সম্পাদকীয়; আমার সাংবাদিকতা ও আমাদের শেষ খবর

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় বাংলার মুখোমুখি বাধ ভাঙ্গা মত রাজনীতি সম্পাদকীয়

repon-ansary-photo-1

১৯৯৮ সালে ঢাকার একটি সাহিত্য পত্রিকা “ মাসিক আকাশ” দিয়ে আমার সাংবাদিকতার যাত্রা। সম্পাদক ছিলেন আব্দুস সামাদ সাহেব। এরপর  নিয়োগ না পেয়েও কাজ করেছিলাম দৈনিক আজকের আওয়াজ পত্রিকায়। ২০০০ সাল থেকে অনেক সময় পর্যন্ত  জাতীয় দৈনিক অর্থনীতি, গাজীপুরের স্থানীয় দৈনিক গনমূখে কাজ করেছি। রিপোর্টিং করার সাথে সাথে ২০০৪ সালে প্রথম সম্পাদনায় আসি ঢাকার একটি জাতীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা শেষ খবরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে। গাজীপুরের দৈনিক জনসংবাদ পত্রিকায় কিছু সময় নির্বাহী সম্পাদক ছিলাম। ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রিপোর্টিং দিয়ে শুরু এখনো আছি। ঢাকার জাতীয় দৈনিক খবরপত্রের সম্পাদক প্রয়াত বিশ্ব নন্দিত সাংবাদিক আমার শ্রদ্ধেয় পিতৃতুল্য গুরু  গিয়াস কামাল চৌধুরীর হাতে দেয়া নিয়োগ এখনো আছে। গাজীপুর ব্যাুরো চীফ হিসেবে  দায়িত্ব পালন করছি এখন। ২০১২ থেকে ২০১৫ এর শেষ সময় পর্যন্ত প্রায় ৪ বছর কাজ করেছি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকা বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম -এ।  এখন একটি জাতীয়  ইংরেজী দৈনিকের গাজীপুরে কর্মরত স্টাফ করেসপন্ডেন্টও দেয়া হল। নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত ইংরেজী দৈনিকের নামটি প্রকাশ করছি না। ইতোমধ্যে একটি টিভি চানেলেও নিয়োগ চূড়ান্ত হয়ে আছে। যুক্ত হয়েছি দেশের বাইরের একটি দৈনিকেও।  নিজের মালিকানা ও সম্পাদনায় নিয়মিত প্রকাশ করছি গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম। সর্বোপরী ২০০৪ সাল থেকে সম্পাদনায়ও যুক্ত। এই রিপোর্টি ও সম্পাদনার যুগল সাংবাদিকতার প্রথম সম্পাদনার পত্রিকাটির নাম  ছিল  শেষ খবর। আজ হঠাৎ মনে হল শেষ খবরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে আমার দেশের শেষ খবরটি কি তা জানার জন্য।

আমার হাতে লেখা আমার সাংবাদিকতার কিছৃ ইতিহাস এই প্রথম লিখলাম। সম্পাদনার শিরোনামের সঙ্গে আমার উপরের লেখাটা মিল দৃশ্যত না থাকলেও মিল আছে বলেই লিখছি।

মনে আছে সাংবাদিকতার শুরুটা ছিল উৎসবমুখর। খবর সংগহ আর প্রেরণ দুটোই ছিল আবেগে ভরপুর। তখন সাংবাদিকদের সকলেই অনেক মূল্যায়ন করতেন। আজও করেন তবে ভিন্ন ভাবে। তখন কোন সংবাদ ছাপা হলে সকাল ১০টার আগেই এ্যাকশন হয়ে যেত। ফলে অনেক সংবাদের ফলোআপ সংবাদ ‍দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হত। ওই সময় আর এই সময়ের সাংবাদিকতার পার্থক্যটা হল তখন ফলোআপ সংবাদের জন্য তৈরী থাকতে হত এখন থাকতে হয় না। কারণ সাংবাদিকতা রাজনীতি ও অন্যায়কারীদের নিয়ন্ত্রনে চলে যাচ্ছে। ফলে রিপোটিং আর ফলোআপ দুটোই এখন আর তেমন গুরুত্ব বহন করে না।

দেশের সর্বশেষ খবর মূল্যায়ন করে যদি কথা বলি তবে বলতে হবে সাংবাদিকতা ও মিডিয়ার মালিকানা দুটোই এখন সাংবাদিকদের হাতে নেই। একটি কারখানা থেকে হাত পা বেঁধে দিয়ে পুকুর পাড়ে ফেলা হচ্ছে সাঁতার কাটতে। হাত পা বাঁধা থাকার কারণে সাঁতার কাটা সম্ভব হয় না তাই কিছু সময় পর কথিত সাঁতারোকে ভিজে কাপড়ে টেনে হিঁচড়ে পাড়ে তুললেই ডিউটি শেষ। পুকুরে সাঁতার কেটে মাছ ধরার দায়িত্ব পালন করলে আর পুকুর পাড়ে হাত পা বাঁধা অবস্থায় গড়াগড়ি করলেও কাপড় ভিজে। এখন পুুকুরে শুধু কাপড় ভেজানো হয় আর সাঁতারোরা তীরে উঠার আগেই মাছ কারখানায় চলে আসে। সুতরাং সাঁতারুরা মাছ ধরার কাজ করলেও এখন আর মাছ ধরতে হয় না শুধু কাপড় ভিজানো হয়। আর মাছ পুকুর থেকে হেঁটে হেঁটে চলে আসে কারখানায়।

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। আমাদের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার সুরক্ষার জন্য সাংবিধানিক যে অধিকার সংবিধানে আছে তার কার্যকারিতা কতটুকু চলমান তা আমরাই জানি। আজ নিঃসন্দেহে বলতে হয়, রাষ্ট্রের নাগরিক ও মালিক জনগনের ক্ষমতা খর্ব হয়েছে। গনমাধ্যমের স্বাধীনতা জিম্মি হয়ে আছে। গনমাধ্যমের মালিকানা রাজনৈতিক আচবরণে চলে যাচ্ছে। গনমাধ্যম কর্মীরা এখন শুধুই কাপড় ভেজানো সাঁতারে। মাছ ধরে কারখানার মালিকেরাই। আমাদের রাষ্ট্রীয় মালিকানা যেমন খর্ব হচ্ছে তেমনি ঝুঁকিতে পড়ছে নিরাপত্তাও।

বর্তমানে ক্ষমতায় থাকতে আর ক্ষমতায় যেতে রাষ্ট্রের মালিকদেরকেই হত্যা করা হচ্ছে। যারা বেঁচে আছেন তারাও নিরাপত্তা হীনতায়। প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রের মালিক খুন হচ্ছেন। ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, কথা বলার অধিকার ও নিরাপত্তার অধিকার আজ হুমকির মুখে। দেশের জনগন আজ উদ্বিগ্ন। বেসরকারী ও সরকারী সন্ত্রাসের পাশাপাশি এখন শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক স্টাইলে সন্ত্রাস। দেশী মানুষের সঙ্গে সঙ্গে খুন হচ্ছেন বিদেশীরাও। ফলে বিদেশী দাতারার আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ফলে আমরা আজ দিশেহারা।

এই অবস্থা থেকে মুক্ত হতে আমাদের যা করণীয় তাও আমরা দেখছি। তা হল দেশ ও জনগন বাঁচানোর সংগ্র্রামেও ক্ষমতার রাজনীতি। মানে হল, আত্মরক্ষার সংগ্রামে সংগ্রামীদের পারস্পরিক আক্রমন। নিজেদের মধ্যে কলহ বিচ্ছেদ করতে করতে আমরা কখন যে অন্যের হয়ে যাব, তাও জানা নেই। জীবন যুদ্ধের ময়দানে সৈন্যদের মাঝে আত্মকলহ মিটাতে যারা মোড়লী করতে আসছেন মূলত তাদের সঙ্গে আামদের যুদ্ধ। হাস্যকর বিষয় হল,  প্রতিপক্ষ এখন আমাদের মাতববর। এতেই মনে হয় আমাদের দেশের শেষ খবরটি কি? কি হতে পারে!

ডক্টর এ কে এম রিপন আনসারী

এডিটর ইনচীফ

গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *