কবর প্রস্তুত, সাকার মরদেহের অপেক্ষা

Slider রাজনীতি

 

sk

 

 

 

 

রাউজানের মধ্য গহিরা থেকে: মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর দাফনের জন্য রাউজান পৌর এলাকার গহিরায় তার পারিবারিক নতুন কবরস্থানে কবর খোঁড়া শেষ; এখন তার মরদেহের অপেক্ষায় আছেন স্বজনরা।

রোববার (২২ নভেম্বর) ভোর ছয়টার দিকে কবর খননের কাজ শেষ হয়।

এর আগে শনিবার (২১ নভেম্বর) দিনগত রাত ৩ টা ১০মিনিট ওই কবরস্থানে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাকার বাড়ির কেয়ারটেকার মো. কামালের নেতৃত্বে কবর খননের কাজ শুরু করেন আটজনের একটি দল।

সাকার বংশধর রাউজান কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মো. জালাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, সদ্য প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছোটভাই সাইফুদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবরের পাশেই তার কবর খনন করা হয়েছে।

‘এখন তার (সাকা চৌধুরী) মরদেহ পৌঁছার অপেক্ষায় আছেন আমাদের বংশের মুরুব্বিরা,’ বলেন তিনি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মুস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাত ২টা ৫৩ মিনিটে মরদেহ নিয়ে ঢাকা থেকে রওনা দেওয়া হয়েছে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরাও পথে হয়েছেন।’

মরদেহবাহী গাড়িটি এই মুহূর্তে ফেনীর পথে চৌদ্দগ্রাম অতিক্রম করছে বলে জানিয়েছেন  সীতাকুণ্ড সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সালাউদ্দিন সিকদার।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আশা করছি সকাল ৯টার মধ্যেই মরদেহ রাউজানে পৌঁছাবে।

এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১২টা ৫৫ মিনিটে সাকা চৌধুরীর দণ্ড কার্যকর করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর কারাগার থেকে বেরিয়ে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হয়ে গাড়ি বহরটি মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে যাত্রাবাড়ী, কাঁচপুর ব্রিজ হয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও, কুমিল্লার চান্দিনা, বিশ্বরোড, চৌদ্দগ্রাম, ফেনীর পর মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রামে যাবে। এরপর যাবে রাউজানের গহিরায়।

এদিকে যে কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে রাউজ‍ানে র‌্যাব, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। টহল দিচ্ছে বিজিবিও।

সাকার মরদেহ রাউজানের প্রবেশ ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। একই ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন,  ‘সাকার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় আমরা খুবই সন্তুষ্ট। আমরা তার লাশ রাউজানে আনতে দেবো না। রাউজান কলঙ্কমুক্ত হয়েছে, এখানে তার লাশ দাফন করে রাউজানকে কলঙ্ক করতে দেবো না।’

তিনি জানান, সাকার মরদেহ যাতে রাউজানে আসতে করতে না পারে সেজন্য প্রবেশ পথ হালদা নদীর সর্তারঘাটে অবস্থান নেবেন তারা।

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সাকা চৌধুরীকে ফাঁসির দণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৯ অক্টোবর আপিল করেন সাকা। তবে সর্বোচ্চ সাজার প্রেক্ষিতে আপিল করেননি রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১৮ নভেম্বর সেই আবেদন খারিজ করে ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

শনিবার রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান সাকা। কিন্তু ক্ষমা পাননি তিনি। যদিও কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করে ছেলে হুম্মাম বলেছেন, তার বাবা প্রাণভিক্ষা চাননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *