ভারতে প্রিয়াঙ্কা চাই’ দাবি জোরালো হচ্ছে

Slider টপ নিউজ রাজনীতি সারাবিশ্ব

4ae35cf97cf9da20162286d97e0c04d6-a

কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারাও এবার প্রিয়াঙ্কা চাই দাবি তোলা শুরু করে দিলেন। কংগ্রেসের ‘ফার্স্ট ফ্যামিলি’ বা গান্ধী পরিবারের কেউ যদিও মুখ খুলছেন না।
আদালতের নির্দেশে আস্থা ভোটে জেতার পর উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত রাজধানীতে এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, প্রিয়াঙ্কার মধ্যে তিনি প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধীর ছায়া দেখতে পান। তিনি চান, প্রিয়াঙ্কা দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করুন। আজ বুধবার কংগ্রেস কার্যকরী কমিটির সদস্য ও মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং হায়দরাবাদে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রিয়াঙ্কার মধ্যে জননেতা হয়ে ওঠার সব রকমের গুণ রয়েছে। তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিলে কংগ্রেসের সব কর্মীই খুশি হবেন।

প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে এই দুই নেতা তাঁদের আগ্রহ দেখালেও তাঁরা এ কথা জানিয়েছেন, তিনি রাজনীতিতে আসবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত গান্ধী পরিবারকেই নিতে হবে।
প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে কংগ্রেসিদের এই আগ্রহ নতুন নয়। তবে সোনিয়া-তনয়াকে কংগ্রেসের সক্রিয় রাজনীতিতে দেখার এই আগ্রহের নতুনভাবে মাথাচাড়া দেওয়ার পেছনে রয়েছে ‘পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট’ প্রশান্ত কিশোরের এক সুপারিশ। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি ও পরের বছর বিহারে নিতীশ কুমারের জয়ের পেছনে এই প্রশান্ত কিশোরের অবদান ছিল। ব্র্যান্ড মোদি ও নিতীশের ভাবমূর্তি তৈরিতে প্রশান্তর ভূমিকা ছিল অনেকটাই। এই প্রশান্তর হাতে এবার কংগ্রেসের দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। আগামী বছর পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশ বিধানসভা ভোটে কীভাবে কংগ্রেস জয়ী হতে পারে, প্রশান্ত এখন সেই চিন্তায় মশগুল। এর মধ্যেই তাঁর দাওয়াই নিয়ে দলে সাড়া পড়ে গেছে।
প্রশান্ত একটি অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, যার মূল কথা, উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কোনো মুখ এই মুহূর্তে নেই। এর ফলে কংগ্রেসের ভোটব্যাংক নানাভাবে চুরি হয়ে গেছে। উচ্চবর্ণের ভোট কেড়ে নিয়েছে বিজেপি, দলিত ভোট মায়াবতী, মুসলমান ভোট মুলায়ম সিং যাদব। প্রশান্তর যুক্তি, রাহুল বা প্রিয়াঙ্কার মতো কাউকে এগিয়ে এসে রাজ্যে দলের নেতৃত্ব হাতে নিতে হবে। তাহলেই কংগ্রেস তার হারানো দিন ফিরে পাবে। রাহুল দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে প্রিয়াঙ্কাই হবেন সেই উপযুক্ত মুখ। প্রশান্তর এই মতামতে সায় দিয়েছেন রাজ্যের ছয় শতাধিক ব্লক কংগ্রেস সভাপতি। সম্প্রতি আগ্রায় এক সম্মেলনে তাঁরা প্রিয়াঙ্কার জন্য গলা ফাটিয়েছেন। এরপর থেকে শুরু হয়েছে নেতাদের মুখ খোলা।
উত্তর প্রদেশের আমেথি ও রায়বেরিলির (ভাই ও মায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র) গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে প্রিয়াঙ্কা বৃহত্তর দায়িত্ব নেবেন কি না, কিংবা কংগ্রেস তাঁকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খাড়া করে ২০১৭ সালের নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়ার চেষ্টা করবে কি না, তা আপাতত কোটি টাকার প্রশ্ন। তবে শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেসের রাজ্যস্তরের কিছু নেতার আচরণে প্রশান্তও নাকি ক্ষুব্ধ। তিনি নাকি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, ‘ফ্রি হ্যান্ড’ না পেলে তাঁর পক্ষে দায়িত্ব পালন করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
‘মিনি ইন্ডিয়া’ হিসেবে পরিচিত উত্তর প্রদেশ দখলে রাখতে রাজ্যের শাসক দল সমাজবাদী পার্টিও ঘর গোছাতে শুরু করে দিল। দলত্যাগী দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা অমর সিং ও বেণি প্রসাদ বর্মাকে তারা দলে ফিরিয়ে নিয়ে রাজ্যসভার টিকিট দিয়েছে। উত্তর প্রদেশের জাতপাতভিত্তিক ভোটে এই দুই নেতাকে দলে ফেরানো ইঙ্গিতবাহী। যদিও প্রশান্ত কিশোরের ধারণা, প্রিয়াঙ্কা হাল ধরলে জাতভিত্তিক এই সমীকরণ ধুয়েমুছে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *