ঢাকা : অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর ডাক পেয়েছেন মর্যাদার দাবিতে আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। গত সাড়ে আট মাসে পাঁচবার চেষ্টা করেও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেলেও এবার প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাদের ডেকেছেন। আগামীকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় গণভবনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষদের ৩০ সদস্যেকে ডাকা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সদস্য ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে মোবাইলে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। রাতে হয়তো আমন্ত্রণপত্র তাদের হাতে পৌঁছে যাবে।
এ শিক্ষক নেতা বলেন, ‘গত আট মাসে আমরা পাঁচবার চিঠি দিয়ে দেখা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দেখা করতে পারিনি। আগামীকাল আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবো। আশা করছি একটা ভালো সমাধান পাবো।’
এর আগে রোববার বিকেলে বেতন কাঠামোর সুনির্দিষ্ট দু’টি বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইনের কাছে দেন ফেডারেশনের নেতারা।
ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সপ্তম বেতন কাঠামোতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-৩ এ উন্নীত হওয়াসহ যে সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসতেন তা বহাল রাখার জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এছাড়া গ্রেড-১ থেকে কিছু সংখ্যক শিক্ষককে সিনিয়র সচিবের পদমর্যাদা প্রদানের জন্যও প্রস্তাব করা হয়।’
গত ১১ জানুয়ারি সকাল থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শিক্ষকরা। ওইদিন বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু মর্যাদা প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন।
সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অষ্টম পে-স্কেলে শিক্ষকদের অবনমনের প্রতিকার ও মর্যাদা রক্ষার দাবিতে এ কর্মবিরতির পালন করা হচ্ছে। সান্ধ্যকালীন কোর্সগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কর্মবিরতি চলাকালীন পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কথা রয়েছে।
এই কর্মবিরতিতে যাওয়ার আগে আরো দুইদিন কর্মসূচি পালন করা হয়। ৩ জানুয়ারি একই দাবিতে শিক্ষকরা কালো ব্যাজ ধারণ করে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন। ৭ জানুয়ারি স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হয়। এরপর ১১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন শিক্ষকরা।
গত ২ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর এই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এরপর ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের মুজাফফর আহম্মেদ চৌধুরী মিলানায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করেন।