সমাজের সেবক, অতঃপর প্রচারক

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ সারাবিশ্ব

78152_chan2

গ্রাম বাংলা ডেস্ক: চেন গুয়াংবিয়াও। চীনের বিশিষ্ট ধনী ব্যক্তিই বলা যায়। সম্পদের পরিমান বিলিয়ন ডলারের বেশি। দুই হাতে টাকা বিলান। সমাজ সেবক।

কিন্তু ওই সব সমাজ সেবকদের মতো নন, যারা নীরবে, নিভৃতে থেকে মানুষের জন্য কাজ করে যান। গুয়াংবিয়াও প্রচারপ্রিয় মানুষ।

তার জনসেবা করার ধরণ একটু আলাদা। বলা যায়, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রচার করেন তিনি। মাঝে মাঝে তো বিচিত্র সব কাণ্ড করে বসেন।

এই যেমন, দেশটিতে ২০১২ সালে এক বিক্ষোভ চলাকালে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় থাকা গাড়িগুলো ভেঙে চুরমার করেছিল। গুয়াংবিয়াও ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে একটি করে গাড়ি দান করেছেন। এর জন্য সে যে কাণ্ড করেছেন, তার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন। তবুও কাজ করা বন্ধ করেননি তিনি।

ওই দিন চেন গুয়াংবিয়াও টিয়া রঙের কোট-প্যান্ট পড়েছিলেন। তারপর দান করা ওই গাড়িগুলোর ওপর দিয়ে দাম্ভিকতার সাথে হেঁটে গেছেন।

শুধু কি তাই, এতো কিছুদিন অগেই বিশ্ব মেতেছিল আইস ব্যাকেট চ্যালেঞ্জে। হলিউড অভিনেতা থেকে তারকা খেলোয়ার পর্যন্ত প্রায় সবাই এই চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন।

সবার চেয়ে এগিয়ে থাকার জন্য গুয়াংবিয়াও যা করেছেন, তা হয়ত আর কেউ করেননি আর কস্মিনকালে কেউ করবে কিনা সন্দেহ আছে।

তিনি কিন্তু অন্য সবার মতো বরফ পানি মাথায় ঢালেননি। করেছেন উল্টোটা, মাথা ছাড়া পা থেকে গলা পর্যন্ত বরফ পানিতে পুরো আধা ঘণ্টা…।

তার কীর্তি এখানেই শেষ নয়, তার অফিসের দেয়ালের এক ইঞ্চিও খালি নেই। চারদিকেই শুধু সার্টিফিকেট আর সার্টিফিকেট। জায়গা না হওয়ায় কয়েকটা মেঝেতেও রাখতে হয়েছে।

না, না পড়াশোনা করে এগুলো অজর্ন করেননি। বছরের পর বছর তিনি স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ও আশ্রমগুলোতে  যে অর্থ দান করেছেন তার সার্টিফিকেট।

তবে সবাই যতই সমালোচনা করুক না কেন, চেন গুয়াংবিয়াও এর এসব দানের পেছনে রয়েছে দুঃখের কাহিনী।

কেন এতো দান করেন আপনি? বিবিসির এক সাংবাদিকের এ প্রশ্নের জবাবে তার সরল উত্তর, মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে আমার খুব আনন্দ হয়।

বলেন, ‘আমার বয়স যখন আট তখন প্রায় সময়ই আমাকে না খেয়ে থাকতে হতো। চোখের সামনে ভাই-বোনকে না খেয়ে খেয়ে মরতে দেখেছি।’

‘এরপর এক গ্রীষ্মের ছুটিতে আমি পানি বিক্রি করতে শহরে গেলাম। পানি বিক্রি করে আমি যে টাকা পেতাম তার কিছুটা দিয়ে প্রতিবেশীদের সাহায্য করতাম। প্রথম যে দিন সাহায্য করলাম সেদিন তাদের খুশি দেখে আমিও খুব খুশি হয়েছিলাম। মন আনন্দে ভরে উঠেছিল। এই আনন্দের লোভেই দান করে যাচ্ছি এখনও।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *