আজকের ঝিনাইদহ

Slider গ্রাম বাংলা

 

gada-flawer-pic-jhenaidah

 

২০ বছরেও কেন অনুমোদন পায়নি ইবি ল্যারেটারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ল্যারেটারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার ২০ বছরেও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন পায়নি। যার ফলে এখানকার শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ বছরে একটি মোটা অঙ্কের টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত বাজেটের অর্থ থেকে।

এছাড়াও নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। ক্লাসরুম সঙ্কটে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। নেই সাইন্সল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব এবং লাইব্রেরী। একমাত্র বিদ্যালয় ভবনটির অবস্থাও জরাজীর্ণ।

শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে নেই পর্যাপ্ত খেলার মাঠ এবং নিরাপত্তার জন্য নেই কোনো সীমানা প্রাচীর। শিক্ষক সঙ্কট তো রয়েছেই। এসব কারণে প্রায় শিক্ষার্থী শূন্য বিদ্যালয়টি।বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে ১৯৯৬ সালে ল্যাবরেটারি স্কুল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

৯৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩১ তম সিন্ডিকেটের ৫নং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্কুলের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে থানা গেটের পাশে বর্তমানে থানার জন্য ব্যবহৃত টিনের ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম চললেও ২০০৪ সালে ক্যাম্পাসের উত্তর সীমান্তে নির্জন ও শান্ত পরিবেশে একটি স্কুল ভবন তৈরি করা হয়।

কিন্তু তিনতলা ভবনটি তখন সম্পূর্ণ না হওয়ায় ক্লাসরুম সঙ্কটে পড়ে স্কুলটি।দুর্বল অবকাঠামোয় ভবনটি তৈরি হওয়ায় কয়েক বছরের মধ্যেই ছাঁদ ও দেয়াল চুইয়ে বৃষ্টির পানিতে শ্রেনী কক্ষ ও তার আসবাব গুলো নষ্ট হতে বসেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয় কতৃপক্ষ।স্কুলটির প্রতিষ্ঠাকালীন নীতিমালা অনুযায়ী এখানের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয় চাকরীবিধির আওতায় থাকার বিধান থাকলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই।

এখানকার শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠার ২০ বছরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত চাকরীর আওতাধীন হতে পারেননি। তাদের জন্য ইউজিসি কর্তৃক বছরে ১৫ লাখ টাকা থোক বরাদ্দের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু স্কুলের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের এক মাসের বেতন ৬ লাখ ৪০ হাজার ৩২৩ টাকা। দেখা যাচ্ছে ইউজিসি কর্তৃক বরাদ্দকৃত টাকা আড়াই মাসেরও কম সময়ের বেতন পরিশোধ করতে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

বছরের সাড়ে ৯ মাসে ৬২ লাখ টাকাসহ তিনটি বোনাস বাবদ প্রায় ১২লাখ টাকা মোট ৭৪ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। এতে প্রত্যেক বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট থেকে একটি বড় অঙ্কের টাকা স্কুলকে ঘাটতি দিতে হয়।

এছাড়াও স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা পেনশন বাবদ অথবা কেউ মারা গেলে তাদের জন্য নেই কোনো তহবিলের ব্যবস্থা। এছাড়াও ভবিষ্য তহবিল, অনর্জিত ইনক্রিমেন্ট, ক্যারিয়ার বেনিফিট, আবাসিক সুবিধা, জীবন বীমা, বেনোভোল্টেন্ট ফান্ড সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। কিন্তু নীতিমালা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো তাদেরও এসকল ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার কথা ছিল।

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক মোল্লাহ বলেন, শিক্ষার গুনগত মান অন্যান্য স্কুলের তুলনায় এখানে অনেক ভালো। কিন্তু শিক্ষক-কর্মকর্তারা তাদের সন্তানকে এ স্কুলে ভর্তি না করিয়ে ঝিনাইদহের ক্যাডেট কলেজসহ কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের নামি-দামী স্কুলে ভর্তি করাচ্ছে।

সে কারণে স্কুলটি শিক্ষার্থী সঙ্কটে রয়েছে। এখানকার অধিকাংশ ছাত্র লোকাল। সেজন্য রেজাল্ট চাইলেও ভালো করা সম্ভব হচ্ছে ন। এছাড়া এখানকার শিক্ষকদের চাকরি আজও নিয়মিত করা হয়নি। মাসের শেষে বেতনের জন্য ফাইল নিয়ে অফিসে অফিসে ধর্ণা দিতে হয়।

স্কুলটির ত্বত্তাবধায়ক অধ্যাপক ড. মেহের আলী বলেন, বিদ্যালয়টির সমস্যা সমাধানে ও উন্নয়নে বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্তরিক ভুমিকা পালন করছে। এখানে আমাদের সন্তানেরা পড়াশুনা করে। স্কুলটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের পরিণত করার চেষ্টা চলছে। এছাড়া শিক্ষকদের চাকরির অনিশ্চয়তা দূরীকরণে প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা ও ইউজিসির সুদৃষ্ঠি।

শেষ হল ঝিনাইদহে মাসব্যাপী সাঁতার প্রশিক্ষণ !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহে মাসব্যাপী ক্রীড়া পরিদপ্তরের বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচীর আওতায় সাঁতার প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝিনাইদহ জেলা ক্রীড়া অফিসের আয়োজনে সদর উপজেলার ভুটিয়ারগাতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ঝিনাইদহ জেলা ক্রীড়া অফিসার সুমন কুমার মিত্র’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গনি। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশন এর কার্যনির্বাহী সদস্য নাজিম উদ্দীন জুলিয়াস।

অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন পুর্বাঞ্চল সুইমিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও কোচ তারিকুল ইসলাম। মাসব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কোর্সে সদর উপজেলার ৪৪ জন সাতারু প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।আলোচনা সভা শেষে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সাতারুদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।

কি হচ্ছে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ? ব্যাপক ভোগান্তিতে রুগীরা ! দেখার কি কেউ নেই ?
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে লোকবল সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। ফলে ঠিকমত সেবা দিতে পারছে না চিকিৎসকরা। বিভিন্ন কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌরাত্বে বাইরে থেকে ঔষধ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। ফলে সঠিক সেবা না পেয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন রুগীরা। ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি চলছে ১০০ শয্যার জনবল নিয়ে।

এদিকে সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে প্রতিদিনই লেগে থাকে ইজি বাইকের দীর্ঘ লাইন। কখনও কখনও পরিস্থিতি এমন হয়ে দাড়ায় রুগীও প্রবেশ করতে পারে না হাসপাতালে। শুধু রুগী নয়, এ্যাম্বুলেন্স কিংবা ফায়ার সার্ভিস কোন গাড়িই ঠিকমত হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারেনা।

ঝিনাইদহ জেলার মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য ১৯৬৮ সালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। হাসপাতালটি এখন শয্যা, জনবল, চিকিৎসক সংকট সহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জোরিত।

বর্তমানে এটি চলছে ১০০ শয্যা দিয়ে, যদিও ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নিত করণের ঘোষণা দেন। এরপর কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও শুরু হয়নি কার্যক্রম। কবে শুরু হবে তাও বলতে পারেন না কেউ।

বহি:র্বিভাগের ডাক্তারদের সিরিয়ালের জন্য টিকিট কাউন্টারের সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইনবহি:র্বিভাগের ডাক্তারদের সিরিয়ালের জন্য টিকিট কাউন্টারের সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইনপ্রতিদিন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে আসেন চিকিৎসা সেবা নিতে। বহি:বিভাগ, জরূরী বিভাগ ও ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে রুগীরা। কিন্তু মিলছে না কাঙ্খিত সেবা।

বহি:বিভাগে ডাক্তার দেখানোর জন্য সিরিয়াল করতে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় রুগীদের।এখানেই শেষ নয় ভোগান্তি। বহি:বিভাগে বিপুল সংখ্যক রুগীকে গাদাগাদি করে দেখাতে হয় ডাক্তার। বেড না পাওয়ায় ভর্তি রুগীদের স্থান হচ্ছে মেঝেতে।

ডাক্তাররা সরকারী ঔষধ না লিখে বাইরে থেকে বিভিন্ন কোম্পানীর ঔষধ লেখেন বলে অভিযোগ রুগীদের। রুগীদের সাথে কর্মকর্তা কর্মচারীদের দু:ব্যবহার তো রয়েছেই। বিদ্যুৎ চলে গেলে ১ ঘন্টা চলার পর আর চলেনা একমাত্র জেনারেটর। এসময় থেমে থাকে সব ধরনের অপারেশন কার্যক্রম।

হাসপাতালটিতে বর্তমানে ১৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্থলে আছে ১১ জন, ১৭ জন মেডিকেল অফিসারের স্থলে আছে ১০ জন। হৃদরোগ ও মেডিসিনে ৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্থলে আছে মাত্র ১জন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

প্রতিটি বিভাগে ১ জন করে নার্স দায়িত্ব¡ পালন করছেন।হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রুগীরা অভিযোগ করে বলেন, ডাক্তাররা ঠিকমত রুগী দেখেন না। নার্সদের কাছে কোন প্রয়োজনের গেলে তারা খুব খারাপ ব্যবহার করে।

ডাক্তাররা হাসপাতালে অপারেশন না করে আমাদের পাঠিয়ে দিচ্ছে বাইরের ক্লিনিকে। পরে হাসপাতালের ডাক্তাররাই সেখানে গিয়ে আবার অপারেশন করছেন। সিট না পাওয়ায় আমাদের স্থান হচ্ছে মেঝেতে, ফলে রুগী সুস্থতার বদলে অস্বুস্থ হয়ে পড়ছে।

রুগীরা আরো জানান, সরকারী হাসপাতালে ফ্রি ঔষধ দেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ ডাক্তারই যে ঔষধ লেখেন তা আমাদের বাইরে থেকে কিনে খেতে হয়। সদর হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সদস্য আনিছুর রহমান খোকা জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রিফ্রিজেন্টেটিভদের দৌরাত্ব মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে গেছে।

এই দৌরাত্ব এখনই থামানো না গেলে ভবিষ্যতে দুর্ভোগ আরো বাড়বে বলে জানান তিনি। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের সিনিয়র মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: মোকাররম হোসেন জানান, চিকিৎসক কম থাকায় আমরা ঠিকমত সেবা দিতে পারি না। কেননা যে পরিমান চিকিৎসক আমাদের দরকার সেই পরিমাণ চিকিৎসক নেই।

ফলে একজন চিকিৎসকের দারা তো ভাল করে এ্যাতো রুগীর সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তবে ব্যাপক সমস্যার কথা স্বীকার করে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা: আব্দুস সালাম জানান, হাসপাতালে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। সমস্যা গুলো একদিনে তো সমাধান করা সম্ভব নয়। তাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমস্যা গুলো আমরা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছি।

২০১৬ সালের জানুয়ারী থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় ২৭ হাজার রুগী ভর্তি হয়ে এবং বহি:বিভাগ ও জরুরী বিভাগ থেকে প্রায় ৩ লক্ষ রুগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। প্রতিদিন ২ শতাধীক রুগী ভর্তি হয়ে এবং জরুরী ও বহি:বিভাগের মাধ্যমে অন্তত ১৩ থেকে ১৪ শ’ রুগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে।

তবে অচিরেই সকল সমস্যা মুক্ত হয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল আবারো মানুষের সেবার ক্ষেত্রে সব থেকে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এমনটিই প্রত্যাশা ঝিনাইদহ জেলাবাসীর।

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে কেমন চলছে গাঁদা ফুলের হাট !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
জনপ্রিয় এই গানটির মত যদি কোন অষ্টাদশী কন্যা বায়না ধরে বসে তবে তার মান ভাঙাতে গাঁদা ফুলের সন্ধানে চলে আসতে পারেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা হাইস্কুল মাঠে। এখানে সারা বছর বিকাল বেলা গাঁদা ফুলের বিশাল পাইকারির হাট বসে।

মাঠজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ফুলের ঝোপা দেখে দূর থেকে মনে হয় সবুজ মাঠে যেন কোন মহামান্যকে সংবর্ধনা দেবার জন্য হলুদ গালিচা বিছানো হয়েছে। কালীগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ফুল চাষীরা বালিয়াডাঙ্গা স্কুল মাঠে ফুল বিক্রি করতে আসে। প্রতিদিন বসা এই ফুল হাটে ২/৩ লাখ টাকার ফুল ক্রয় বিক্রয় হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা হাট থেকে ফুল কিনে ঢাকা ও চট্রগ্রামে এ ফুল সরবরাহ করেন।

প্রায় ১০ বছর আগে শুরু হওয়া বালিয়াডাঙ্গা ফুলের হাট এখন বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এই ফুল হাটে প্রতিদিন প্রায় ২/৩ লক্ষ টাকার ফুল ক্রয়-বিক্রয় হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চাষীদের হাটে আনা ফুল ক্রয় করে ঢাকা ও চট্রগ্রামে বিক্রয় করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলার তিল্লা গ্রামের ফুল চাষী অধীর বিশ্বাস জানান, তার ২ বিঘা জমিতে ফুল আছে। তিনি এক দিন অন্তর একদিন ২০/২৫ ঝোপা ফুল হাটে নিয়ে আসেন। তিনি বানিজ্যিক ভিত্তিতে এ ফুলের চাষ করেছেন।

একই গ্রামের সুরুজ মিয়া জানান, তার প্রায় ৪ বিঘা জমিতে ফুল চাষ রয়েছে। তিনিও প্রতিদিন ২০/২৫ ঝোপা ফুল বিক্রি করেন। এর পরই তার সংসার ভালো ভাবে চলছে। ফুল হাটে কোন চাঁদাবাজী হয় কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ফুল চাষীরা জানান, নিজেদের এলাকায় হাট হওয়াতে এখানে কেউ এ ধরনের সাহস পায়না।

ফুল ব্যবসায়ী শওকত মির্জা ও মন্টু জানান, বালিয়াডাঙ্গার এই ফুল হাটে ত্রিলোচনপুর, তিল্লা, দাদপুর, ঘিঘাটি, বালিয়াডাঙ্গা, কালূকালী, দুলাল মুন্দিয়া, শিশের কুড় থেকে ফুল চাষীরা ফুল বিক্রি করতে আসে। তারা জানান, ন্যার্য মূল্য পাওয়ায় চাষীরা ফুল বিক্রয় করতে এখানেই আসে।

ব্যবসায়ী শওকত মির্জা বলেন, ফুলের স্বাভাবিক দর ঝোপা প্রতি ৮০/৯০ টাকা থাকে।তবে বছরের দু’এক মাস ফুলের দাম ঝোপা প্রতি ৫’শ টাকাও হয়। ট্রেনে কাটা পড়ে পা হারানো আব্দুর রাজ্জাক মন্টু জানান, নিজ গ্রামে ফুলের হাট হওয়ায় এখন আর আগের মতো পরিশ্রস করতে হয় না তাকে।

বর্তমানে ফুলের ব্যবসা করেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করছেন। এখন আর নিজেকে আগের মতো অসহায় মনে হয় না বলে জানান তিনি।এক সময়ে রাজ্জাকের সংসারে ছিল অনেক অভাব, কিন্তু গত ক,বছর ধরে ফুলের চাষ করে তার সংসারের অবস্থা অনেক স্বচ্ছল।

ফুল চাষীরা আরো জানান, এলাকায় ফুলের হাট হওয়ায় অনেক বেকার যুবক এখন ফুল চাষ ও ফুলের ব্যবসা শুরু করেছে। তারা আশা করেন ফুলের হাটটি স্থায়ী ভাবে থাকলে এই অঞ্চলের বেকার যুবকেরা ফুলচাষ ও ফুল ব্যবসায় নেমে বেকারত্ব ঘুচিয়ে স্বাভাবিক ও স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপনের সুযোগ পাবে।এলাকার অধিকাংশ মানুষ গত কয়েক বছর ধরে অন্য ফসলের চাষ বাদ রেখে তারা অধিক লাভের আশায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে ফুলের চাষ করে থাকে।

ঝিনাইদহে শৈলকুপায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ৮ !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের শৈলকুপার ভাটই বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল কলেজের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঝিনাইদহ শহর থেকে ইজি বাইকে করে চালক সহ ৮ যাত্রী ভাটই বাজারে যাচ্ছিলেন।

তার্যা ভাটই বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল কলেজের সামনে পৌছালে সামনের দিক থেকে আসা একটি নসিমনের সাথে ইজিবাইকের সংঘর্ষ হয়। এতে চালকসহ ইজিবাইকের ৮ যাত্রী আহত হন। আহতদের মধ্যে চালক মোহাম্মদ রিংকু, যাত্রী জামাল মন্ডল, রীতা ও ইয়াছিন খা’কে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাকিদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: মাসুদুজ্জামান রুমন জানান, হাসপাতালে ভর্তি ৪ জনের অবস্থা আশংকামুক্ত। তাদেরকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পাক বাহিনীর পাশবিক নির্যাতন ও বর্বরতার সেই নিষ্কালো স্মৃতি চিহ্ন আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন পথে পথে !
ঝিনাইদহের বীরঙ্গনা জয়গুন নেছা আজও স্বীকৃতি পান নি মুক্তিযোদ্ধার !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজের স্বামী হাবিবুর রহমান ও সতিনের যুবতী মেয়ে হাসিনা খাতুনকে হারিয়েছেন ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চনগর পাড়ার বীরঙ্গনা জয়গুন নেছা। পাক সেনারা তাদের ধরে নিয়ে আর ফেরৎ দেয়নি।

নিজের উপর পাক বাহিনীর পাশবিক নির্যাতন ও বর্বরতার সেই নিকষকালো মুহুর্তগুলোর কথা মনে হলে গাঁ শিউরে ওঠে তার। শরীরে দগদগে সেই ভায়াল স্মৃতি চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। যুদ্ধ শেষে স্বামীর কেনা ভিটা বাড়িও জবর দখল করে নিয়েছেন সুন্দর আলী নামে এক ব্যক্তি। এতো কিছুর পরও এই বীরঙ্গনার কপালে মেলেনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি। পান না কোন সরকারী সুযোগ সুবিধা।

একমাত্র সম্বল ছিল চাকরীর পেনশন, সেটাও বিক্রি করে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা প্রমানে এই বৃদ্ধ বয়সে সার্টিফিকেট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ছুটছেন এ অফিস থেকে সে অফিস। সব বিফলে গেছে জয়গুন নেছার। ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এসে জয়গুন নেছা বাস্পরুদ্ধ কন্ঠে সাংবাদিকদের এ সব কথা জানান।

জয়গুন নেছার কাছে থাকা কাগজপত্র ঘেটে জানা গেছে, তিনি পাক বাহিনীর হাতে নির্যাতিত একজন নারী। পরে তিনি যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। যুদ্ধ করেন ৮ নং সেক্টরে। যুদ্ধের আগে তিনি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে চাকরী করেন। সে সময় ক্যাডেট কলেজের একমাত্র সিভিল প্রিন্সিপাল আব্দুল করিম সাহেব তাঁর চাকরীটি দেন। দেশ স্বধীনের পর তিনি মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চাকরী করতেন।

যুদ্ধকালীন সময় তার উপর রাজাকার ও পাক বাহিনী নির্যাতন করেছেন ব্যাপক। সেই স্মৃতি এখনো পীড়া দেয় জয়গুন নেছার। দেশীয় রাজাকারদের নির্যাতনে হাত থেকে ডাঃ কে আহম্মেদ ও মাহাতাব হোসেন মাখন মিয়া বিভিন্ন সময় রক্ষা করেছেন। পবহাটীর রওশান ও আব্দুর রহিম, দুধসরের মজিবর, ব্যাপারীপাড়ার নরুন্নবী ছামদানী ও হিরেডাঙ্গা গ্রামের মোস্তফা রাজাকারের নাম উল্লেখ করেন জয়গুন নেছা। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের (অন্তভুক্ত) প্রশানকি কর্মকর্তা খোন্দকার নুরুল ইসলাম ও তত্ববধায়ক এম এ আব্দুল ওহাব সাক্ষিরিত তালিকায় তার নাম রয়েছে ১৭ নং ক্রমিকে।

এ ছাড়া ২০০৯ সালের ২৫ আগষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই করতে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসককে একটি চিঠি দেয়। জেলা প্রশাসকের চিঠির প্রেক্ষিতে ২০১০ সালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হক খান তথ্য প্রমানের ভিত্তিত্বে একটি তালিকা করেন।

২০১০ সালের ২৫ মে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৪৮৮ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রনয়ন করে ঢাকায় পাঠানো হয়। সেই তালিকায় জয়গুন নেছার নাম রয়েছে ১৭১ নং ক্রমিকে। জয়গুন নেছা যে দাবীদার একজন মুক্তিযোদ্ধা সেই আবেদন পত্রে মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসন, আব্দুল মজিদ, লুৎফর রহমান ও পরিতোষ ঘোষ সাক্ষি দিয়েছেন।

জয়গুন নেছার কাছে মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন সোসাইটির সনদ ও সরকারের দেশ রক্ষা বিভাগ থেকে দেওয়া স্বাধীনতা সংগ্রাম সনদ রয়েছে। তাতে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গণি ওসমানীর সাক্ষর রয়েছে।

বীরঙ্গনা জয়গুন নেছা দ্রুত তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির দবী জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামীর কেনা ভিটেবাড়ি একজন বেদখল করেছেন। সেটি যেন তাকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। জয়গুন নেছার প্রতিবেশি ঝিনাইদহ পেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক কালেরকন্ঠর জেলা প্রতিনিধি এম সাইফুল মাবুদ জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় জয়গুন নেছা ও তার পরিবারের যথেষ্ট অবদান রয়েছে।

ঝিনাইদহ পেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সমকাল প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান টিপু জানান, জয়গুন নেছা তাদের প্রতিবেশি। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ও তার পরিবারের উপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়। অথচ জয়গুনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আজো স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এটা দুঃখ জনক ব্যাপার।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আলহাজ্ব মোঃ কামালুজ্জামান বলেন, জয়গুন নেছা একজন স্বীকৃতি প্রাপ্ত মৃক্তিযোদ্ধা এতে কোন সন্দেহ নেই। তিনি যুদ্ধের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই ছিলেন।

মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বহু আগেই তার নাম তালিকাভুক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু কি কারণে হয়নি তা আমি দেখছি। তিনি বলেন, আমি জয়গুন নেছার কাগজপত্র নিজে সচিব মহোদয়ের কাছে দিয়েছি। হওয়ার কথাও ছিল। ঢাকায় গিয়ে বিষয়টি দেখা হবে বলে কামালুজ্জামান জানান।

ঝিনাইদহে আবারও সাদা পোশাকে যুবলীগ নেতাকে উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষিপুর গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দোড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর ও যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুল হালিম (৪৭) কে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে গেছে। তিনি একই গ্রামের মৃত জবুরুদ্দীন মন্ডলের ছেলে।

হালিমের ভাই আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার লক্ষিপুর বাজারে নিজের দোকান আল-আমিন সু স্টোরে বসে থাকা অবস্থায় সাদা পোশাকের লোকজন নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায়। আব্দুর রাজ্জাক জানান, তার ভাই এক সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠনের সাথে জড়িত থাকলেও অনেক দিন থেকে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।

গত ইউপি নির্বাচনে আব্দুল হালিম বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় দোড়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বর নির্বাচিত হন। তার বিরুদ্ধে নতুন কোন মামলা নেই। আব্দুল হালিম ৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন বলে নিশ্চিত করেন কোটচাঁদপুর উপজেলা যুবলীগের সদস্য একই গ্রামের আশরাফুল আলম।

বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর থানার ওসি আহম্মেদ কবীর জানান, আমার থানার কোন পুলিশ তাকে আটক করেনি। তবে আমি লোকমুখে হালিম মেম্বরকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কে বা কারা তুলে নিয়ে যাওয়ার খাবর শুনেছি। তিনি আরো জানান, আব্দুল হালিম স্বাভাবিক জীবন যাপন করছিলেন। আমার জানামতে গত ১০ বছরে তার বিরুদ্ধে কোটচাঁদপুর থানায় কোন মামলা নেই। ওসি জানান আব্দুল হালিম প্রতি সপ্তহে থানায় হাজিরা দিতেন।

এদিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলার নির্বাহী অফিসের সার্টিফিকেট সহকারী কাওছার আলী ও কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদকে সাদা পোশাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার আদালতে সোপর্দ করেছে। প্রথম দিকে পুলিশ তাদের আটকের কথা অস্বীকার করেছিলো।

কালীগঞ্জ থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, আবু সাঈদ ও কাউছার সরকার দলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ষড়যন্ত্র করছিলেন। আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমুলক জবাববন্দিও দিয়েছেন।

এ ঘটনায় বিপ্লবী কমিউনিস্ট পাটির সাবেক সদস্য হরিণাকুন্ডু উপজেলার কেষ্টপুর গ্রামের আজিজুল হক, যশোরের খাজুরা গ্রামের মিলন ও মাসুম নামে তিন ব্যক্তিকে পুলিশ খুজছে বলেও ওসি জানান। তবে হরিণাকুন্ডুর কেষ্টপুর গ্রামের আব্দুল আজিজকে ৭ দিন আগেই ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কে বা করা উঠিয়ে নিয়ে গেছে বলে হরিণাকুন্ডু থানার ওসি মাহাতাব হোসেন জানান।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *