মহাদুর্ভোগে ঘরমুখো মানুষ

Slider জাতীয়

30974_lead

 

ঢাকা: ঈদযাত্রার শুরুতেই মহাদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে মহাসড়কে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে বসে থেকে দুর্ভোগ সয়ে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ। সরকারি কর্মজীবীদের ছুটি শুরু হওয়ায় গতকাল থেকে স্টেশন, টার্মিনালে ভিড় করছেন ঘরমুখো মানুষ। যারা যাত্রা করেছেন তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়েছে মহাসড়কে। ঢাকা থেকে বের হতেই  লেগেছে কয়েক ঘণ্টা। এদিকে পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি সমস্যায়ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে হাজারো মানুষকে। গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের কারণে নাকাল হতে হচ্ছে যাত্রীদের। বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড়ে ৭০ কিলোমিটার যানজট। পাটুরিয়ায় যানজটে সারি সারি বাসের লাইন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৪০ কিলোমিটার যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা
যাত্রীদের বসে থাকতে হয়েছে। গুলিস্তানের মেয়র হানিফ উড়ালসড়ক থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত যেতেই সময় লেগেছে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। এদিকে, মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাকে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল দুপুরে মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের অবস্থা সরজমিন দেখতে গিয়ে চট্টগ্রাম শহরতলির সিটি গেট এলাকায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ঈদ উপলক্ষে ঢাকার কাঁচপুর থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত ভয়াবহ যানজটের কথা স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চার লেন মহাসড়কের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু চার লেন দিয়ে আসা গাড়ি দুই লেনের কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতু পারাপারের সময় থমকে যাচ্ছে। এ কারণে কাঁচপুর থেকে গোমতী সেতু পর্যন্ত যানজট হচ্ছে। আমরা জাইকার অর্থায়নে তিনটি নতুন সেতুর কাজ শুরু করছি। সেতুগুলো নির্মিত হলে ওই এলাকায় যানজট থাকবে না বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ঈদের ছয়দিন মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরি চলাচল নিষিদ্ধ বলে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টস সামগ্রী, ওষধ, কাঁচা চামড়া এবং জ্বালানি বহনকারী যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আমাদের ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান, দীর্ঘ যানজটে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা। উত্তরাঞ্চল থেকে যারা ঢাকায় আসছেন, তারা যেমন দুর্ভোগে পড়েছেন, ঢাকা থেকে ওই দিকে যাওয়া মানুষও একই ভোগান্তিতে রয়েছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের কারণে নাকাল হতে হচ্ছে যাত্রীদের। গরু ও মালবাহী ট্রাক বিকল হয়ে পড়ায় যানজট তীব্র আকার ধারণ করছে। ঈদে ঘরমুখো যাত্রী ও গরুবাহী ট্রাকের চাপ বেশি থাকায় ঢাকা-বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে এই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজটের কবলে পড়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হাজার হাজার যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার রাতে সড়কের কয়েকটি স্থানে গরুবাহী ট্রাক বিকল হওয়ায় এ যানজটের সৃষ্টি হয়। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।  বুধবার রাত ৩টার দিকে বাঐখোলা এলাকায় একটি লরির সঙ্গে ট্রাকের ধাক্কা লাগে। ফলে যানজট আরো তীব্র হয়। এছাড়াও সড়কের কুর্নি, শুভুল্যা, ধেরুয়া এলাকায় কয়েকটি যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে আছে। উত্তরাঞ্চলগামী শীতল পরিবহনের চালক মুখলেছুর বলেন, চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের দেড় ঘণ্টার রাস্তা এসে পৌঁছাতে ১০ ঘণ্টা লেগেছে। গত দশ বছরেও এমন যানজটের কবলে কখনো পড়িনি। এই অসহনীয় যানজটে মহিলা ও শিশুদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শাহাজাদপুরগামী যাত্রীবাহী বাসের যাত্রী সেলিনা বলেন, এই যানজটের দুর্ভোগের কথা বলে শেষ করা যাবে না। টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার মাহবুব আলম বলেন, গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া এ যানজটের অন্যতম কারণ। আগে যেখানে প্রতিদিন সাত থেকে দশ হাজার গাড়ি চলাচল করতো গতকাল থেকে তা বেড়ে প্রায় বিশ হাজারে পৌঁছেছে। দুই লাইনের রাস্তা হওয়ায় এই বিপুল সংখ্যক গাড়ির চাপ সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে। যানজট নিরসনে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ৪ পুলিশ সুপারের অধীনে ৪ ভাগে ৭৫০ জন পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
মানিকগঞ্জ থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানান, ঢাকা থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সড়কপথে যাতায়াতে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে গুরুত্বপূর্ণ পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়ছে। গতকাল সকাল থেকে বাড়তে থাকে যানজট। এতে গাড়ির লাইন ক্রমে দীর্ঘ হতে থাকে। ওপারে দৌলতদিয়ায় চারটি ঘাটের মধ্যে দুটি অচল থাকায় পারাপারে সমস্যা হচ্ছিল।  দৌলতদিয়া প্রান্তে দফায় দফায় ফেরিঘাটগুলো পদ্মার তীব্র স্রোতে ভেঙে যাওয়ায় ফেরি সার্ভিস বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার কারণেই এই জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তারা। সরজমিন পাটুরিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তির করুণ দৃশ্য। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ বহনকারী বাস-কোচগুলো সারি সারি ভাবে অপেক্ষা করছে পাটুরিয়া ঘাটে। বাসের ভেতর থেকে ভেসে আসছে শিশুদের কান্নার শব্দ। অসুস্থ হয়ে পড়েন বয়স্ক মানুষ। দেখা যায়, সকাল ১০টা পর্যন্ত পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহনের চাপ কিছুটা কম দেখা গেলেও  বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারি সারি যানবাহনের লম্বা লাইন ঘাট ছাড়িয়ে চলে গেছে প্রায় ২ কিলোমিটার পর্যন্ত। সকালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসগুলোকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সিরিয়ালেই পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ফলে সময় যত গড়াচ্ছে আর এই ঘাটে যাত্রী ভোগান্তির মাত্রাও আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে যানবাহনের চাপ আরো বেড়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। বাসযাত্রী আকরাম হোসেন বলেন, স্ত্রী ও দুই বছরের শিশু বাচ্চা নিয়ে চার ঘণ্টা ধরে বাসের ভেতর অপেক্ষায় আছি। বিকাল হয়ে গেলেও ফেরিতে উঠতে পারছি না।   হানিফ পরিবহনের যাত্রী আফসানা বলেন, সকাল ১০টায় ঘাটে এসেছি।  দুপুর আড়াইটা পার হলেও ফেরির কাছেই ভিড়তে পারছি না। কখন ফেরি পাবো আর কখনই বা বাড়ি ফিরবো। এদিকে পাটুরিয়া লঞ্চঘাটেও যাত্রী চাপে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। লঞ্চ পারাপার যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। বর্তমানে নদীতে তীব্র স্রোত থাকলেও দুর্ঘটনার কথা চিন্তা না করে কার আগে কে লঞ্চে উঠে  পদ্মা পাড়ি দেবে এ নিয়েই ব্যস্ত যাত্রীরা। কোনো নিয়মনীতি মানছে না কর্তৃপক্ষ ও যাত্রীরা।
শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি জানান, ঈদকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে মাদারীপুর জেলার শিবচরের কাওড়াকান্দি ঘাটে। এদিকে নাব্য সংকট নিরসন না হওয়ায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে এ নৌরুটে। ফলে কাওড়াকান্দি ঘাট এলাকায় লেগে রয়েছে তীব্র যানজট। সরজমিন শিবচরের কাওড়াকান্দি ঘাটে গিয়ে  এই চিত্র দেখা গেছে। সকালের দিকে যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ঘরে ফেরা মানুষের ভিড়। এদিকে যাত্রীদের ভিড় বৃদ্ধি পাওয়ার প্রথমদিনে ঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তেমন উপস্থিতি চোখে পড়েনি। আর এই সুযোগেই পরিবহনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের সুযোগ পাচ্ছে বলে যাত্রীরা জানান। বিআইডব্লিউটিসি’র কাওড়াকান্দি ঘাট সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই লঞ্চ, স্পিডবোট, ফেরিতে করে আসতে শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে এই নৌরুটে। ঘাট কর্তৃপক্ষ অন্যান্য পরিবহনের চেয়ে গরুবাহী ট্রাক ও যাত্রীদের পারাপারে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে নাব্য সংকটের কারণে প্রতিটি ফেরিতেই প্রয়োজনের তুলনায় কমসংখ্যক পরিবহন পার করছে। বর্তমানে ১৩টি ফেরি চলাচল করছে। নৌরুট সচল রাখতে ৬টি খননযন্ত্র দিয়ে চ্যানেল মুখে পলি অপসারণের কাজ চলছে বলে বিআইডব্লিউটিসি’র একাধিক সূত্র জানায়। প্রায় একমাস ধরে ৬টি ড্রেজারের মাধ্যমে নাব্য সংকট নিরসনে পদ্মার পলি অপসারণের কাজ চলছে। তবে চলতি বছর নাব্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। রুট সচল রাখতে ইতিমধ্যে চ্যানেলের একপাশ ড্রেজিং শেষ করা হয়েছে। ফেরিগুলো এখন ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে চলাচল করছে।
মুন্সীগঞ্জ থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো হাজারও যাত্রী। গতকাল সাড়ে ১১টার দিকে মহাসড়কের আলীপুরা এলাকায়  ট্রলির ধাক্কায় রিকশাচালক ইউসুফ নিহত হন। এ ঘটনার পর মহাসড়কের যানজট আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। গজারিয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কামরুজ্জামান রাজু জানান,  ঈদে ঘরমুখো মানুয়ের কারণে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ ও ট্রলির ধাক্কায় রিকশাচালক নিহত হওয়ার পর ট্রলি ও রিকশা সড়কে পড়ে থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে যান চলাচল করছে ধীরগতিতে। মহাসড়কে পণ্য ও পশুবাহী ট্রাকের পাশাপাশি যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই যানজটের সৃষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ঈদে ঘরমুখো মানুষদের। তিনি আরো বলেন, এ যানজট মাইলের পর মাইল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। সহজেই নিরসন হওয়া সম্ভব নয়। এদিকে, শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটের নাব্য সংকট কিছুটা দূর হয়েছে। চ্যানেলগুলোতে এখন ৭ থেকে নয় ফুট পানি রয়েছে। রো রো ফেরিসহ মোট ১৭টি ফেরি চলাচল করলেও কোথাও কোথাও নাব্য সংকটের কারণে রো রো ফেরিগুলো পুরোপুরি লোড নিতে পারছে না। ফলে দীর্ঘ এক কি. মিটার এলাকা ওয়ানওয়ে বা একমুখীভাবে ফেরি চলাচল করায় পারাপারে সময় লাগছে বেশি।  বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শাহ খালেদ নেওয়াজ জানিয়েছেন, ড্রেজিং করার ফলে চ্যানেলের গভীরতা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের কাছে একটি জায়গায় রো রো ফেরিগুলো এখনও নদীর তলদেশ ঘেঁষে ঘেঁষে চলছে। এতে ফেরির প্রপেলারসহ ইঞ্জিনের মারাত্মক ক্ষতিসাধিত হচ্ছে। ফেরিগুলো যেন ওই স্থানের ডুবোচরে আটকে না যায়, সেজন্য কম সংখ্যক গাড়ি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে রো রো ফেরি। তাছাড়া ড্রেজিং চ্যানেল পুরোপুরি খুলে না দেয়ায় লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের মুখ  থেকে দীর্ঘ প্রায় এক কিলোমিটার পথ ফেরিগুলোকে ওয়ানওয়েতে চলতে হচ্ছে। অর্থাৎ এ চ্যানেলে যখন একটি ফেরি প্রবেশ করে তখন বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য ফেরিগুলোকে চ্যানেলের মুখে অপেক্ষা করতে হয়।
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পেন্নাই থেকে কাঁচপুর সেতু এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এতে ঘরমুখো মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বুধবার গভীর রাতে সৃষ্টি হয়ে এ যানজট বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অব্যাহত থাকে। এতে অফিসগামী, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও বাসযাত্রী সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। ভারী ব্যাগ, মালামাল ও ছোট শিশু এবং বৃদ্ধদের নিয়ে পায়ে হেঁটে ৮/১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়েছে যাত্রীদের। বাসযাত্রী আখের মিয়া বলেন, ৪ ঘণ্টায় মাত্র ৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছি। গরু ব্যবসায়ী ইদ্রিস মিয়া, শহীদ মিয়া ও আবু তাহের জানান, কাঁচপুর থেকে শহীদনগর পৌঁছতে সময় লেগেছে ৬ ঘণ্টা। দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সৃষ্টি হয়েছে যানজট। তাছাড়া, দাউদকান্দি ও মেঘনা সেতুতে পণ্যবাহী যানবাহন গুলো সেতুর উপর উঠতে এবং পারাপারে সময় লাগার ফলে যানজট দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তবে যানজট নিরসনে মহাসড়কজুড়ে ব্যাপক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
গাজীপুর থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানান, গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ  ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ঈদে ঘরমুখো মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন। মহাসড়কের পাশের কয়েকটি পশুরহাট এবং টঙ্গীতে একটি সড়কে ওপর পশুরহাট বসায় এবং কয়েকটি স্থানে গাড়ি বিকল হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা পড়ছেন দুর্ভোগে। সকালের পর পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে গেলেও বিকালে আবারো শুরু হয় যানজটের ভোগান্তি। তবে সড়কে যানজট থেকে মুক্ত করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বিভাগ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সড়ক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান গাজীপুরের ওই দুটি মহাসড়ক পরিদর্শন করেছেন এবং এবং স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের নানা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বিপিএম, পিপিএম (বার) জানিয়েছেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পুলিশের প্রায় এক হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশের সঙ্গে যানজট নিরসনে কমিউনিটি পুলিশের ১ হাজার ২০০ সদস্য কাজ করছেন। এরপরও যানবাহনের চাপ ও মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কিছু কিছু পয়েন্টে একটু বিড়ম্বনা হচ্ছে। তবে এটা তেমন নয়, এটাকে দীর্ঘ যানজট বলা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *