কাউন্সিলে খালেদাকে বেকুব বানানোর চেষ্টা হয়েছে

Slider রাজনীতি

 

 

2016_01_08_23_11_07_LOasW9X27fmTw7ozDItwn5hJkjUWNH_original

 

 

 

 

ঢাকা : খালেদা জিয়ার পাশে কিছু চাটুকার রয়েছে-এমন দাবি করে চাটুকাররাই বিএনপির বিকাশের অন্তরায়। তারাই সমস্যার সৃষ্টি করছে।

সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম’-শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ সভার আয়োজন করে।

জাতীয় কাউন্সিলে কমিটি গঠনের দায়িত্ব খালেদা জিয়ার একক ক্ষমতায় ছেড়ে দেয়ার সমালোচনা করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা (কাউন্সিলর) সব ক্ষমতা খালেদা জিয়াকে দিয়ে দিলেন, এটা কী করলেন? উনাকে (খালেদা) বেকুব বানানোর চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু উনি বেকুব না। আজকে চাটুকাররাই বিএনপির বিকাশের অন্তরাই। তারাই সমস্যা সৃষ্টি করছে।’

তিনি বলেন, তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে এসে ভবিষ্যতে নেতৃত্বে যেতে হলে নির্বাচনে বিএনপিকে জয়লাভ করতে হবে। তাছাড়া তারেকের নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব হবে না। বিএনপি জিতলে তারেক জিয়া দেশে ফিরতে পারবেন।

পরিবারতন্ত্র যেকোন দেশের গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত প্রতিবন্ধক- উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, জিয়াউর রহমানের ছেলে বলে তারেক জিয়াকে করা (শীর্ষ নেতৃত্বে আনা) উচিত হবে না। আমি বলতে চাই, তারেক জিয়ার যোগ্যতা আছে, ভবিষ্যতও আছে। কিন্তু সে যদি চাটুকারদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়, তাহলে নিজের কপাল নিজেই খারাপ করে ফেলবে।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি নয়। এমনকি তিনি ভারত কিংবা অন্য কারোরও সৃষ্টি নয়। তিনি নিজ গুণে ও যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। খালেদা জিয়া জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি না হলেও তারেক রহমান মায়ের সান্নিধ্য পেয়েছেন। সেজন্য তারেকের কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করা উচিত নয়।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির রাজনীতির সমালোচক ও পরামর্শক এ বুদ্ধিজীবী বলেন, বিএনপির অনেকে আজকে তারেককে কো-চেয়ারম্যান করতে চান। আপনারা কি এরশাদকে নকল করতে চেয়েছেন? তারেক রহমান দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এরপর তাকে কী করে কো-চেয়ারম্যান করার প্রশ্ন আসে?

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, কাউন্সিলে খালেদা জিয়া বিএনপির ভবিষ্যৎ রূপকল্প ‘ভিশন- ২০৩০’ দিয়েছেন। আমার প্রশ্ন, ২০৩০ কেন? এই সময় ধরে আপনারা কি পথে থাকবেন? বিএনপি কী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যেতে চায় না? নির্বাচন ২০১৭তে না হোক, ২০১৮তে-ও না হোক, ২০১৯-এ তো হবে। সে নির্বাচনে আপনারা (নির্বাচিত) হবেন না? আপনারাই তো ক্ষমতায় যাবেন? তাহলে আপনাদের এই পশ্চাৎমুখিতা কেন?

খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার উচিত ছিল, ২০১৯ সাল নাগাদ বিএনপি কী করতে চায়, সেটা বলা। আপনারা দেশের মঙ্গল করবেন। শ্রমিকের জন্য কী করবেন? সেটা বলা উচিত ছিল। বলা উচিত ছিল, ওষুধের দাম কমাবেন। এসব কিছু করা অবশ্যই সম্ভব। দেশবাসীকে আপনাদের স্বপ্ন দেখানো উচিত ছিল। আপনাদের বলা দরকার ছিল, সরকারি চাকরিজীবী, সরকারি মাস্টার ও সরকারি ডাক্তাররা কোনো প্রাইভেট প্রাকটিস করতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধাদের সরকার। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। ঠিক তেমনি বিএনপিও মুক্তিযোদ্ধাদের দল। আজকে অনেক মুক্তিযোদ্ধার সনদ কেটে দেয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে আমি খালেদা জিয়ার কোনো বক্তব্য দেখলাম না। ভুলটা অবশ্য খালেদা জিয়ার না, তার চারপাশে যেসব চাটুকার আছে তাদের। যাদের বয়স হয়ে গেছে, আন্ধার হয়ে গেছে চোখও।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপির মধ্যে আজকে যদি পুরোপুরি গণতন্ত্র থাকতো এবং নির্বাচন দেওয়া হতো, তাহলে খালেদা জিয়া সবাইকে হারিয়ে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হতেন। একইভাবে তারেক জিয়াও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হতেন। কিন্তু সেটা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *