সম্পাদকীয়: মন চুরির আন্তর্জাতিক উৎসব

Slider অর্থ ও বাণিজ্য গ্রাম বাংলা তথ্যপ্রযুক্তি বাংলার মুখোমুখি বিনোদন ও মিডিয়া রাজনীতি সম্পাদকীয় সারাদেশ সারাবিশ্ব

repon-ansary-photo-1

 

ড. এ কে এম রিপন আনসারী

এডিটর ইন চীফ

গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: চুরি একটি অপরাধ হলেও কালের বিবর্তনে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে উৎসবে পরিণত হয়েছে। প্রথমে মন চুরি। তারপর পরিবার সমাজ  জনগন ও রাষ্ট্রের আমানত চুরি। জাতীয় পর্যায় থেকে এই চুরি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ছড়িয়ে পড়েছে। যা এখন আন্তর্জাতিক উৎসব বলা যেতে পারে।

পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, আমরা এনালগ থেকে ডিজিটাল হয়েছি। আগে একটু দেখা থেকে ছোট খাট চিঠি চালাচালি করে চলত প্রেম। মানে মন চুরি। মন চুরি হতে হতে এক সময় বিয়ে। আর এখন ডিজিটাল হওয়ায় হ্যালো বলারও তেমন প্রয়োজন হচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে নিয়মিত চলছে  মন চুরি। মনের সন্ধানে ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইডে  প্রেমিক প্রেমিকার অনুসন্ধান চলছে।  আস্তে আস্তে এক সময় বনে যায় সম্পর্কও। সেই থেকে নৈতিক অনৈতিক সব ধরণের সম্পর্ক তৈরী হয়। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাতির উন্নয়নের পাশাপাশি মন চুরি ব্যবসারও উন্নতি হতে চলছে। ফলে এখন ধর্ষন অপহরণ খুনা খুনি দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মন চুরির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে মাঠে নেমেছেন আমাদের অনেক রাজনৈতিক দলের নেতারাও। জনগনের অধিকার দেয়ার কথা বলে তারাও মন চুরি করছেন। জনগনের অধিকার আদায়ের কথা বলে তারা জনগনের সবচেয়ে বড় অধিকার ভোটাধিকার কৌসলে চুরি করে নিচ্ছেন। বর্তমান পরিস্থিতি নিশ্চিত বলে দিচ্ছে যে, কিছু সময় পর আর গনতান্ত্রিক ভোট হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। এমনিতেই ভোট হয়ে যাবে। মানুষের আর কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার প্রয়োজন হবে না।

সম্প্রতি বাংলাদেশে এটিএম কার্ড জালিয়তির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা চুরি হয়েছে। সংবাদ মাধ্যম বলছে, চোরেরা স্কিমিং ডিভাইস দিয়ে গ্রাহকের টাকা চুরি করেছেন। এই চক্রের সাথে বাংলাদেশের লোকও যেমন আছে তেমনি বাইরের দেশের লোক সক্রিয় আছে। যারা আটক হয়েছেন তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চোরাই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য।

চলমান ঘটনা আলোচনা করলে সহজেই বলতে হয়, পাসওয়ার্ড চুরি করে বাংলাদেশের কেন্দ্রিয় ব্যাংকের (বাংলাদেশ ব্যাংক) ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে ওই টাকা চুরি হয়। আমাদের টাকা গুলো ফিলিপাইন ও শ্রীলংকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে চলে গেছে।

সর্বশেষ সংবাদে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে জাতীয় ও আন্তির্জাতিক চোরাই চক্র ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে প্রকৃত সত্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। তবে টাকা চুরি হয়ে গেছে এটা পরিস্কার।

এই অবস্থা চলতে থাকলে চোরের দল ভারী হয়ে যাবে। মন চুরি, টাকা চুরি, অধিকার চুরি, সম্পদ চুরি সহ নানা ধরণের অভিনব চুরি দেশে বিদেশে বিস্তার লাভ করছে না বলে বলা যায় করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চলমান চুরির উৎসবে আমরাও অংশ গ্রহন করছি এতে আর সন্দেহ রইল না। অচিরেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চুরির উৎসব থেকে আমাদের রক্ষা না করলে আম ও ছালা দুটোই যে যাবে না তার গ্যারাণ্টি কি আছে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *