আটক র‌্যাব সদস্যের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ সারাদেশ

justic pc

গ্রাম বাংলা ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের সাতজনকে খুনের ঘটনায় আটক র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্য পূর্ণেন্দু বালাকে আট দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সাত খুনের ঘটনায় করা দুটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়।

আজ শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বিচারিক হাকিম সাইদুজ্জামান শরীফের আদালতে ওই র‌্যাব সদস্যকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মণ্ডল। রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে আদালত তাঁকে আট দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

এর আগে সকালে র‌্যাবের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো মোবাইল ফোনের খুদে বার্তায় জানানো হয়, গতকাল শুক্রবার দুপুরে ঢাকা থেকে পূর্ণেন্দু বালাকে আটক করা হয়। তিনি র‌্যাবের উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত।

এর আগে নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে খুন ও লাশ গুমের ঘটনায় করা পৃথক দুটি মামলায় র‌্যাব-১১-এর আটজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

প্রথম দফায় গ্রেপ্তার হন র‌্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম এম রানা। এ তিনজনই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত ২৬ আগস্ট গভীর রাতে র‌্যাবের আরও পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, ল্যান্স নায়েক মো. বেলাল হোসেন ও হিরা মিয়া এবং সেপাই আবু তৈয়ব আলী ও মো. আরিফ হোসেন। এঁদের মধ্যে এমদাদ ও আবু তৈয়ব বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি), আরিফ নৌবাহিনীর এবং ল্যান্স নায়েক মো. বেলাল হোসেন ও হিরা মিয়া আনসার বাহিনীর সদস্য। সাত খুনের ঘটনার পর আবু তৈয়ব ও হিরা মিয়াকে নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। অন্য তিনজন র‌্যাবে কর্মরত ছিলেন।

র‌্যাবের এই পাঁচ সদস্য আদালতে দাবি করেছেন, সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুম করতে র‌্যাব-১১-এর শীর্ষ তিন কর্মকর্তা তাঁদের বাধ্য করেছিলেন। তাঁরা ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে আদালতে কেঁদে ফেলেন।

পরে সাত খুনের ঘটনায় করা পৃথক দুটি মামলায় এই পাঁচজনের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। এর তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এক দিন পর উদ্ধার করা হয় আরও একটি লাশ।

এ ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম ফতুল্লা মডেল থানায় কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় চন্দনের জামাতা বিজয় কুমার পালও ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক হত্যা মামলা করেন।

জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আলোচিত এই মামলায় এখন ১৫ জন কারাগারে আছেন। এঁদের মধ্যে র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা ছাড়াও মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের সহযোগী চার্চিল ও আলী মোহাম্মদ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আর অপহরণ ও খুনের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন নয়জন। তাঁদের মধ্যে র‌্যাবের ছয় সদস্য আছেন।

মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সাত খুনের ঘটনায় জড়িত বা ঘটনাস্থলে উপস্থিত র‌্যাবের ২৩ সদস্যকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২৬ আগস্ট গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনও সন্দেহভাজনদের প্রাথমিক তালিকায় ছিলেন। কর্মকর্তারা জানান, ২৩ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এঁদের ১৮ জনকে আসামি করা হতে পারে। বাকিরা এ মামলার সাক্ষী হতে পারেন।

হত্যাকাণ্ডের প্রায় চার মাস হতে চললেও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। প্রধান আসামি নূর হোসেন ভারতে আটক হয়েছেন। তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *