ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু ঢাবিতে বাড়ছে ২০০ আসন

Slider শিক্ষা

 

28170_du
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণিতে প্রায় দুই শ’ আসন বাড়াচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। নতুন বিভাগ চালু করায় এ আসনগুলো বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে পুরাতন কিছু ইনস্টিটিউট ও বিভাগেও আসন বাড়ানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে শিক্ষাবিদরা বলেন, এর ফলে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও আগ্রহ আরো বাড়বে। নতুন বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ, আবহাওয়া বিজ্ঞান, হেলথ সায়েন্স, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধীনে চাইনিজ ও জার্মান ভাষা শিক্ষায় সম্মান শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে মোট আসন ছিল ৬ হাজার ৬৮৫টি। বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটে আসন ছিল ১ হাজার ৬৬০টি, কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটে আসন ছিল ২ হাজার ২৮০টি, বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটে আসন ছিল ১ হাজার ১৭০টি, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটে আসন ছিল ১ হাজার ৪৪০টি এবং চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটে আসন ছিল ১৩৫টি। ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে মোট আসন রয়েছে ৬ হাজার ৮০১টি। গতবারের তুলনায় আসন বেড়েছে ১১৬টি। এ ছাড়া পরিসংখ্যানে ‘ক’ ইউনিটে আসন সংখ্যা ১ হাজার ৬৮০টি দেখানো হলেও এই অনুষদে আরো ৪০টি আসন বাড়ানো হয়েছে বলে জানান ভর্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাড়তি ৪০টি আসনের মধ্যে ৩০টি লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে এবং বাকি ১০টি মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগে বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২৭/২৮শে আগস্টের মধ্যে এই অনুষদে আরো ২০টি আসন বাড়তে পারে বলে জানান তিনি। ‘গ’ ইউনিটে আসন বেড়েছে ৮০টি। এই অনুষদে এ বছর চালু হওয়া অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটিজি অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগে আসন রয়েছে ৫০টি। এ ছাড়া ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগে বাকি আসনগুলো বাড়ানো হয়েছে। ‘খ’ ইউনিটে আসন বাড়ানো হয়েছে ১৬টি। বর্তমানে এই অনুষদে আসন সংখ্যা ২ হাজার ২৯৬টি। ‘ঘ’ ইউনিটে গতবার আসন সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৪০টি। এবার তা বেড়ে প্রায় ১৫শ’ ছুঁয়ে যাবে বলে জানান ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা চাই আসন আরো  বাড়ুক। যাতে করে শিক্ষার্থীরা আরো বেশি পরিমাণে উচ্চ শিক্ষায় সুযোগ পায়। তবে ‘চ’ ইউনিটে কোনো আসন বাড়ানো হয়নি। এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, আমাদের ফ্যাসিলিটিস কম। শিক্ষার্থীদের ছবি আঁকার জন্য ভালো স্পেস দিতে পারি না। স্পেস বাড়ানোর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখতে পারলে আসন বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি। তিনি আরো  বলেন, দেশের জনসংখ্যা বেড়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে। ফলে তাদের সুযোগ দেয়া উচিত। এ বিষয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেড় শ’ পর্যাপ্ত নয়। আরো বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করেছে। অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরও করা উচিত। কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। দেশবরেণ্য এই শিক্ষাবিদ আরো বলেন, সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু সেই ধরনের কোনো উদ্যোগ নেই। এক্ষেত্রে ভালো ভালো কলেজগুলোকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা যেতে পারে।
প্রো-ভিসি (প্রশাসন) ড. আখতারুজ্জামান বলেন, কোয়ালিটি সম্পূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা ও চাহিদা বিবেচনা করে আসন বাড়ানো উচিত। আমাদের নতুন কিছু বিভাগ চালু করা হয়েছে। একই সঙ্গে পুরাতন কিছু ইনস্টিটিউট ও বিভাগ যেখানে আসন তুলনামূলক কম ছিল সেখানেও কিছু আসন বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে গতকাল থেকে অনলাইনে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চলবে ৭ই সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত। টাকা জমা দেয়ার শেষ সময় ৮ই সেপ্টেম্বর। ‘খ’ ও ‘চ’ ইউনিটের পরীক্ষার্থীরা ১১ই সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টা থেকে পরীক্ষার দিন সকাল ৯টা পর্যন্ত প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবে। ‘ক’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষার্থীরা ১৫ই সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টা থেকে পরীক্ষার দিন সকাল ৯টা পর্যন্ত প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবে। সোমবার সকাল ১০টায় ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বেগম আক্তার কামাল, বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় ভিসি অধ্যাপক ড. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া ১১০ ভাগ স্বচ্ছ। এ বছর ছাত্র-ছাত্রীদের আবেদনের যোগ্যতা গতবারের মতোই রাখা হয়েছে। কিছু নতুন বিভাগ চালু হওয়ায় এবং কিছু বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে আসন বৃদ্ধি করায় মোট আসনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোন বা টেলিযোগাযোগ করা যায় এরকম কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস/যন্ত্র/ঘড়ি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একই পরীক্ষা চলাকালে মোবাইল কোর্ট দায়িত্ব পালন করবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, পরীক্ষায় অসদুপায় রোধে কঠোর অবস্থানে থাকবে কর্তৃপক্ষ। কেউ অসদুপায় অবলম্বন করলে পরীক্ষার হল থেকে সরাসরি তাকে জেলে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৩শে সেপ্টেম্বর, চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (সাধারণ জ্ঞান) ২৪শে সেপ্টেম্বর, বাণিজ্য অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৩০শে সেপ্টেম্বর, বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২১শে অক্টোবর, বিভাগ পরিবর্তন ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৮শে অক্টোবর এবং ‘চ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (অংকন) ১লা অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *