ইডেনের মহারণে জিতল ভারত

Slider খেলা

2016_03_20_00_04_03_CFRR2z9ZXJSKdoAwiYhNYig2z9IoII_original

 

 

 

 

 

ঢাকা: ইডেন ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। তবে বিশ্বকাপের ইতিহাস ছিল ভারতের পক্ষে। শেষ অবধি ইডেন গার্ডেনের মহারণে জয়ী ভারতই। টি২০ বিশ্বকাপের টানটান উত্তেজনার ম্যাচে শনিবার রাতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে পরাজিত করেছে ধোনি শিবির। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের লড়াইয়ে কক্ষপথে ফিরল প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে বাজেভাবে হারা ভারত।

কলকাতার ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামের পরিসংখ্যান উজ্জীবিত করেছিল পাকিস্তানকে। কারণ এই মাঠে কোনদিনই ভারতের কাছে হারেনি তারা। চার ওয়ানডের সবকটিতেই জিতেছিল পাক শিবির। অন্যদিকে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারের রেকর্ড ছিল না ভারতেরও। প্রথমবারের মতো ইডেন গার্ডেনে টি২০ ক্রিকেটের মোকাবেলায় শেষ অবধি শেষ হাসি ধোনি শিবিরেরই।

আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ১৮ ওভারে ১১৮ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। জবাবে বিরাট কোহলির রেকর্ড ফিফটির উপর ভর করে ১৩ বল হাতে রেখেই জয়ের লক্ষ্যে পৌছে যায় ভারত (১৫.৫ ওভার)। ৩৭ বলে ৫৫ রান করে অপরাজিত থাকা বিরাট কোহলি অনুমিতভাবেই জিতে নিয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিক ভারতের। দলীয় ১৪ রানের মাথায় তারা হারায় ওপেনার রোহিত শর্মাকে। ১১ বলে ১০ রান করা রোহিত আমিরের বলে ক্যাচ তুলে দেন শোয়েব মালিকের হাতে।

এরপর পঞ্চম ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে ভারতকে কোণঠাসা করে রাখেন পাক পেসার মোহাম্মদ সামি। ৪.৩ ওভারে শিখর ধাওয়ানকে বোল্ড করেন তিনি। ১৬ বলে মাত্র ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন ধাওয়ান। পরের বলেই সুরেশ রায়নার স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন সামি। প্রথম বলেই বিদায় রায়না (০)। ভারতের দলীয় রান তখন ৪.৪ ওভারে ২৩ রান।

শুরুর চাপ ভালোমতোই সামাল দেন চতুর্থ উইকেট জুটিতে বিরাট কোহলি ও যুবরাজ সিং।  এই জুটি থেকে আসে গুরুত্বপূর্ণ ৬১ রান। তবে যুবরাজকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন ওয়াহাব রিয়াজ। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ওয়াহাবের বলে বাউন্ডারি লাইনে সামির হাত ধরা পড়েন যুবরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে করে যান ২৩ বলে ২৪ রান (একটি করে ছয় ও চার)।

তবে জয়ের জন্য আর কোন উইকেট হারাতে হয়নি ভারতকে। ধোনিকে সঙ্গে করে বাকি কাজটুকু সেরেছেন কোহলি। ১৫.৫ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌছায় ভারত। ৩৭ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি। ঝলমলে এই ইনিংসে কোহলি হাঁকান সাতটি চার ও একটি ছক্কা। দারুণ এই ফিফটিতে টি২০ ক্রিকেটে নতুন রেকর্ডও গড়েছেন কোহলি। টি২০ ক্রিকেটে গেইল, ম্যাককালাম ও দিলশানকে ছাড়িয়ে সর্বাধিক ফিফটির মালিক এখন তিনি। কোহলির ফিফটির সংখ্যা ১৪, বাকি তিনজনের ১৩টি করে।

অন্যদিকে নয় বলে ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। পাকিস্তানের হয়ে মোহাম্মদ সামি দুটি, মোহাম্মদ আমির ও ওয়াহাব রিয়াজ নেন একটি করে উইকেট।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের ইনিংসের গোড়া পত্তন করেন শারজিল খান ও আহমেদ শেহজাদ। দেখেশুনেই ব্যাট করতে থাকেন তারা। এই জুটি থেকে আসে ৩৮ রান। শেষ পর্যন্ত এই জুটি বিচ্ছিন্ন করেন সুরেশ রায়না। ৭.৪ ওভারে রায়নার বলে মিড অনে বল তুলে মেরেছিলেন শারজিল খান। অসাধারণ দক্ষতায় বল তালুবন্দী করেন হার্দিক পান্ডে। ২৪ বলে ১৭ রান করেন শারাজিল।

এরপর আরেক ওপেনার আহমেদ শেহজাদকে সাজঘরে পাঠান ভারতীয় পেসার বুমরাহ। ৯.২ ওভারে বুমরাহর বলে জাদেজার হাতে ক্যাচ দেন শেহজাদ। তবে তিন চারে ২৮ বলে ২৪ করে সাজঘরে ফেরেন শেহজাদ।

আগের ম্যাচে বুম-বুম ব্যাটিং করা শহীদ আফ্রিদি এদিন ওয়ানডাউনে মাঠে নেমেছিলেন। তবে ঝলক দেখাতে পারেনি। ১৪ বলে মাত্র ৮ রানে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন।

উমর আকমল ও শোয়েব মালিক রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে বেশি দূর এগোতে পারেননি। জাদেজার বলে ধোনির তালুবন্দী হওয়ার আগে ১৬ বলে এক ছক্কা ও এক চারে মাত্র ২২ রান করেন আকমল। আর নেহরার বলে অশ্বিনের হাতে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে ১৬ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ২৬ রান করেন মালিক। সরফরাজ আহমেদ ৮ রান ও মোহাম্মদ হাফিজ ৫ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন।

ভারতের বোলার নেহরা, জাদেজা, বুমরাহ, রায়না ও পান্ডে একটি করে উইকেট পান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *