শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

Slider জাতীয়
hasina-1417510309_212819
আজ ১৭ মে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৩৬তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৮১ সালের এই দিনে প্রায় ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরে আসেন তিনি। এর আগে ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এ বছর দিবসটির ৩৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন দেশজুড়ে নানা বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে

এদিকে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল এক মাইলফলক। তিনি বলেন, এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার সময় বিদেশে অবস্থান করায় তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান। এ দেশের ইতিহাসের এই মর্মান্তিক ও বিষাদময় ঘটনার সময় স্বামী পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার কর্মসূত্রে শেখ হাসিনা জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। ছোট বোন শেখ রেহানাও তার সঙ্গে ছিলেন। দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর ভারত হয়ে মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের পর জনগণের গণতান্ত্রিক এবং ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অবিরাম সাংগঠনিক কার্যক্রম ও আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের

নেতাকর্মী-সমর্থকরা ছাড়াও দেশবাসীর মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা দেয়।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ ধরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। এ সময় কয়েকবার গৃহবন্দি হন তিনি। ১৯৯০ সালে স্বৈরশাসকের পতন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের পর ক্ষমতাসীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেফতার করে তাকে। প্রায় ১১ মাস বিশেষ কারাগারে কারাবন্দি ছিলেন তিনি।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এ পর্যন্ত তিন মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়েছে। প্রথমবার ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে ২৩ জুন সরকার গঠন করে তারা। দ্বিতীয়বার ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ মহাজোট চার-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠন করে। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করে দলটি। তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা।

বিভিন্ন কর্মসূচি :দিবসটি উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় সফরে বুলগেরিয়ায় অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হবে। ঢাকা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানাবেন দলীয় সভাপতিকে।

আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনগুলোর সাত দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালাও আজ থেকে শুরু হচ্ছে। কর্মসূচির প্রথম দিনে আজ বিকেল ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও ৩৫ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলা নিয়ে আলোচনা সভা করবে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে সভায় দেশবরেণ্য নাগরিক ও জাতীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন। এর আগে বিভিন্ন দল ও সংগঠন সকালে ধানমণ্ডির বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দুপুরে বিভিন্ন এতিমখানায় খাবার বিতরণ এবং শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করবে। এ ছাড়া স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ স্বাচিপ ১৯ মে, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ২০ মে, যুবলীগ ২১ মে, জাতীয় শ্রমিক লীগ ২২ মে এবং ছাত্রলীগ ও ২৩ মে আলোচনা সভার আয়োজন করবে।

এদিকে যুবলীগ আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী ‘রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম ও ধরিত্রী সেরা তুমি’ গ্রন্থের সংবাদচিত্র প্রদর্শনী গতকাল সোমবার থেকে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির ৬ নম্বর গ্যালারিতে শুরু হয়েছে। এ সময় শেখ হাসিনার গৌরবোজ্জ্বল কর্মময় জীবনের ওপর আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাধারণ সম্পাদকের বিবৃতি : জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে দোয়া, মিলাদ মাহফিল, বিজয় র‌্যালি ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করার জন্য দল ও এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশের সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *