জাইকার প্রেসিডেন্ট আসছেন। গুলশান হামলার তদন্ত তথ্য চেয়েছে জাপান

Slider টপ নিউজ সারাবিশ্ব

file

রাজধানীর হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়েছে জাপান। তারা তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্য বিনিময়ের পাশাপাশি দোষিদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছে। জাপান একইসাথে বাংলাদেশে অবস্থানরত এবং বাংলাদেশ ভ্রমণে যাওয়া তাদের দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছে।

সম্প্রতি মঙ্গোলিয়ায় অনুষ্ঠিত আসেম (এশিয়া-ইউরোপ বৈঠক) সম্মেলনের সাইডলাইনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এসব মন্তব্য করেছেন। জাপানের পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে দ্বিপক্ষীয় এই বৈঠকের বিবরণী দেয়া হয়েছে।

বিবরণীতে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদ কোনো অবস্থাতেই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না উল্লেখ করে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন, জাপানের নিহত নাগরিকরা উন্নয়ন সহায়তায় জড়িত ছিল। তাদের জীবনহানি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ভিকটিমদের চেনতাকে সম্মুন্নত রাখতে বাংলাদেশকে দেয়া উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ) জাপান অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেন, জাপানের জনগণ ও বিনিয়োগ নীতির ওপর সন্ত্রাসী ঘটনার প্রভাব সীমিত রাখতে উন্নয়ন সহায়তার সাথে জড়িতসহ বাংলাদেশে অবস্থানরত সব জাপানি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত একটি কাউন্সিল আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রকল্পগুলোতে নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করছে। এ লক্ষ্যে শিনজো আবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান।

ঢাকায় সন্ত্রাসী হামলায় জাপানের সাতজন নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর দু:খ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী, জাপানের জনগন ও নিহতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, জাপানের নিহত নাগরিকরা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করছিলেন। তাদের জীবনহানিতে বাংলাদেশ গভীরভাবে মর্মাহত। শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো দেশ বা অঞ্চল নেই।

ঢাকায় সন্ত্রাসী হামলার পরপরই বাংলাদেশের জন্য উন্নয়ন সহায়তা অব্যাহত রাখতে শিনজো আবের নেয়া সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত জাপানসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সামরিক বাহিনীকে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা সরাসরি আমার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। কেবল নিরাপত্তা বাহিনী নয়, সার্বিকভাবে জনগনকে সাথে নিয়ে এই সন্ত্রাসী হামলার জবাব দিচ্ছে বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকায় হামলাকারী সন্ত্রাসীরা নিহত হলেও বাংলাদেশ এর পেছনের কারণগুলো তদন্ত করছে। এর মধ্যে রয়েছে কারা এ ঘটনা থেকে লাভবান হচ্ছে। কারা সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন, অস্ত্রের সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

সন্ত্রাস দমনে এবং জাপানের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাপান সরকারের সাথে বাংলাদেশ পূর্ণাঙ্গ সহায়তা করবে বলে নিশ্চয়তা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাইকার প্রেসিডেন্ট আসছেন
জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকার প্রেসিডেন্ট শিনিচি কিতাওকা আগামী ৬ আগস্ট দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন। এই সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গের সাথে জাইকা প্রকল্পে কর্মরতদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক ইস্যুতে মতবিনিময় করবেন।

জাইকা মেট্রোরেলসহ বাংলাদেশের অনেক বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনায় নিহত জাপানের নাগরিকদের মধ্যে ছয়জনই ছিলেন মেট্রোরেল প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *