সামনে চীনা তাইপে ‘ফাইনাল’ জিততে মরিয়া মেয়েরা

Slider খেলা বাংলার মুখোমুখি
351fc77f6c1a85080e103b434a960054-Untitled-1
ঢাকা; শরতের বিকেলে কিশোর ছেলেদের ক্রিকেট শেখাতে এনেছেন মায়েরা। কিন্তু মায়েদের চোখ মোটেও ছেলেদের অনুশীলনে নিবদ্ধ নয়! ধানমন্ডির আবাহনী মাঠে একপাশে গোল হয়ে বসে তাঁরা মনোযোগ দিয়ে দেখছিলেন কৃষ্ণা-সানজিদাদের অনুশীলন। পাশ থেকে কেউ একজন জানতে চাইলেন, ‘ফাইনাল কবে?’
এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে ফাইনাল বলে কিছু নেই। কিন্তু আজ অলিখিত ‘ফাইনালে’ বাংলাদেশ মুখোমুখি হচ্ছে চীনা তাইপের। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ছয়টায় শুরু খেলা।
ফাইনালই তো! ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশ যেমন তিন ম্যাচের একটিও হারেনি, চীনা তাইপেও তা-ই। তবে ৯ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের ওপরেই কিন্তু চীনা তাইপে। ব্যবধান গড়ে দিয়েছে গোল। গোল গড়ে পিছিয়ে থাকায় সমান পয়েন্ট পেয়েও বাংলাদেশ দুইয়ে। আজ চীনা তাইপেই বড় বাধা, এটি পেরোলেই আশা করা যায় বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে জায়গা করে নেবে চূড়ান্ত পর্বে। ৫ সেপ্টেম্বর গ্রুপের শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ দুর্বল সংযুক্ত আরব আমিরাত। ওদের বিপক্ষে জয় পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা সামান্যই।
বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন প্রতিটি ম্যাচ ধরে এগোতে চান। সেই লক্ষ্যে তিনি সফল। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যটাকে সরিয়ে রেখে, আপাতত তাই আজকের ম্যাচ নিয়েই ভাবছেন ছোটন, ‘প্রতিযোগিতা শুরুর আগে বলেছিলাম এখানে চীনা তাইপে ও ইরান ফেবারিট। বাংলাদেশ শক্তিশালী ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশ সবার কাছে প্রমাণ করেছে আমরাও ফেবারিট। অন্য ম্যাচের মতোই জয়ের জন্য মাঠে নামবে মেয়েরা। চীনা তাইপে ও আমাদের পয়েন্ট সমান বলে ম্যাচটা অলিখিত ফাইনালেই রূপ নিয়েছে।’
কোচের চোখে ম্যাচটা ‘ফাইনাল’। কিন্তু মেয়েদের জন্য যেন এটা আর দশটা ম্যাচের মতোই। অনুশীলনে মেয়েদের চেহারায় স্নায়ুচাপের কোনো ছাপই নেই। তারা ফুরফুরে, নির্ভার। অনুশীলন করল নিজেদের মধ্যে খুনসুটি করতে করতে।
গত তিন ম্যাচে পোস্টের নিচে অলস সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহমুদা। রক্ষণভাগকেও খুব বেশি পরীক্ষা দিতে হয়নি। আজই হয়তো আসল পরীক্ষা হতে পারে বাংলাদেশের। তবে পরীক্ষাটা নাকি চীনা তাইপেরই হবে! বাংলাদেশের কোচ আত্মবিশ্বাসী, ‘আমার রক্ষণভাগ ও গোলকিপার ইরানের সঙ্গে চমৎকার খেলে একটু হলেও পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু চীনা তাইপে বড় দলের সঙ্গে খেলেইনি, ওদেরই পরীক্ষা দিতে হবে।’
পুরো বাংলাদেশ দলটাই যেন ফুটবলের সুখী পরিবারের বিজ্ঞাপন। এ মুহূর্তে রয়েছে দারুণ উজ্জীবিত। ডিফেন্ডার থেকে ফরোয়ার্ড—গোল করছে সবাই! কিরগিজস্তানকে ১০-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া ম্যাচে গোল করেছে ছয়জন। সব মিলিয়ে তিন ম্যাচে ৮ জন ফুটবলার গোল পেয়েছে। আত্মবিশ্বাসী কৃষ্ণা-আনুচিংরা যে চীনা তাইপেকেও ছেড়ে কথা কইবে না, তা বলাই যায়।
চীনা তাইপের ম্যাচগুলো মাঠে বসে দেখেছেন বাংলাদেশ কোচ। ফরোয়ার্ড হি জিন-রো, মিডফিল্ডার চিং-ইয়ুন নাইন, ইয়া-জি ঝেং ও সু ইউ-হুসান বক্সে ঢুকে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন প্রতি ম্যাচে। এদের ওপর আলাদা নজর রাখার পরিকল্পনা কোচের।
ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে চীনা তাইপের সিনিয়র দলটি ৩৮তম। বাংলাদেশ ১২১।
তাতে কী? র‍্যাঙ্কিংকে বুড়ো আঙুল দেখাতে যে মুখিয়ে রয়েছে কৃষ্ণারা!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *