ঢাকা: গেল ঈদে শোলাকিয়ার ঈদের জামাতে জঙ্গি হামলার চেষ্টা হয়েছিল। তার আগেই ঘটে হলি আর্টিজান ট্র্যাজেডি। সে কারণে এবারের ঈদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুবই সতর্ক ছিল। ঈদের প্রতিটি জামাতে নেওয়া হয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। জনগণের মধ্যেও এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছিল। শেষ পর্যন্ত ঈদের দিনটি ভালোয় ভালোয় কেটে যাওয়ায় দেশবাসী স্বস্তি বোধ করছেন।
আবারও প্রমাণিত হলো, বাংলাদেশ যেকোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারে। মাত্র দুই মাস আগেও যেখানে জঙ্গিবাদী তৎপরতা নিয়ে জনমনে শঙ্কা ও উদ্বেগ ছিল, এখন তা অনেকটাই কেটে গেছে। এবারের ঈদে কেউ জঙ্গি হামলার শিকার হননি। জঙ্গিবাদী হানা না থাকার অর্থ হলো বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া।
জঙ্গিরা ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। হলি আর্টিজানের ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কয়েকটি জঙ্গি আস্তানায় হানা দিয়ে বাঘা বাঘা জঙ্গিদের ধরতে ধরতে সক্ষম হয়েছে। জঙ্গিনেতা জাহিদুল ও তামিম চৌধুরী পুলিশ অভিযানে নিহত হয়েছেন। ঈদের দুদিন আগে রাজধানীর আজিমপুরে পুলিশ এক জঙ্গি আস্তানায় হানা দিয়ে অভিযান চালালে শমসেদ নামের এক জঙ্গি আত্মহত্যা করেন এবং অপর তিন নারী জঙ্গি আত্মহত্যা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়ে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের সূত্র ধরে নেপথ্যের কুশীলবদের খুঁজে বের করা যেতে পারে। নারী জঙ্গি বাংলাদেশে নতুন প্রবণতা। এখনই তা সর্বশক্তি দিয়ে মোকাবিলা করতে না পারলে বিপদ বাড়তে পারে।
২
প্রতিবারে ঈদে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুটি ভিন্নমুখী শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান দেখতে অভ্যস্ত। প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বিনিময়ে দেশের অগ্রগতি ও উন্নতির কথা থাকে। আর বিএনপির চেয়ারপারসনের শুভেচ্ছা বিনিময়ে দেশের দুরবস্থা ও গণতন্ত্রহীনতার কথাই বেশি শোনা যায়। কিন্তু এবার বিএনপির চেয়ারপারসন হজব্রত পালন করতে সৌদি আরব যাওয়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। একটি বিবৃতির মাধ্যমে খালেদা জিয়া দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সংসদে অনুগত বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ কিংবা জাতীয় পার্টির প্রধান এরশাদকেও আনুষ্ঠানিক শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায়নি। বরাবরের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বিনিময়টি কেবল শুভেচ্ছার মধ্যে সীমিত থাকেনি। সেখানে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ তাঁকে কাছে পেয়ে তাঁদের অভাব অভিযোগের কথাও বলেছেন। আর প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতিকারের নির্দেশ নিয়েছেন। কেবল ঈদ পর্বে নয়, প্রধানমন্ত্রীর দরবারে সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগ জানানোর একটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথাও ভাবা যেতে পারে।
২
প্রতিবারে ঈদে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুটি ভিন্নমুখী শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান দেখতে অভ্যস্ত। প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বিনিময়ে দেশের অগ্রগতি ও উন্নতির কথা থাকে। আর বিএনপির চেয়ারপারসনের শুভেচ্ছা বিনিময়ে দেশের দুরবস্থা ও গণতন্ত্রহীনতার কথাই বেশি শোনা যায়। কিন্তু এবার বিএনপির চেয়ারপারসন হজব্রত পালন করতে সৌদি আরব যাওয়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। একটি বিবৃতির মাধ্যমে খালেদা জিয়া দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সংসদে অনুগত বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ কিংবা জাতীয় পার্টির প্রধান এরশাদকেও আনুষ্ঠানিক শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায়নি। বরাবরের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বিনিময়টি কেবল শুভেচ্ছার মধ্যে সীমিত থাকেনি। সেখানে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ তাঁকে কাছে পেয়ে তাঁদের অভাব অভিযোগের কথাও বলেছেন। আর প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতিকারের নির্দেশ নিয়েছেন। কেবল ঈদ পর্বে নয়, প্রধানমন্ত্রীর দরবারে সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগ জানানোর একটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথাও ভাবা যেতে পারে।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘যারা নিরীহ মানুষকে মারে, তারা কখনো ধর্মে বিশ্বাস করতে পারে না। নিরীহ মানুষ হত্যা করা মানবতাবিরোধী কাজ। নিরীহ মানুষকে হত্যা করে কেউ বেহেশতে যেতে পারে না।’ গাজীপুরের টাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে ৩৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় যে ৩৩ জন নিহত হয়েছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।’
এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা বাংলাদেশে প্রায়ই ঘটছে। তৈরি পোশাক খাতে তাজরীন ও রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। আমরা আশা করেছিলাম, সব কারখানার মালিকেরা আরও বেশি সজাগ হবেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। কিন্তু বাস্তবে যে সেটি হচ্ছে না, টাম্পাকো ফয়েলস কারখানার ঘটনাই তার প্রমাণ। দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকের পরিবার এবং আহত শ্রমিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৩.
সবকিছু মিলিয়ে মানুষ এবারের ঈদটি মোটামুটি স্বস্তিতেই উদ্যাপন করতে পেরেছেন। তাঁদের যাত্রাপথের ক্লান্তিও দূর হয়েছে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পেরে। এই যে ঈদকে উপলক্ষ করে লাখ লাখ মানুষ শহর থেকে গ্রামে যান, এর ইতি ও নেতি দুটো দিকই আছে। নেতি হলো এত বিপুলসংখ্যক মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করা কঠিন হয়ে পড়ে। আর ইতির দিকটি হলো, গ্রাম ও শহরের বন্ধন। শহরে থেকেও গ্রাম বা শিকড়কে উপলব্ধি করার এ রকম নজির পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। বাংলাদেশ প্রকৃতই একটি বৃহৎ গ্রাম, যেখানে পরস্পরের মধ্যে গভীর আত্মীয়তাবোধ রয়েছে। হিংসার রাজনীতি কিংবা জঙ্গিবাদ সেটিতে মাঝেমধ্যে ছেদ ঘটানোর চেষ্টা করলেও সফল হয়নি।
সম্প্রীতি ও ভালোবাসাই শেষমেশ জয়ী হবে। পরাস্ত হবে জঙ্গিবাদ ও হিংসাবাদ। প্রতি ঈদ ও পার্বণের এটাই বার্তা।
৩.
সবকিছু মিলিয়ে মানুষ এবারের ঈদটি মোটামুটি স্বস্তিতেই উদ্যাপন করতে পেরেছেন। তাঁদের যাত্রাপথের ক্লান্তিও দূর হয়েছে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পেরে। এই যে ঈদকে উপলক্ষ করে লাখ লাখ মানুষ শহর থেকে গ্রামে যান, এর ইতি ও নেতি দুটো দিকই আছে। নেতি হলো এত বিপুলসংখ্যক মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করা কঠিন হয়ে পড়ে। আর ইতির দিকটি হলো, গ্রাম ও শহরের বন্ধন। শহরে থেকেও গ্রাম বা শিকড়কে উপলব্ধি করার এ রকম নজির পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। বাংলাদেশ প্রকৃতই একটি বৃহৎ গ্রাম, যেখানে পরস্পরের মধ্যে গভীর আত্মীয়তাবোধ রয়েছে। হিংসার রাজনীতি কিংবা জঙ্গিবাদ সেটিতে মাঝেমধ্যে ছেদ ঘটানোর চেষ্টা করলেও সফল হয়নি।
সম্প্রীতি ও ভালোবাসাই শেষমেশ জয়ী হবে। পরাস্ত হবে জঙ্গিবাদ ও হিংসাবাদ। প্রতি ঈদ ও পার্বণের এটাই বার্তা।