বর্জ্য অপসারণে অনেকটাই সচেতন রাজধানীবাসী

Slider লাইফস্টাইল

4c05708713e9a7816ebf8274409611c3-untitled-3

ঢাকা: রাজধানীর দক্ষিণ পাইকপাড়া এলাকার একটি বাড়ির সামনে হলুদ রঙের কয়েকটি পলিথিনের ব্যাগ। পলিথিনের গায়ে লেখা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তাতে কোরবানির পশুর বর্জ্য ভরা। এর পাশের বাড়ির সামনে সাধারণ দুটি প্লাস্টিকের ব্যাগ। তাতেও কোরবানির বর্জ্য রাখা।
দুটি বাড়ির বাসিন্দাদের মতো এবার রাজধানীর অনেক জায়গাতেই এভাবে পলিথিনের ব্যাগে কোরবানির বর্জ্য ভরে রেখে দেওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে এসব বর্জ্য। যাঁরা সিটি করপোরেশনের পলিথিন পাননি, তাঁরা নিজেরা পলিথিন ব্যাগ কিনে বর্জ্য ভরে রেখেছেন।
অন্যান্য বছরের তুলনায় নিজস্ব উদ্যোগে কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় রাজধানীবাসী এবার বেশি সচেতন। কল্যাণপুর, আহমদনগর, মিরপুর-১ নম্বর, বনশ্রী, মণিপুরীপাড়া, সায়েন্স ল্যাব ও মোহাম্মদপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পশু কোরবানির পরে লোকজন বর্জ্য ব্যাগে ভরে রেখেছেন। কোথাও পশুর রক্ত নিজেরাই পরিষ্কার করেছেন।
রাজধানীবাসীর এ সচেতনতাকে ইতিবাচক ব্যাপার বলে মনে করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। তিনি বলেন, মানুষ অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন। সিটি করপোরেশনের পলিব্যাগে বর্জ্য ভরে রেখে দিয়েছেন। নিজেরা রক্ত পরিষ্কার করেছেন। শহর এখনই অনেক বেশি পরিষ্কার লাগছে। আশা করছি, ৪৮ ঘণ্টার অনেক আগেই বর্জ্য পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, এবারের কোরবানি ঈদে প্রায় ২০ হাজার টন বর্জ্য হবে। উত্তরের অধিবাসীদের বর্জ্য অপসারণের সুবিধার্থে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দুই লাখ পলি ব্যাগ বিতরণ করা হয়। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ২ লাখ ১০ হাজার পলিথিন ও চটের ব্যাগ বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পশু কোরবানির জন্য হাজার খানেক জায়গাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে নির্ধারিত জায়গাগুলোর বেশির ভাগই ছিল খালি। সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি ও দূরত্বকেই এসব জায়গায় না যাওয়ার কারণ বলে উল্লেখ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা আগের মতোই বাসার গ্যারেজ, খালি জায়গা, রাস্তা ও গলিতে পশু কোরবানি দেন।
নিজেদের সুবিধামতো জায়গায় পশু কোরবানি দিলেও বর্জ্য সংরক্ষণে নগরবাসী বেশ সচেতন ছিলেন। কল্যাণপুর এলাকায় দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে কোরবানির পশুর জবাই করেছেন। সড়কে চলে আসা পশুর রক্ত পানি দিয়ে পরিষ্কার করছেন। জমে থাকা পানি ঝাড়ু দিয়ে ড্রেনে সরিয়ে দিচ্ছেন।
কল্যাণপুরের হায়দার আলী ও তাঁর ছেলে মিলে রক্তমিশ্রিত পানি সরাচ্ছিলেন। হায়দার আলী বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের লোকজনের অপেক্ষায় থাকছি না। বর্জ্য ব্যাগে ভরে রাখলাম। রক্তগুলো পরিষ্কার করে দিচ্ছি। এখন যদি পরিষ্কার না করি একটু পরে নিজেদেরই কষ্ট হবে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর মো. আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘নগরবাসীর এমন উদ্যোগে আমরা উৎসাহিত হচ্ছি। তারা পলিথিন ব্যাগে ভরে নির্ধারিত জায়গায় রেখে দিচ্ছে। সিটি করপোরেশনের ভ্যান গিয়ে শুধু ব্যাগগুলো নিয়ে আসছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *