দুই মন্ত্রী সংবিধান রক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছেন : আপিল বিভাগ

Slider টপ নিউজ বাংলার আদালত

file

ঢাকা: প্রধান বিচারপতি এবং বিচারাধীন বিষয়ে বিরূপ মন্তব্যের মাধ্যমে আদালত অবমাননার দায়ে দুই মন্ত্রীকে করা জরিমানার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার ৫৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সর্বোচ্চ আদালত।

রায়ে আদালত বলেন, দুই মন্ত্রী সংবিধান রক্ষায় যে শপথ নিয়েছিলেন এর মাধ্যমে তারা আইন লংঘন করেছেন। শপথ ভঙ্গ করেছেন। আদালত বলেন, আমাদের সন্দেহ নেই যে তারা উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ব্ক্তব্য রেখে সংবিধান রক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছেন। এছাড়া রায় প্রদান প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুই মন্ত্রী সুপ্রিমকোর্টকে নিয়ে কুৎসা রটিয়েছেন। বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী এ রায় প্রদান করেন। তার সাথে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ অপর চার বিচারপতি একমত পোষণ করেন।

অন্যদিকে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী পৃথকভাবে রায় প্রদান করেন। তিনি তার রায়ে বলেন, কোন মন্ত্রীকে সাজা দেয়া এবং জরিমানার সাথে আমার দ্বিমত নেই। কিন্তু সংবিধান রক্ষায় শপথ ভঙ্গ করেছেন এই অভিমতের সাথে আমি একমত নই। তবে এই রায়ের সাথে অপর দুই বিচারপতি একমত পোষণ করেন।

এর আগে গত ২৭ মার্চ খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে সাতদিনের কারাদণ্ডের রায় দেন। রায়ে আদালত বলেন, মন্তব্যের মাধ্যমে আদালত অবমাননা করেছেন দুই মন্ত্রী। তাদেরকে সাতদিনের মধ্যে জরিমানার টাকা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও কিডনি ফাউন্ডেশনকে দিতে বলা হয়। পরে জরিমানার টাকা পরিশোধ করেন তারা।

গত ৫ মার্চ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আলোচনা সভায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে বাদ দিয়ে মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার আপিল শুনানি পুনরায় করার দাবি জানান খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

এ বক্তব্য মিডিয়ায় প্রকাশের পর গত ৮ মার্চ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে তলব করেন পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে নোটিশ জারি করেন। সরকারের এ দুই মন্ত্রীকে ১৫ মার্চ সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ আদালতে হাজির হয়ে তাদের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। অন্যদিকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয় ১৪ মার্চের মধ্যে। নোটিশে কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না- তা দুই মন্ত্রীর কাছে জানতে চান আপিল বিভাগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *