শেখ হাসিনা’র ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নে বিমুগ্ধ পিরোজপুরবাসীর অভিনন্দন

Slider বাধ ভাঙ্গা মত
14302546_535635166619835_274021273_n
প্রাণকৃষ্ণ বিশ্বাস প্রান্ত, বৃহত্তর বরিশাল থেকে: পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই ত্যাগী নেতা যথাক্রমে অমূল্য রঞ্জন হালদার ও আলহাজ্ব শেখ মো: আবুল বাশারকে তাদের সাংগঠনিক ঔজ্জল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ পিরোজপুর জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য নির্বাচিত করে মূল্যায়ন করলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি একেএমএ আউয়াল এমপি কর্তৃক অবহেলিত ও কোনঠাসা হয়ে এতো দিন দল থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের দুর্দিনের এই দুই কান্ডারী। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাদের দলীয় কর্মকান্ডের সার্বিক দিক বিবেচনা করে সদ্য অনুমোদিত পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে তাদের এ মূল্যায়ন করলেন। এ ঘটনায় নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং তারা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। মাষ্টার অমূল্য রঞ্জন হালদার ১৯৬৪ সালে বরিশাল বিএম কলেজে অধ্যয়নকালে ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে আওয়ামী রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ছাত্র জীবন শেষে ১৯৭০ সালে নাজিরপুর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ সালে নাজিরপুর থানা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। ১৯৯৯ সালে নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি সহ-সভাপতি পদ শূন্য হলে তিনি ঐ পদে স্থলাভিষিক্ত হন। পরবর্তীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিন্দ্র নাথ বড়াল পরলোক গমন করলে তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে তাকে আহবায়ক করে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। সেই থেকে তিনি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। আহবায়ক থাকাকালে তিনি ১/১১ সময়কালীন দলের দুর্দিনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব শেখ মো. আবুল বাশারসহ দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলকে সু-সংগঠিত রেখেছেন। ওই সময় বর্তমানে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা অনেক নেতাই ছিল আত্মগোপনে। আলহাজ্ব শেখ মো. আবুল বাশার ছাত্র জীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন তিনি নাজিরপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট স্ব-পরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদে ওই দিনই তিনি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করলে তার ওপর হুলিয়া জারী হয়। তখন বেশ কিছুদিন তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। পরবর্তীতে সৌদি আরবে চাকুরীরত থাকাবস্থায় দীর্ঘদিন তিনি রিয়াদ আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে দেশে এসে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং ২০০৫ সালে গঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক নির্বাচিত হয়ে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর সদর, জিয়ানগর ও নাজিরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-১ আসনের দলীয় প্রার্থী একেএমএ আউয়াল পিরোজপুর সদর ও জিয়ানগর উপজেলা যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তখন সংসদীয় আসনের ৩টি উপজেলার মধ্যে পিরোজপুর সদর ও জিয়ানগরে সাঈদীর চেয়ে প্রায় ১২ হাজার ভোট কম পেয়েছিলেন। কিন্তু নাজিরপুর উপজেলা থেকে সাঈদীর চেয়ে ১৭ হাজার ৫শ ভোট বেশী পেয়ে জয়লাভ করেন। ওই নির্বাচনে নাজিরপুর থেকে বিপুল ভোটে জয়লাভের পেছনে মাষ্টার অমূল্য রঞ্জন হালদার, আলহাজ্ব শেখ মো. আবুল বাশার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম, মালিখালী ইউনিয়ন যুবলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক কেশবলাল বিশ্বাস সহ উপজেলা সদর ইউনিয়ন ও অন্যান্য ইউনিয়নের দলীয় অনেক ত্যাগী নেতাদের অগ্রণী ভুমিকা ছিল। তাদেরকে পরবর্তীতে অবমূল্যায়নসহ কোনঠাসা করে হাইব্রীড নেতাদের মূল্যায়ন করার অভিযোগ রয়েছে এমপি’র বিরুদ্ধে। ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাষ্টার অমূল্য রঞ্জন হালদার বিপুল ভোটের ব্যবধানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তাকে দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয়। ওই নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের তিনটি পদেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পরাজিত হয়। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠিত হয়। সে কমিটিতে বিভিন্ন দল থেকে আওয়ামী লীগে আসা হাইব্রীড নেতাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হলেও কমিটির কোথাও স্থান পাননি দলের এই দুই ত্যাগী নেতা। কিন্তু দলীয় সুকীর্তির মূল্যায়ন করে গত ১লা সেপ্টেম্বর অনুমোদিত পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের পুর্ণাঙ্গ কমিটির উপদেষ্টা পরিষদে এ দুই নেতাকে সদস্য করেন দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে মাষ্টার অমূল্য রঞ্জন হালদার ও আলহাজ্ব শেখ মো. আবুল বাশার বলেন ‘দীর্ঘদিন দলের বিভিন্ন পদে থেকে দায়িত্ব পালন করেছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য কর্তৃক অবহেলার পাত্র হলেও দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মূল্যায়ন করায় চির কৃতজ্ঞচিত্তে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *