একই ফ্লাইটে মদীনায় পৌঁছলেন জিয়া পরিবারের সদস্যরা

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ সারাবিশ্ব

56062_1-2

মদীনা করেসপনডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
সৌদ আরব:  পবিত্র ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মদিনা এসে পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডন থেকে এসে মায়ের সাথে দীর্ঘ দিন পরে এখানে মিলিত হয়েছেন বড় ছেলে তারেক রহমান। মদিনা বিমানবন্দরে সৌদি বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফাইটে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। একই ফাইটে দুবাই থেকে সপরিবারে মায়ের সাথী হন তারেক রহমান। বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় মদিনায় মুহাম্মদ বিন আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন তারা।
এ সময় সৌদি আরব, মদিনা, জেদ্দা, মক্কা বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ও বিপুলসংখ্যক সাধারণ প্রবাসী বাংলাদেশী বেগম জিয়া ও তারেক রহমানকে স্বাগত জানান।
২০০৮ সালে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে তারেক রহমান লন্ডন যাওয়ার পর খালেদা জিয়ার সাথে এটি তার দ্বিতীয় সাাৎ। এর আগে ২০১১ সালে খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরের সময় মা ও ছেলের সাাৎ হয়।
এ দিকে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার বছর পর দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে খালেদা জিয়ার সাথে বড় ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাাৎ ঘটে। এ সময় সেখানে বেশ আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
খালেদা জিয়া ঢাকা থেকে দুবাইয়ের স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ৫৫ মিনিটে) পৌঁছান। সেখানে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে লন্ডন থেকে আগেই পৌঁছে মায়ের জন্য অপোয় ছিলেন তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা: জোবায়দা রহমান ও তারেকের মেয়ে জায়মা রহমান। তারা দুবাইতে ৮ ঘণ্টার যাত্রাবিরতিতে মায়ের অপোয় ছিলেন। খালেদা জিয়া দুবাইতে দুই ঘণ্টা যাত্রাবিরতি শেষে ছেলে তারেকসহ অন্যদের নিয়ে স্থানীয় সময় রাত ১টা ৫৫ মিনিটে সরাসরি মদিনা মুনাওয়ারার উদ্দেশে রওনা করেন।
তারেক রহমান লন্ডন থেকে দুবাই পৌঁছলে তাকে ভিআইপি লাউঞ্জে অভ্যর্থনা জানান, বিএনপির দুবাই শাখা সভাপতি মো: জাকির হোসেন ও যুবদলেরসহ আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও কাতার বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল হক সাজুসহ উপসাগরীয় বিএনপি নেতারা। তারেক রহমান এ সব নেতাদের সাথে দুবাই বিমানবন্দরেই স্থানীয় সময় ৬টা ২০ মিনিটে ইফতার করেন। দলীয় সূত্রগুলো আরো জানায় দীর্ঘ দিন পর মায়ের সাথে দেখা হবে বিএনপির অন্যতম নীতিনির্ধারক সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেখানে পরিবারিক সাক্ষাৎ ছাড়াও আন্দোলন কর্মসূচি ও কৌশল নিয়ে তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে।
রবি ও সোমবার মদিনায় অবস্থান করে রাসূল সা:-এর রওজা জিয়ারত করে মঙ্গলবার বেগম জিয়া ও তারেক রহমান মক্কায় কাবা শরিফে পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন। এর পর শবেকদরের রজনীতে ইবাদত বন্দেগি শেষে ঈদুল ফিতরের আগের দিন বেগম জিয়া দেশে ফিরবেন ও তারেক জিয়া লন্ডনে ফিরে যাবেন।
খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গীদের মধ্যে রয়েছেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা: জোবায়দা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান, ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারের স্ত্রী-ছেলে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকরামুল হক, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ব্যক্তিগত আলোকচিত্রী নুরউদ্দিন আহমেদ নুরু, বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক শরীফ শাহ কামাল তাজ প্রমুখ।
তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, সৌদি আরব বিএনপি নেতা ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক আবদুর রহমান, পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম নান্নু, তাঁতি দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, য্বুদলের সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক আব্দুল জলিল, জেদ্দা মহানগর বিএনপির সভাপতি কেফায়েতউল্লাহ চৌধুরী ও এম আজাদ চয়ন, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান তপন, যুবদলের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন, এক-এগারোর খালেদা জিয়া-তারেক রহমান মুক্তি পরিষদের আহ্বায়ক প্রিন্স আল লিনটন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা এরশাদ আহমেদ, মদিনা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুজ্জামান, আলতাফ হোসেন, ফারুক মমতাজ, শ্রমিক দল নেতা আব্দুল মান্নান, ভুট্টু, মাসুদ আহমেদ, জাসাস নেতা আমিনুল ইসলাম, তাঁতি দলের নেতা মো: রিপন, বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান, মোস্তাক আহমেদ, আকতার হোসেন, টিপুসহ কয়েক শ’ নেতাকর্মী।
তারেক রহমান দারুল ঈমান হোটেলে পৌঁছার পর মসজিদে নববীতে গিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করেন।
জেদ্দা বিমনাবন্দরে বাংলাদেশ থেকে আসা সাংবাদিকদের স্বাগত জানান সৌদি আরব সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন ও ইটিভির জেদ্দা প্রতিনিধি জুনায়েদ আলম।
এ দিকে সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সভাপতি আহমেদ আলী মুকিবকে রোববার প্রথম প্রহরে (রাত ১টার দিকে) দারুল ঈমান হোটেলের সামনে থেকে সৌদি গোয়েন্দা সংস্থা আটক করে। তাকে কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে কি না এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য জানা যায়নি। তবে তাকে মুক্ত করতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সৌদি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছেন। বিমানবন্দরে নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে গেলে তারেক রহমান জানতে চান, মুকিব কোথায়? এর পর নেতাদের সাথে করমর্দন শেষে তিনি হোটেলে চলে যান।
খালেদা জিয়া-তারেক রহমান একই সাথে ওমরাহ করতে আসায় সৌদি বিএনপিতে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। মদিনাতে এই মুহূর্তে সহস্রাধিক নেতাকর্মী অবস্থান করছেন। গতকাল মসজিদে নববীতে তারেক রহমানের সাথে ইফতার করেছেন সৌদি বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। ঢাকা থেকেও দলের অনেক সিনিয়র নেতা ওমরাহ করতে সৌদি এসেছেন।
সৌদি বিএনপির সিনিয়র নেতা আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া-তারেক রহমান একই সাথে ওমরাহ করতে আসায় সৌদি বিএনপির নেতাকর্মীরা বেশ উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। আগামী দিনে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সব কাজ করে যেতে চাই। তিনি সৌদি পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সভাপতি আহমেদ আলী মুকিবের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে মুক্তি দাবি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *