ইংল্যান্ডে বাংলাদেশী ইমামকে হত্যা করেছিল আইএস সমর্থকরা’

Slider জাতীয় টপ নিউজ

28631_Jalaluddin

 

ইংল্যান্ডে বাংলাদেশী ইমাম জালাল উদ্দিনকে হত্যা করেছে আইএস সমর্থকরা। এ বছর ১৮ই ফেব্রুয়ারি তাকে হত্যা করা হলেও আইএসের প্রসঙ্গটি আদালতে নিশ্চিত করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে আদালতে শুনানি হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশী ওই ইমাম অশুভ শক্তির প্রাদুর্ভাব সারাতে তন্ত্রমন্ত্র চর্চা করতেন বলে তাকে হত্যা করেছে আইএসের দু’ সমর্থক। তারা হলো তার স্বদেশী মোহাম্মদ হোসেন সাঈদি (২২) ও মোহাম্মদ আবদুল কাদির (২৪)। গত বছর গ্রেটার ম্যানচেস্টারে রোচডেলে এলাকায় শিশুদের একটি খেলার স্থানে ইমাম জালাল উদ্দিন (৭১)-এর ওপর হামলা চালানো হয়। হাতুড়ি ব্যবহার করা হয় এতে। এতে তার মাথায় ও মুখে মারাত্মক সব ক্ষত হয়। পরে তিনি মারা যান। তিনি নিয়মিত সেখানে একটি মসজিদে নামাজ পড়াতেন। ঘটনার দিন তিনি এক বন্ধুর বাসায় খাবার খেয়ে বেরিয়েছিলেন নিজের বাসার উদ্দেশে। এমন সময় সাঈদি ও কাদির তার ওপর ওই হামলা চালায়। তারা আগে থেকেই তার ওপর লক্ষ্য রাখছিল। তারা দেখতে পেয়েছে যে, ইমাম জালাল উদ্দিন অশুভ শক্তি তাড়াতে যাদুমন্ত্র ব্যবহার করেন। ফলে তার ওপর তাদের বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়। এ জন্য তারা জালাল উদ্দিনের ওপর নজর রাখে। স্থানীয় পর্যায়ে এই ইমামও ছিলেন অত্যন্ত সম্মানিত। তিনি ছিলেন শান্ত প্রকৃতির। এ বিষয়টি নিয়ে বিচার চলছে ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্টে। সেখানে বিচার কাজ শুরুতে প্রকিসিউটর পল গ্রিনি কিউসি বলেছেন, জালাল উদ্দিনের মতো একজন শান্ত মানুষের ওপর কে এমন নৃশংসতা ঘটাতে যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর হলো, এ ধারণাটি পাওয়া যায় আইসিসের আদর্শে, কখনো কখনো এ গ্রুপটি আইএস নামে পরিচিত। ইসলামিক রীতি অনুযায়ী, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে চিকিৎসা দিতেন জালাল উদ্দিন। কিন্তু আইএস এই চর্চাকে ব্লাক ম্যাজিক হিসেবে আখ্যায়িত করে। তারা মনে করে, যারা এ চর্চা করেন তাদের কঠোর শাস্তি পাওয়া উচিত, এমন কি তা হতে পারে মৃত্যুদ-ও। তাই বিবাদী মোহাম্মদ হোসেন সাঈদি ও তার সহযোগী মোহাম্মদ আবদুল কাদির হলো আইসিসের সমর্থক। তারা মনে করে যারা অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে মন্ত্রতন্ত্র চর্চা করেন তাদের কঠোর শাস্তি হতে হবে। গ্রিনার আরও বলেন, হয়তো সাঈদি দাবি করবে সে আইএসের সমর্থক নয়। অথবা কোন জঙ্গি সহিংসতার সঙ্গে জড়িত নয়। তিনি এ সময় জুরিদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের কাজ হবে তার কাছ থেকে সত্য বের করে আনা। ক্রাউন কোর্টে তিনি আরও বলেন, যে পার্কে জালাল উদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে তার গেট পর্যন্ত কাদিরকে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যায় সাঈদি। এ সময় সে জানতো জালাল উদ্দিনকে হত্যা করতে যাচ্ছে তারা। অথবা তার মারাত্মক কোন ক্ষতি করতে যাচ্ছে। ১৮ই ফেব্রুয়ারি রোচডেলের রাস্তাগুলোতে তারা জালাল উদ্দিনকে ফলো করে। জালাল উদ্দিন পার্কে প্রবেশ করার পর পরই সাঈদির গাড়ি থেকে নামে কাদির। দৌড়ে ছুটে যায় জালাল উদ্দিনের কাছে। সে এলোপাতাড়ি জালাল উদ্দেনের মুখে দাঁতে আঘাত করতে থাকে। এতে তার হাড়গোর ভেঙে যায়। এ অবস্থায় তাকে ফেলে পার্কের অন্যপাশে চলে যায় কাদির। সেখানে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষায় ছিল সাঈদি। তার গাড়িতে করে তারা দ্রুত সরে পরে। এসব কথা বলা হয়েছে আদালতে। আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে দু’যুবতী অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন জালাল উদ্দিনকে। তারা সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক সংকেত বাজান। অল্পক্ষণের মধ্যে জালাল উদ্দিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তিনি মারা যান। গ্রিনারের মতে, এ হত্যাকা- ছিল ‘ঘৃণা প্রসূত ও অসহিষ্ণুতা’ বশত। তবে রোচডেলের অভিযুক্ত সাঈদি ও কাদির এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, এ হত্যায় তারা জড়িত নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *