বরিশালের সন্ধ্যা নদীতে লঞ্চডুবি, ১৬ লাশ উদ্ধার নিখোঁজ ২০

Slider জাতীয়

file-1

 

বরিশাল অফিস:  বানারীপাড়া উপজেলার সন্ধ্যা নদীতে বানারীপাড়া থেকে উজিরপুরের হারতাগামী যাত্রীবাহী এম এল ঐশী প্লাস নামের একটি লঞ্চ ডুবে গেছে।

এঘটনায় আজ বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ২০ জন।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী সন্ধ্যা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে একটি শিশু ও চারজন মহিলা রয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল ও পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে শনাক্ত করেছে।

নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার অভিযান বিলম্ব হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর নদীর দুই তীরে কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিতি হয়।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি, প্যানেল স্পিকার অ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস এমপি, জেলা প্রশাসক ড. গাজী মোঃ সাইফুজ্জামানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বরিশালের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার জানান, লঞ্চডুবির ঘটনায় বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত উজিরপুরের হারতা গ্রামের সুকদেব মল্লিক (৩০), রাবেয়া বেগম (৫০), মোজাম্মেল মোল্লা (৬০), রুপা বেগম (২৫), সাগর মীর (২৪), জিরাকাঠী গ্রামের মিলন ঘরামী (৩৫), মশাং গ্রামের শান্তা (৮)সহ ১০ জন এবং দুপুর একটার দিকে রহিমা বেগম (৬৫), অজ্ঞাত (৮) এক শিশু, বরিশাল শহরের কহিনুর বেগম (৪৫) এবং পরে আরো তিনজনসহ মোট ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ডুবে যাওয়া লঞ্চ ও নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল বেলা ২টা থেকে কাজ শুরু করেছে।

ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছেন ১৫ জন যাত্রী।

এর মধ্যে সিদ্দিকুর রহমান ও তার স্ত্রী রোকসানা বেগম বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সন্ধ্যা নদীর বানারীপাড়া লঞ্চ ঘাট থেকে ৭০ জন যাত্রী নিয়ে এমএল ঐশি-২ নামের একতলা লঞ্চটি উজিরপুরের হাবিবপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। পথে দুপুর ১২টার দিকে সন্ধ্যা নদীর সৈয়দকাঠী ইউনিয়নের মজিদবাড়ি এলাকার দাসের হাট উত্তর পাড়ে যাত্রী ওঠানোর সময় নদীর পাড়ের বিশাল অংশ ভেঙে লঞ্চের ওপর পরে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়। এসময় যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে এক পাশে এলে লঞ্চটি কাঁত হয়ে মুহূর্তের মধ্যে ডুবে যায়। পরে প্রায় ১৫ জন যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন।

দুর্ঘটনায় কবলিত লঞ্চটির যাত্রী আলেয়া বেগম বিলাপ করে বলেন, আমি সাঁতরে পারে উঠলেও আমার স্বামী জয়নাল হাওলাদারসহ অর্ধশতাধিক যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনার সময় বৃষ্টি হওয়ায় লঞ্চের সব জানালা বন্ধ ছিলো। ফলে বেশির ভাগ যাত্রী লঞ্চের মধ্যেই আটকা পরে।

বানারীপাড়া থানার ওসি জিয়াউল আহসান এ রিপোর্ট লেখার সময় বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বলেন, এখন পর্যন্ত নিখোঁজ ২০ জনের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার কাজ শুরু করে। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ডুবে যাওয়া লঞ্চটির স্থান শানাক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।

রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *