠনে ৭ দফা ও নির্বাচন কমিশন শক্তিশালীকরণে ১০ দফা প্রস্তাবসহ পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রস্তাবনা দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করেন।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে ৭ দফা সুপারিশ হচ্ছে- সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন, কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি নিরূপণের জন্য সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের বৈঠক, বাছাই কমিটি গঠন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক বৈঠকে বাছাই কমিটির সদস্য নিয়োগের জন্য প্রতি পদের বিপরীতে দুই জনের নাম ও পরিচয়সহ সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে পেশ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা নিরূপণ, বাছাই কমিটির বাছাইকৃত নাম প্রেসিডেন্টের কাছে নিয়োগের জন্য পাঠানো ও চূড়ান্তভাবে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নিয়োগ। নির্বাচন কমিশন শক্তিশালীকরণে প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- আরপিও’র ৫টি বিধি সংশোধন ও সংযোজন, কমিশনের নিজস্ব সচিবালয় গঠন, কমিশনে কর্মরত ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দলীয় আনুগত্য পোষণকারীদের তালিকা তৈরি, নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগ, নির্বাচনের সময় গুরুত্বপূর্ণ কিছু মন্ত্রণালয় কমিশনের অধিনে রাখা, নির্বাচনী আসনের সীমা পুনর্নির্ধারণ, নির্বাচনে প্রতিরক্ষাবাহিনী মোতায়েন, ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রদান, হয়রানিমূলক মামলায় কারাবন্দি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা, নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ম্যাজেস্ট্রিয়াল ক্ষমতা দেয়া, জাতীয়-স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ।
খালেদা জিয়া বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। এ গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিঃসন্দেহে তাঁদের নিরপেক্ষতা, যোগ্যতা এবং দায়িত্ব পালনের দৃঢ়তা প্রশ্নাতীত হতে হবে। দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশে বিশেষ করে গত দু’টি জাতীয় নির্বাচন ও কয়েক বছরের অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কমিশনের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা এবং পক্ষপাতমূলক আচরণ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণকে হতাশ, আস্থাহীন এবং ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। বৃহত্তর জাতীয় ও গণতন্ত্রের স্বার্থে এহেন পরিস্থিতি আর চলতে দেয়া যায় না। জনগণ পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন চান। খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়, সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা প্রণয়ন বাঞ্ছনীয়। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে (২০১৭) বর্তমান বিতর্কিত নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি নিরপেক্ষ, সৎ, সাহসী, দক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করার কোন বিকল্প নেই।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশে এই মুহূর্তে দুইটি প্রধান রাজনৈতিক জোট বিদ্যমান। তাই নির্বাচন কমিশন গঠনে বাছাই কমিটি গঠনের আলোচনায় এই দুই জোটের পক্ষ থেকে একজন করে মূল প্রতিনিধি ও দুইজন করে সহায়ক প্রতিনিধি উপস্থিত থাকতে পারবেন। প্রেসিডেন্ট নাগরিক সমাজের মধ্য হতে সৎ, যোগ্য ও দল নিরপেক্ষ প্রতিনিধিদেরকেও আলোচনায় যুক্ত করতে পারেন। নিবন্ধনকৃত সকল রাজনৈতিক দল বা, স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। সিইসি ও কমিশনারদের যোগ্যতা, অযোগ্যতা ও মনোনয়নের প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সকল রাজনৈতিক দল নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। প্রেসিডেন্টের অনুষ্ঠিত বৈঠকের সম্মত কার্যবিবরণী এবং বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো, সকল রাজনৈতিক দলের উপস্থিত প্রতিনিধিদের স্বাক্ষরযুক্ত দলিলরূপে, প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ও সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করবে।
বাছাই কমিটি: নির্বাচন কমিশনার বাছাই কমিটি গঠন নিয়ে প্রস্তাবে খালেদা জিয়া বলেন, প্রেসিডেন্ট নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবং অথবা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি বাছাই কমিটি গঠন করবেন। প্রেসিডেন্ট সর্বজন শ্রদ্ধেয় সৎ, নিরপেক্ষ, অভিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ, এবং নৈতিকতা ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটি গঠন করবেন। বাছাই কমিটির আহ্বায়ক হবেন জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অবসরপ্রাপ্ত ও কর্মক্ষম একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি। যিনি বিতর্কিত নন এবং অবসর নেয়ার পর সরকারের কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত নন বা ছিলেন না। সদস্য হবেন-আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত সৎ এবং দল নিরপেক্ষ একজন সচিব, অবসরপ্রাপ্ত সৎ এবং দল নিরপেক্ষ একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় দল নিরপেক্ষ একজন সৎ, দক্ষ ও যোগ্য জ্যেষ্ঠ নারী। যারা বিতর্কিত নন, অবসর নেয়ার পর সরকারের কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত নন বা ছিলেন না। তবে অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রী পরিষদ সচিব ও বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কোন কর্মকর্তা বাছাই কমিটির সদস্য হতে পারবেন না। নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল এবং অথবা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন প্রত্যেক রাজনৈতিক দল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক বৈঠকে বাছাই কমিটির সদস্য নিয়োগের জন্য প্রতি পদের বিপরীতে দুইজন করে নাম ও পরিচয়সহ সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে পেশ করবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের যোগ্যতার ব্যাপারে প্রস্তাবে খালেদা জিয়া বলেন, সর্বজন শ্রদ্ধেয় সৎ, মেধাবী, দক্ষ, সাহসী, প্রাজ্ঞ এবং নৈতিকতা, ব্যক্তিত্ব ও কর্ম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং সকল বিচারে দল-নিরপেক্ষ, বিতর্কিত নন এমন একজন ব্যক্তি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবেন। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি, বা বাংলাদেশ সরকারের একজন সচিব যিনি অবসর নেয়ার পর সরকারের কোন লাভজনক পদে নিয়োজিত নন বা ছিলেন না, বা একজন বিশিষ্ট নাগরিক-প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন। তবে অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রীপরিষদ সচিব এবং বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কোন কর্মকর্তা প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে পদায়নের যোগ্য হবেন না। সরকারের সচিব যিনি অবসর নেয়ার বা পদত্যাগের বা অপসারণের পর, কিংবা চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ সমাপ্তি বা চুক্তি বাতিলের পর তিন বছর সময়কাল অতিবাহিত করেননি, তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে পদায়নের যোগ্য হবেন না। একইভাবে একজন নারীসহ সর্বজন শ্রদ্ধেয়, সৎ, মেধাবী, দক্ষ, প্রাজ্ঞ, সাহসী, নৈতিকতা, ব্যক্তিত্ব ও কর্ম অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ও সকল বিচারে দলনিরপেক্ষ এবং বিতর্কিত নহেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে হতে চারজন নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত হতে পারবেন। অবসরপ্রাপ্ত ন্যূনপক্ষে জেলা জজের মর্যাদা সম্পন্ন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদা সম্পন্ন সামরিক কর্মকর্তা, যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার সরকারী কর্মকর্তা, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষাবিদ ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্য হতে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। তবে যিনি প্রজাতন্ত্রের বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের, বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের কোন চাকরি থেকে অবসর, পদত্যাগ, অপসারণ বা চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ সমাপ্তি বা চুক্তি বাতিলের পর তিন বছর অতিবাহিত করেননি তিনি নির্বাচন কমিশনার পদে পদায়নের যোগ্য হবেন না। এছাড়া নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দল এবং বা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদে থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন প্রত্যেক রাজনৈতিক দল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনার নিয়োগের জন্য প্রতি পদের বিপরীতে দুইজনের নাম ও পরিচয়সহ সুস্পষ্ট প্রস্তাব লিখিতভাবে পেশ করবে।
বাছাই চূড়ান্ত ও নিয়োগ: প্রস্তাবে খালেদা জিয়া বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল হতে প্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম প্রেসিডেন্ট বাছাই কমিটির কাছে পাঠাবেন। বাছাই কমিটি এই সব নাম হতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জন্য দুইজন ও কমিশনারের জন্য ৮ জনসহ ১০ জনের নাম বাছাই করবে। এই প্রক্রিয়ায় বাছাই কমিটি প্রথম প্রস্তাবিত ব্যক্তিদের বিষয়ে বিচার বিশ্লেষণ করবে। তাদের মধ্যে যেসব ব্যক্তির নাম সব রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবনায় অভিন্ন রয়েছে তাদের নাম প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানোর জন্য চূড়ান্ত করবে। প্রয়োজনীয় ১০ জন অভিন্ন পাওয়া না গেলে বাছাই কমিটি নিবন্ধনকৃত সকল রাজনৈতিক দল এবং অথবা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন সকল রাজনৈতিক দলের সাথে প্রয়োজন বারবার আলোচনা করবে। এই প্রক্রিয়ায় কোন রাজনৈতিক দল নতুন নাম প্রস্তাব করতে চাইলে বাছাই কমিটি ঐকমত্য পৌঁছার স্বার্থে প্রস্তাবিত নতুন নাম গ্রহণ করবে। বাছাই কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাক্রমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাকি নাম বা নামগুলো নির্ধারণ করে প্রেসিডেন্টের বিবেচনার জন্য পাঠাবে। খালেদা জিয়া বলেন, প্রেসিডেন্ট বাছাই কমিটি কর্তৃক বাছাইকৃতদের মধ্যে থেকেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে চূড়ান্ত করবেন। প্রেসিডেন্টের চূড়ান্তকৃত ব্যক্তিদের সম্মতি নিয়ে এবং তাদের জীবন বৃত্তান্ত ও সম্পদের বিবরণী জনসমক্ষে প্রকাশ করার ব্যবস্থা ও তাদের নিয়োগ দেবেন। চূড়ান্তকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ সম্মত না হলে বা অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে বাছাই কমিটি কর্তৃক মনোনীতদের মধ্য থেকেই প্রেসিডেন্ট একই প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিতে চূড়ান্ত নিয়োগ দেবেন। সিইসি পদের জন্য বাছাইকৃত দুইজনই অসম্মতি প্রকাশ করলে একই প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিতে নতুন করে বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে করণীয়: নির্বাচন কমিশনকে অধিকতর কার্যকর, শক্তিশালীকরণ ও আরপিও সহ অন্যান্য নির্বাচনী বিধি-বিধান সময় উপযোগী ও যৌক্তিকিকরণের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছেন খালেদা জিয়া। আরপিও’র সংশোধনী প্রস্তাবগুলো হচ্ছে- ১. আরপিও’র ‘ল এনফোর্সিং এজেন্সি’ হিসেবে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে ‘ডিফেন্স সার্ভিস অব বাংলাদেশ’ পুনঃস্থাপন করতে হবে। যা ২০০৯ সালের সংশোধনীতে বাদ দেয়া হয়েছিল। আরপিও-এর আর্টিকেল ২৮ (৪) (ডি)-এর পর (ই) সন্নিবেশ করতে হবে। যেখানে ভোটগ্রহণের আগে বাক্স সরবরাহ ও সংরক্ষণ দৃশ্যমান রাখার কথা বলা হবে। ৩. আরপিও’র আর্টিকেল ২৮ (৫)-এর শেষাংশ সংশোধন করে ভোটগ্রহণের সময় পর ও ব্যালট বাক্স প্রিজাইডিং ও পোলিং এজেন্টদের কাছে দৃশ্যমান রাখার কথা বলতে হবে। ৪. আরপিও’র আর্টিকেল ৩৬ (৪)(এ) তে ‘ওপেন’ শব্দের পর ‘অনলি’ শব্দ যোগ করতে হবে। ৫. আরপিও’র আর্টিকেল ৩৬ (১১) এর পরে ‘প্রিসাইডিং অফিসার তার স্বাক্ষরিত ফলাফল শীট ভোট কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টকে হস্তান্তর না করে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করবেন না’ যোগ করতে হবে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন শক্তিশালীকরণ: নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করতে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব সচিবালয় গঠন করতে হবে। সংবিধানের ৭৯ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের মতো নির্বাচন কমিশনের জন্যও আর্থিক স্বাধীনতাসহ নিজস্ব সচিবালয় গঠন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। নতুনভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশনকে নিজস্ব সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সকল পর্যায়ের নির্বাচনী কর্মকর্তা ও নির্বাচন কার্যে নিয়োজিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশনকে যথাশিগগির একটি কমিটি গঠন করে কমিশন সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের প্রতি প্রকাশ্য আনুগত্য পোষণকারী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে অতিসত্বর প্রত্যাহার করতে হবে। প্রত্যাহারকৃত কর্মকর্তাদের যে কোনো ধরনের নির্বাচনী দায়িত্বপালন হতে বিরত রাখতে হবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও তাদের মাঠ পর্যায়ের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী বিগত ২০০৮ ও ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশসহ নির্বাচনী বিধির ব্যত্যয় ঘটিয়েছে তালিকা তৈরি করে তাদের নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে হবে। প্রেষণে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত প্রকাশ্য রাজনৈতিক মতাবলম্বী নির্বাচনী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে হবে। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রেষণে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের মধ্য হতে প্রকাশ্য দলীয় আনুগত্য পোষণকারীদের চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করতে হবে। তাদের ভবিষ্যতে যে কোনো নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা থেকে বিরত রাখতে হবে। খালেদা জিয়া তার প্রস্তাবে বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশন তফসিল ঘোষণার সময় মাঠ পর্যায়ে কর্মরত ডিসি ও পুলিশ সুপারদের প্রত্যাহার করে নতুন কর্মকর্তা পদায়নের ব্যবস্থা করবে। নতুন কর্মকর্তা পদায়নে বিগত ৫ বছর বিভিন্ন পদমর্যাদায় ঐ জেলায় চাকরিরত ছিলেন এমন কর্মকর্তাদের একই জেলায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পদে পদায়ন করা যাবে না। একইভাবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সময় প্রত্যেক উপজেলা এবং থানায় কর্মরত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার ও নতুন কর্মকর্তা নিয়োগের ব্যবস্থা নেবে। আগে কোনো সময় ওই উপজেলা বা থানায় চাকরিরত ছিলেন এমন কর্মকর্তাদের সেখানে নিয়োগ দেয়া যাবে না। খালেদা জিয়া বলেন, নির্বাচনের সময় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে। নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার আগে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়- স্বরাষ্ট্র, অর্থ, তথ্য, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, পররাষ্ট্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে। তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচিত নতুন সরকার দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত এ ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে। নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের- বিভাগীয় কমিশনার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, এডিশনাল ডিসি, ইউএনও এবং পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, উপ পুলিশ কমিশনার, সহকারী পুলিশ কমিশনার, জেলা পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার, পুলিশ ইন্সপেক্টর, থানার ওসি, সাব ইন্সপেক্টর, এএসআই, র‌্যাবের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা, আনসার, বিজিবি ও কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা প্রমুখ) বদলি ও পদায়ন সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারভুক্ত থাকবে। খালেদা জিয়া বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্বিন্যাস করতে হবে। নবগঠিত কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর উত্থাপিত নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত অভিযোগ বা মামলা শুনানির ব্যবস্থা ও সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সীমানা পুনর্বিন্যাস করবে। নির্বাচনকালীন সময়ে প্রতিরক্ষা বাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা করতে হবে। কমিশন নির্বাচনকালীন সময়ে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেরিয়াল ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনী এলাকায় টহলসহ ভোট কেন্দ্রে ও বিশেষ বিশেষ স্থানে মোতায়েনের ব্যবস্থা করবে। এটা ভোট গ্রহণ ৭ দিন আগ থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশনা পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
ভোটার হালনাগাদ ও নতুন নিবন্ধন: ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নতুন নিবন্ধনের প্রস্তাব দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ ও নতুন ভোটার নিবন্ধীকরণ করতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকরা ভোটার হতে আগ্রহী হলেও বর্তমানে পারছেন না। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ও জাতীয় অর্থনীতিতে তাদের অবদান বিবেচনায় প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বহু গণতান্ত্রিক দেশে প্রবাসীদের ভোটার হওয়ার সুযোগ আছে। ভোটার হওয়ার যোগ্য সকল নাগরিকের নাম ভোটার তালিকায় নিবন্ধীকরণ করতে হবে। রাজনৈতিক নেতা ও কর্মী, যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য কিন্তু হয়রানিমূলক মামলায় বর্তমানে কারান্তরীণ রয়েছে, তাদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ছবিসহ যে ভোটার তালিকা ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দেয়া হয় একই তালিকা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা নির্বাচনী এজেন্টকে প্রার্থিতা বাছাইয়ের দিন সরবরাহ করতে হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ভিত্তিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই যেন ভোট দিতে পারেন। প্রত্যেক কেন্দ্রে ভোট গণনার সময় ওই কেন্দ্রের প্রত্যেক বুথে প্রার্থী কর্তৃক নিযুক্ত পোলিং এজেন্টকে অবশ্যই উপস্থিত রাখতে হবে। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গণনা শুরু করতে হবে।
নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ: সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনী কমিশন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে খালেদা জিয়া বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এই প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে নির্বাচনী বিধি-বিধান, ভোটার নিবন্ধীকরণ বিধি-বিধান, নাগরিক অধিকার, আচরণ, নিরাপত্তা, জনসংযোগ, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা, ভোটার প্রশিক্ষণ ইত্যাদি বিষয় সন্নিবেশ করতে হবে। কমিশনের অধীনস্থ নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। যেমন- আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন, লোকবল বৃদ্ধি, দক্ষতা ও কর্ম পরিধি বৃদ্ধি ইত্যাদি। কমিশন রাজনৈতিক দলের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কর্মী এবং সম্ভাব্য পোলিং এজেন্টদের নির্বাচনী আইন ও বিধি-বিধান সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেবে। রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী এজেন্ট ও পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দিতে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দানের জন্য কমিশন জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেবে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ব্যাপক ভোটার প্রশিক্ষণ প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এই কার্যক্রমে রাজনৈতিক দল, নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গণমাধ্যম এবং বেসরকারী সংস্থাসমূহের সহায়তা নিতে হবে। নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেরিয়াল ক্ষমতা দিতে হবে। কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধান অনুসারে বিশেষ আদেশের মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেরিয়াল ক্ষমতা দিতে হবে। নির্বাচনী আইন ও বিধি-বিধান ভঙ্গের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক প্রতিবিধানের ব্যবস্থা করতে হবে। তফসীল ঘোষণার পর থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত নির্বাচনী আইন, আচরণবিধি ও অন্যান্য বিধি ভঙ্গের অভিযোগপত্র এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যে কোনো বিষয়ে দাখিলকৃত অভিযোগপত্র গ্রহণ ও লিখিত প্রাপ্তি স্বীকার করতে হবে। তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর প্রতিবিধান করতে হবে। গৃহীত কার্যক্রম প্রতিদিন জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগ: নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নিয়োগ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া প্রস্তাবে বলেন, তফসীল ঘোষণার কমপক্ষে ৩ বছর আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে প্রচলিত আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিবন্ধিত হতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা বা রাজনৈতিক দলের প্রতি প্রকাশ্য আনুগত্য পোষণকারী কোনো ব্যক্তি বা তার নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো পর্যবেক্ষক সংস্থা পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না। তফসীল ঘোষণার কমপক্ষে ৩০ দিন আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা বা ব্যক্তিকে তালিকাভুক্ত করবে। তফসীল ঘোষণার ৭ দিনের মধ্যে, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার নাম ও পরিচয়, তাদের মনোনীত পর্যবেক্ষকদের নাম ও তালিকা প্রকাশ করতে হবে। একইভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কমপক্ষে ৭ দিন আগে আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা এবং বিদেশি রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়োজিত পর্যবেক্ষকদের নাম ও তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের জন্য কোনো প্রশ্ন-উত্তর পর্ব ছিল না
বিএনপি চেয়ারপারসনের নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রস্তাবনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, শ্রীলঙ্কাসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা অতিথি হিসেবে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্যে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, প্রফেসর এজেডএন তাহমিদা বেগম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, প্রফেসর দিলারা চৌধুরী, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, অ্যাডভোকেট এলিনা খান ও নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব আবদুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু, গিয়াস কাদের চৌধুরী, ডা. জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, মাহমুদুল হাসান, জয়নাল আবদিন, মীর মো. নাসিরউদ্দিন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, গোলাম আকবর খন্দকার, মসিউর রহমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আবদুল হালিম, ইসমাইল জবিউল্লাহ, আবদুল কাইয়ুম, অধ্যাপিকা সাহিদা রফিক, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজ্জাক খান, এ জে মোহাম্মদ আলী, হাবিবুর রহমান, আতাউর রহমান ঢালী, নাজমুল হক নান্নু, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, আনহ আখতার হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক নেতাদের মধ্যে কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীরবিক্রম, মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, টিআই ফজলে রাব্বী চৌধুরী, ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, এমএ রকীব, শফিউল আলম প্রধান, খন্দকার গোলাম মোর্তজা, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জেবেল রহমান গানি, আজহারুল ইসলাম অংশ নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *