খালেদা জিয়া বিদেশ চলে গেলে দৃশ্যপট অন্যরকম হতে পারতো

Slider রাজনীতি

107153_khaleda

 

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সহায়ক শক্তি- সামরিক বাহিনী, এই দুইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে তাত্ত্বিক এবং নীতিগত তফাৎ যেমন ছিল না তেমনি সুদুরপ্রসারী কোন পরিকল্পনাও ছিল না। ড. ফখরুদ্দীন আহমেদ-এর পরিষদে দু’ একজন ছাড়া এ বিষয় নিয়ে কেউ আলোচনা করেছেন বলে মনে হয় না। বেশ কয়েকবার সামরিক গোয়েন্দা প্রধান এমনকি সেনাপ্রধানের সাথেও এ বিষয়ে আলোচনা করে সম্যক ধারণা পাইনি যে আসলে তারা কিভাবে কি সংস্কার করতে চাইছিলেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করে যা বুঝতে পেরেছিলাম তাতে মনে হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের, বিশেষ করে দলগুলোর অভ্যন্তর হতেই একধরনের সংস্কারের সহযোগিতার আশ্বাসেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একাংশ এবং সহায়ক শক্তি অতি উৎসাহী হয়ে উদ্দেশ্যেবিহীনভাবে এসব কাজে হাত দিয়েছিল।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন তার লেখা, ‘নির্বাচন কমিশনে পাঁচ বছর’ শীর্ষক বইয়ে এসব কথা লিখেছেন। পালক পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত বইয়ে তিনি আরও লিখেছেন, রাজনৈতিক দলের সংস্কার এবং সংস্কৃতির পরিবর্তনের হাওয়া থেকে আমরাও মুক্ত থাকতে পারিনি। যে কারণে তখনকার মূল্যায়নে আমরাও ভুল করেছিলাম আর সেটা ছিল বিএনপিকে সংলাপে আমন্ত্রণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি এবং তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়। ওই ঘটনায় স্বভাবতই বিএনপির নীতিনির্ধারকরা আমাদের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেনি।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গ্রেফতারের পর গুঞ্জণ হচ্ছিল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে। অনেকে সন্দেহ পোষণ করেছিলেন যে খালেদা জিয়া শেষ পর্যন্ত তার দুই পুত্রকে নিয়ে দেশের বাইরে চলে যাবেন। সে কারণেই হয়তো তাঁকে তখনও গ্রেফতার করা হয়নি।
অবশেষে সেপ্টেম্বর ৩, ২০০৭ সালে জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াাকে তাঁর সেনানিবাসের বাসা হতে দ্বিতীয় পুত্র আরাফাত রহমান কোকোসহ গ্রেফতার করে সিএমএম কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আদালত থেকে কোকোকে রিমান্ডে এবং বেগম জিয়াকে সংসদ ভবন চত্বরে বিশেষভাবে প্রতিষ্ঠিত জেল হাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের সময়ে পার্টির তরফ হতে তেমন কোন সোচ্চার প্রতিবাদ চোখে পড়েনি অথবা মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়নি। সম্ভবত বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে না পেরেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশ চলে গেলে দৃশ্যপট অন্যরকম হতে পারতো। আমর মনে হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার দেশে থাকার সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনার জন্য আশীর্বাদ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল। খালেদা জিয়া বিদেশ চলে গেলে হয়তো শেখ হাসিনার দেশে থাকা সম্ভব হতো না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *