১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে আ.লীগ-যুবলীগের শোডাউন

Slider রাজনীতি

 

 

2015_12_02_21_54_04_ZzPv5jCtzk7tF8XTZ4D8ExYfr1c2Cv_original

 

 

 

 

 

সিলেট : সিলেটের ওসমানীনগরে ১৪৪ ধারার অমান্য করেই শোডাউন করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা।

বুধবার বিকালে প্রশাসনের জারিকৃত স্থানে দু’পক্ষই পাল্টপাল্টি শোডাউন করেছে। এ সময় উপজেলারবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই দু’পক্ষ ঘরে ফিরে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ২১ নভেম্বের স্থানীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলনে যুবলীগের নেতাকর্মীদের অতর্কিত হামলায় জের ধরে সড়ক অবরোধসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি শোডাউন চালিয়ে আসছিল।

এর ধারাবাহিকতায় বুধবার বেলা ২টায় দু’টি পক্ষ একই স্থানে সমাবেশ আহ্বান করায় উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু ১৪৪ ধারার মাঝেও বিবদমান দু’পক্ষ ব্যাপক শোডাউন করে।

এর আগে উপজেলার গোয়ালাবাজার, তাজপুর ও কদমতলাসহ আশপাশ এলাকায় সবধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শওকত আলী।

বুধবার দুপুর ১টা থেকে জারি করা ১৪৪ ধারা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। এর আগেও আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল ও সংঘর্ষের জেরে গতমাসে দুবার ১৪৪ ধারা জারি হয়েছিল।

এদিকে, ১৪৪ ধারা জারির পর সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর দক্ষিণ সার্কেল) আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে তাজপুর ও গোয়ালাবাজার এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন হয়। তবে ১৪৪ ধারা জারির পর প্রশাসন ঢিলেঢালা অবস্থানে থাকায় দু’পক্ষই ১৪৪ ধারা জারিকৃত এলাকায় পৃথক পৃথক সমাবেশসহ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তাজপুর গোয়ালাবাজার অংশে উভয় পক্ষের সমর্থকদের দফায় দফায় শোডাউন দিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুর থেকে থানা সংলগ্ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুর রহমান সোহেলের বাসায় সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কবির উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দাল মিয়ার উপস্থিতিতে তাদের সমর্থকরা সমাবেশ করতে দেখা যায়।

অন্যদিকে, বিকেল আড়াইটার দিকে নাজলু চৌধুরীর লোকজনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমানের নেতৃত্বে তাজপুর কদমতলা এলাকায় সমাবেশ করতে দেখা যায়।

দু’টি পক্ষের পাল্টাপাল্টি শোডাউনে ঠেকাতে ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উপজেলায় তাজপুর ও গোয়ালা বাজার এলাকায় পুলিশি টহল ছিল।

এ ব্যাপারে ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মুরসালিন বাংলামেইলকে জানান, তাজপুর ও গোয়ালাবাজারসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।

তবে ১৪৪ ধারার মাঝেও দু’পক্ষের পৃথক পৃথক সমাবেশ ও মহড়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সমাবেশ নয় একটি পক্ষ তার নিজস্ব বাসার ভিতরে ভুঁড়ি ভোজের আয়োজন করায় তাদের সমর্থকরা সেখানে গিয়ে খেয়ে এসেছেন। এছাড়া অপর পক্ষ ১৪৪ ধারা জারিকৃত এলাকা ছাড়া অন্য স্থানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে।’

প্রসঙ্গত, গত ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার গোয়ালাবাজারে শ্রমিকলীগের সম্মেলন চলাকালীন সময়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের পরিচয় করিয়ে না দেয়ায় সম্মেলনের মধ্যে আলতাফুর রহমান সুহেল ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এতে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক চুরিকাঘাতসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় ২২ নভেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলুর ছোট ভাই নাবেদুর রহমান চৌধুরী বাদি হয়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলাতাফুর রহমান সোহেলসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদি হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজলু চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় পাল্টা মামলা দায়ের করেন।

সংঘর্ষ ও মামলা দায়েরের পর থেকে গোটা উপজেলায় আলোচনা সমালোচনাসহ উভয় পক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করেছিল।

এমতাবস্থায় বুধবার উভয় পক্ষে স্থানী যুবলীগ বিজয় র‌্যালির আয়োজন করে। অপরদিকে আওয়ামী লীগে শ্রমিকলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সমাবেশের ডাক দিয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *