‘টিভি নাটকের অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে’

Slider বিনোদন ও মিডিয়া

28764_Chonnda-2

 

দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী গোলাম ফরিদা ছন্দা বর্তমানে বেশ কয়েকটি ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন। এর মধ্যে রয়েছে চ্যানেল আইতে প্রচার চলতি ‘মোহর আলী’, বাংলাভিশনে ‘লড়াই’ আরটিভিতে ‘মিলার বারান্দা’ ও বিটিভিতে ‘চিত্র-বিচিত্র’। এসব ছাড়াও আরও কয়েকটি নতুন ধারাবাহিকে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে খুব শিগগিরই এটিএন বাংলায় ছন্দা অভিনীত নতুন নাটক ‘রূপালী প্রান্তর’ প্রচারে আসছে। এছাড়া আসছে ঈদ উপলক্ষে কয়েকটি খন্ড নাটকের পাশাপাশি সাগর জাহানের রচনা ও পরিচালনায় ‘অ্যাভারেজ আসলামের বিবাহ বিভ্রাট’ শিরোনামের ছয় পর্বের একটি ধারাবাহিকের শুটিং শেষ করেছেন ছন্দা। বর্তমান ব্যস্ততা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খুব বেশি যে কাজ করছি তা নয়। ভালো গল্প, নির্মাতা সহশিল্পী এসব মনের মতো হলেই অভিনয় করি। এখন যে কাজগুলো চলছে প্রতিটিই আমার পছন্দ হয়েছে বলে করছি। দর্শকের কাছ থেকে বেশ ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। পথে চলতে গিয়ে এসব নাটকে কাজের জন্য বেশ সাড়া পাই। তখন একজন অভিনেত্রী হিসেবে খুব পুলকিত হই আমি। অভিনয় ক্যারিয়ারের মতো ব্যক্তিজীবনেও সফল ছন্দা। পর্দায় যেমন কখনো ছন্দ হারাননি তেমনি ব্যক্তিজীবনেও নয়। তাইতো নিকটজনেরা বলেন, ছন্দার জীবনটা দারুণ ছন্দময়। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, অভিনয় ও সংসার এ নিয়েই আমার জীবন। বেশ ভালো আছি। দীর্ঘ সময়ের ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত কোনো বিরূপ প্রভাব পড়তে দিইনি। তেমনি ব্যক্তিজীবনটাকেও বেশ উপভোগ করে আসছি। স্বামী নির্মাতা সতীর্থ রহমান রুবেল। তার সঙ্গে একছাদের নিচে বসবাস করছেন ২০০১ সাল থেকে। ১৬ বছরের সংসারে দুই মেয়ে টাপুর-টুপুরকে নিয়ে সুখের জীবন ছন্দার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মেয়েরা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। ওদেরকে ঘিরেই আমার আর সতীর্থের যত ভাবনা। ওরা দুজনই ভারতে পড়াশোনা করছে। টাপুর-টুপুরকেও ভবিষ্যতে নিজেদের জগতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ছন্দা বলেন, ওরা তো এরই মধ্যে কাজ করেছে বেশ কয়েকটি নাটকে। বিজ্ঞাপনের কাজও করলো। বড় হয়ে যদি নিজেরা মনে করে মিডিয়াতে কাজ করবে তাতে আমাদের আপত্তি থাকবে না। তবে এর পাশাপাশি অন্যকিছু যেন করে সেই পরামর্শ অবশ্যই দেব তাদের। কারণ এখন তো মিডিয়ার অবস্থা আগের মতো নেই। অনেকেই বলছেন মিডিয়া আগের অবস্থা থেকে অনেকটাই পরিবর্তিত। ছন্দাও তাই মনে করেন। কিন্তু কেন? প্রসঙ্গক্রমে তার কাছে জানতে চাইলে বলেন, মিডিয়ায় আগের মতো স্বাধীনভাবে কেউ কাজ করতে পারছেন না। এজেন্সি হয়ে যাওয়াতে দৃশ্যপট অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। এজেন্সিগুলো তাদের মতো করে শিল্পী নির্বাচন করে দেয়। যে কারণে নির্মাতা কিংবা চ্যানেল নিজের মতো করে কাজ করতে পারে না। আর চ্যানেলগুলোও এজেন্সির কাছে অনেকটা আটকে গেছে বলে আমার মনে হয়। তাছাড়া দর্শক আর আগের মতো নাটক দেখেন না! ভারতীয় চ্যানেলের দিকে ঝুঁকছেন সবাই। এর কারণ একটাই অতিমাত্রায় বিজ্ঞাপন প্রচার। একটা নাটক দেখতে বসলে সেটা বিজ্ঞাপনের কারণে আর দেখা যায় না। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞাপন প্রচারকালীন চ্যানেল পরিবর্তন করে ঘুরে এসে আর ওই নাটক খুঁজে পাওয়া যায় না। এসব কারণে টিভি নাটকের অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে বলবো বর্তমানে মিডিয়া একটু টালমাটাল অবস্থার মধ্যেই আছে। তবে চ্যানেলগুলো যদি দায়িত্ব নিয়ে বিষয়গুলো ভাবে তাহলে সমস্যাও অচিরে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে আমি মনে করি। টিভি নাটকে ছন্দার অভিষেক ঘটে জিনাত হাকিমের রচনা ও নূর হোসেন দিলুর নির্দেশনায় ‘কাজল কালো দিন’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এতে তার সহশিল্পী ছিলেন শ্রাবন্তী ও জয়। বিক্রমপুরের মেয়ে ছন্দা একটি নাটকও নির্মাণ করেছিলেন, যার নাম ‘প্রেম তর্ক’। এতে তার সহশিল্পী ছিলেন আনিসুর রহমান মিলন। তবে এ মুহূর্তে আর নির্মাণ নিয়ে ভাবছেন না তিনি। অভিনয়কে ঘিরেই তার যত পরিকল্পনা। এ প্রসঙ্গে জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী বলেন, এ মুহূর্তে নির্মাণ নিয়ে কিছু ভাবছি না। অভিনয়ের মধ্যেই থাকতে চাই। ক্যামেরার সামনে থাকতেই বেশি ভালো লাগে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে ছন্দাই সবার বড়। ছোটবেলায় গানের সঙ্গে বেশ ভালো সখ্য ছিল তার। তিনি গান শিখেছেন সত্য সাহার গানের স্কুল ‘গীতায়ন’ এবং ডলি সায়ন্তনির মা জাহানারা বেগমের কাছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর গান শিখেছেন অভিনেতা ও শিক্ষক রহমত আলীর কাছে। কিন্তু পরবর্তীকালে অভিনয়ে মনোযোগী হওয়ায় তাকে আর গানে পাওয়া যায়নি। অবশ্য চর্চা থেকে দূরে সরে যাননি ছন্দা। তিনি বলেন, গানটা আসলে শখের বশেই গাওয়া হয়। চর্চা করি নিয়মিত। কিন্তু অ্যালবাম করা কিংবা এ নিয়ে বড় কোনো চিন্তা নেই। মাঝে মধ্যে নাটকের জন্য গাওয়া হয়। ছন্দা অভিনীত দর্শকপ্রিয় নাটকের মধ্যে রয়েছে মুস্তাফা মনোয়ারের ‘স্ত্রীর পত্র’, সতীর্থ রহমান রুবেলের ‘মা’, ‘তিন দুগুণে সাত’, নরেশ ভূঁইয়ার ‘গর্ভধারিণী’, মাহবুবুল আলমের ‘নীলকণ্ঠ পাখির পালক’, শাহাদাৎ হোসেন সুজনের ‘দিগন্ত পেরিয়ে’ ইত্যাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *