ঢাকা : রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচলনা, তথ্য সংরক্ষণে অব্যস্থাপনাসহ ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষের (ডিপিডিসি) সার্বিক কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এসব বিষয়ে সাতদিনের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
বিদ্যুৎ ভবনে বৃহস্পতিবার ডিপিডিসি’র প্রশিক্ষণ সপ্তাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ এগুচ্ছে আপনাদেরকেও (ডিপিডিসি) আন্তর্জাতিকমানে পৌঁছাতে হবে।’
একটি উদাহরণ দিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘শ্যামপুরে ডিপিডিসির সাব স্টেশনে গিয়ে দেখি অপরিচ্ছন পরিবেশ। খাটের পাশে রান্না হচ্ছে। ময়লা আবর্জনায় ভরা। ভাবছি এ কোথায় এলাম। … আপনারা জানেন না কোন ট্রান্সফরমার ভালো, কোনটা খারাপ, কি আছে, কি নাই। …. আমি পুরান ঢাকার ছেলে, বাড়ি যাওয়ার পথে দেখি ট্রান্সফরমার চুয়ে চুয়ে তেল পড়ছে। এভাবে চলতে পারে না।’
‘ডিপিডিসির এমডিকে বলছি আগামী সাতদিনে মধ্যে আমি একটি কর্মরিকল্পনা আমার টেবিলে দেখতে চাই, আপনারা কি করতে চাইছেন। … লুঙ্গি পরা নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে চলবে না’, যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিপিডিসিকে গ্রাহকের কাছে যেতে হবে। নিজেকে জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। ভাণ্ডার (মালপত্র রাখার স্থান) ব্যবস্থাপনা আধুনিক করতে হবে, ডিজিটাল হতে হবে। পেপারলেস একটি সংস্থা হিসেবে গড়ে উঠেত হবে।’
আয়ের উপায়ও বাড়াতে হবে উল্লেখ করে হামিদ বলেন, ‘শুধু সরকারের কাছে চাইলে হবে না। বিদ্যুৎ বিক্রির লাভ দিয়ে চলতে চাইলে হবে না। অন্যান্য উপায় খুঁজতে হবে। অর্থ কোনো বিষয় না, তবে সেটা আয়ের পদ্ধতি জানতে হবে। পূঁজিবাজার থেকে অর্থ তুলতে হবে।’
‘বিদেশি পূঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের আগে নিজেদের আন্তর্জাতিকমানের কোম্পানিতে পরিণত করতে হবে। নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। তবে প্রথমে দেশের মধ্যে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে আর্থিক পরামর্শক নিয়োগ দিতে পারেন’, বলেন নসরুল হামিদ।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. নজরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেনসহ কোম্পানির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণ নেয়া সেরা প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে ক্রেস্ট ও সনদ বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী। এছাড়াও কর্মকর্তাদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে ডিপিডিসির কর্মকর্তারা সরকারি কর্মীদের জন্য ঘোষিত অষ্টম বেতন কাঠমো অনুসারে নিজেদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি জানান। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী তাদের কাছে জানতে চান, ‘আপনাদের বর্তমান সিস্টেমলস আরো ১ শতাংশ কমালে বছরে কতো লাভ হবে?’ কর্মকর্তারা জানান, ৫০ কোটি টাকা। তখন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সিস্টেমলস কমান, যা লাভ হবে তা দিয়েই আপনাদের দাবি মেটানো সম্ভব।’
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকরা তেলের দাম বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী দেখছেন। তিনি ভালো বলতে পারবেন।’