‘মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা গণমাধ্যমের উপর আঘাত নয়’—-জয়

Slider জাতীয় টপ নিউজ তথ্যপ্রযুক্তি রাজনীতি

2182_joy

 

 

সম্প্রতি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহের যেসব মামলা হয়েছে তা গণমাধ্যমের উপর আঘাত নয় বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। শুক্রবার সকালে জয় তার নিজের ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের ‘সুশীল সমাজ’ এর কিছু অংশ এবং কিছু সংবাদপত্রের সম্পাদক আমার মায়ের বিরুদ্ধে মাহফুজ আনাম কর্তৃক চালানো মিথ্যা সাজানো প্রচারণার স্বীকারোক্তির পর তার বিরুদ্ধে হওয়া  দেওয়ানি মানহানির মামলাগুলোর সমালোচনা করছেন। আমাদের সরকার তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করেনি। মামলাগুলো সবই দেওয়ানি প্রকৃতির, যা খেসারত এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবীতে দায়ের করা। তাই আমি জানতে চাই, যা কিছু ঘটেছে তাতে গণমাধ্যমকে দায়মুক্তি দেয়া যায় কিনা? মাহফুজ আনাম স্বীকার করেছেন কেবল একটিই নয়, এসব মিথ্যা কাহিনী ধারাবাহিকভাবে তিনি আমার মায়ের বিরুদ্ধে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা এবং একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চালিয়েছেন। তার কর্মকা-ের ফলে আমার মা তার এই বয়সে ১১ মাস জেলে কাটিয়েছেন। এত সবকিছুর পর তিনি বলেন, ‘ওহহো, আমার ভুল হয়েছে!’ এবং আমাদের সেসব ভুলে যেয়ে এগুতে হবে? আমার মা, আমার পরিবার এবং আমাদের দল আওয়ামী লীগের পক্ষে কোনই বিচার থাকবে না? সেখানে কোনই জবাবদিহিতা থাকা উচিৎ না? রাজনীতিকদের আইন মেনে চলতে হবে নয়তো জেলে যেতে হবে, পুলিশকে আইন মেনে চলতে হবে নতুবা জেলে যেতে হবে, কিন্তু মিথ্যা কাহিনী লেখার জন্য কোন আইন থাকবে না। দেওয়ানি আইনে রাজনীতিক এবং বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের একমাত্র আশ্রয় হচ্ছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া। অন্য কিছু যদি নাও হয়, শুধুমাত্র উকিল খরচ এবং আদালতে যাওয়ার সময় বিবেচনায় একজন সাংবাদিককে মিথ্যা ছাপানো এবং অন্যের সুনাম ক্ষুণেœর আগে ২য় বার ভাবানো উচিৎ। যদিও, এই গোত্রের লোকেরা এটুকু স্বল্পমাত্রার জবাবদিহিতাও চায় না। তার বদলে তারা একে গণমাধ্যমের উপর আঘাত আখ্যা দিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করতে চায়। এটা গণমাধ্যমের উপর আঘাত নয়। এটা ফৌজদারি মামলাও নয়। এটা হলো দেওয়ানি মামলা। আধুনিক আইনি ব্যবস্থাসম্পন্ন সবদেশেই এটা ঘটে। আপনি যদি কারও ক্ষতি করেন, সংক্ষুব্ধ পক্ষের আপনার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলা করার সবধরনের অধিকার রয়েছে। মাহফুজ আনাম যদি হয়রানি বোধ করেন, মিথ্যা অভিযোগে ১১ মাস জেলে কাটানোর অনুভূতি কেমন সম্ভবত তা তার জানা উচিৎ। এর আগে ডেইলি স্টারের ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি বেসরকারি টিভিতে এক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজ আনাম বলেন, ২০০৭-০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের দেওয়া বিভিন্ন দুর্নীতির খবর যাচাই না করেই তারা ছেপেছিলেন। তিনি বলেন, যাচাই না করে এ ধরণের খবর ছাপা তার সাংবাদিকতা জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল কাজ ছিল। মাহফুজ আনামের এ মন্তব্যের পরে তার গ্রেপ্তার চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় মামলা করতে শুরু করে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এদিকে মাহফুজ আনামের গ্রেপ্তার চেয়ে এসব মামলাকে গণমাধ্যমের ওপর আঘাত আখ্যায়িত করে সাংবাদিক, সম্পাদক ও বিশিষ্টজনেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *