জাবিতে গণরুমে ছাত্রলীগের তালা, অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী বিপাকে

Slider জাতীয়

 

 

chatrolig_418937806

 

 

 

 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মওলানা ভাসানী হলের পলিটিক্যাল ব্লকে উঠতে না চাওয়ায় প্রথম বর্ষের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর রুমে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগকর্মীরা। রুমে তালা দেয়ায় ডাইনিং কর্মচারীদের সঙ্গে ঘুমাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটলেও ছাত্রলীগের চাপের মুখে কেউ মুখ খোলেনি। পরবর্তীতে শনিবার রাত ৯টার দিকে (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি সাংবাদিকরা জানতে পারেন।

হল সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ-সভাপতি মনোনীত হলে তাকে শুভেচ্ছা জানান ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে তাকে নিয়ে আনন্দ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। এতে মওলানা ভাসানী হলের নবীন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম থাকায় তাদের উপর ক্ষিপ্ত হন শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদুর রহমান আকন্দ ও তার অনুসারীরা।

এ ঘটনায় ওই দিন রাত ১২ টার দিকে হলের অতিথি কক্ষে প্রথম বর্ষের (৪৪তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের ডেকে ৫ মিনিটের মধ্যে তৃতীয় তলায় পলিটিক্যাল ব্লকে উঠার নির্দেশ দেয় ছাত্রলীগকর্মী ও ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল্লামা ইকবাল (পরিবেশ বিজ্ঞান), মাহবুবুর রহমান নীল (দর্শন), আমির হোসেন (আইন ও বিচার), জাকির (পাবলিক হেল্থ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ), তুষার (পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ) ও ইমরান (প্রাণীবিদ্যা বিভাগ)।

কিন্তু চাপ প্রয়োগ সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা পলিটিক্যাল ব্লকে উঠতে না চাওয়ায় ছাত্রলীগ কর্মীরা গণরুম হিসেবে ব্যবহৃত ১১২, ১১৪ ও ১১৩ নং কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং রুমের যাবতীয় বিছানা, জামাকাপড় ও আসবাবপত্র বাইরে ফেলে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী  জানান, গণরুমে তালা দেয়ায় ডাইনিং কর্মচারীদের সাথে ঘুমাতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় না পড়েও ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছি। এমনকি এক কাপড়ে তিন দিন পার করছি কিন্তু ভয়ে কারো কাছে কিছু বলতে পারছি না।

এ সব অভিযোগের বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদুর রহমান আকন্দ  বলেন, আমি ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম। বিষয়টি পরে জানতে পারি। তবে ঘটনাটি সত্য নয়, সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে ফাঁসানোর জন্য অনেকে এমন মিথ্যা তথ্য দিতে পারে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি বলেন, মওলানা ভাসানী হলে ছাত্রলীগের হল কমিটি অনেক আগেই বিলুপ্ত করা হয়েছে। যদি কেউ ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি।

এ বিষয়ে মওলানা ভাসানী হলের হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সৈয়দ হাফিজুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে সাংবাদিকরা আমাকে জানিয়েছে। খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *