জঙ্গি ঘটনায় জড়িতরা আ.লীগ ঘরানার সন্তান

Slider রাজনীতি

file

‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সঙ্গে বিএনপি জড়িত’—সরকারের মন্ত্রীদের এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন পর্যন্ত একটি ঘটনাও তারা এটা প্রমাণ করতে পারেনি। বরং যাঁরা জঙ্গি ঘটনায় জড়িত ও গ্রেপ্তার হয়েছে, তাঁরা আওয়ামী লীগ ঘরানার সন্তান।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানী নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এক দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন। দলের প্রয়াত মহাসচিব আবদুস সালাম তালুকদারের মৃত্যুবার্ষিকী ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমানের মৃত্যুতে বিএনপি এ দোয়ার আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আজ কথায় কথায় তারা (সরকার) বলে, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সঙ্গে বিএনপি জড়িত। অথচ আজ পর্যন্ত একটি ঘটনাতেও তারা প্রমাণ করতে পারেনি যে জঙ্গিবাদের সঙ্গে বিএনপি জড়িত রয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে, যাঁরা এ ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছে, তাঁদের বাবা আওয়ামী লীগের নেতা, তাঁরা আওয়ামী লীগ ঘরানার সন্তান।

সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তারা আজকে জঙ্গিবাদের কথা বলছে, তাকে নির্মূল করবার জন্য নয়। বরং আমরা স্পষ্টভাবেই বলতে চাই, তারা তাদের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। আজকে যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই, কোনা রকম আদালতে প্রেরণ ও বিচার ছাড়াই তাদের ক্রসফায়ারের নাম করে হত্যা করা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো হালকা করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।’

প্রয়াত আবদুস সালাম তালুকদারের দক্ষ ও দৃঢ় নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আজ ১৭ বছরে পরে দেশের সবচেয়ে দুর্দিনে, দলের সবচেয়ে বড় দুঃসময়ে এই নেতাকে খুব মনে পড়ছে। আজকে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য গোপনে নয়, প্রকাশ্যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা হুমকি দিচ্ছেন, বিএনপিকে নির্মূল করে দেওয়া হবে। একটি গণতান্ত্রিক শক্তি, যা দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই সংগ্রাম করেছে, সেই দলটিকে একেবারে শেষ করে দেওয়ার ঘোষণা আওয়ামী লীগের নেতারা দিচ্ছেন। এটাতে ষড়যন্ত্রের আভাস পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে তাঁরা বিএনপিকে মূল রাজনৈতিক ধারা থেকে সরিয়ে দিতে চান। বিষয়টা শুধু বিএনপি নয়, দেশের সমগ্র গণতান্ত্রিক শক্তি ও সচেতন মানুষের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের। তাহলে কি সরকার দেশের বহুদলীয় রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে আবার একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়?

ফখরুল বলেন, আবদুস সালাম তালুকদার কেবল বিএনপিকে নয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তিকে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর সক্ষম ও দৃঢ় নেতৃত্বে বিএনপি ১৯৯১ সালের সরকার গঠন করতে পেরেছিল। এমনকি ওই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ওই সরকারকে জনগণের কাছে একটি জনপ্রিয় সরকার হিসেবে পরিচিত করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, আজকেও একটা সময় উপস্থিত হয়েছে, যখন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য, মানুষের ভোটের অধিকার, তাঁর লেখা ও কথা বলার স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য গোটা জাতির ঐক্যবদ্ধ হওয়াটা বড় প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দোয়া অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *