অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ভূমিহীন ও প্রান্তিক কৃষকদের ভূমি বন্দোবস্ত দেয়ার নামে স্থানীয় প্রশাসন উদাসীনতা দেখিয়ে আসছে। তাদের নামে বরাদ্দকৃত কৃষি খাসজমি গত ৬ বছরেও বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। সরকারের বন্দোবস্ত দেয়া জায়গা এখনও প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের দখলে রয়েছে। দখলকৃত ভূমি উদ্ধার প্রচেষ্টায় প্রশাসনের রহস্যজনক ভূমিকা তাদের মধ্যে এনে দিয়েছে হতাশা।
উপজেলা ভূমি অফিস ও সংশ্লি¬ষ্ট ভূক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ভুমিহীন ও প্রান্তিক কৃষকের জন্য ওই ইউনিয়নের জেএল- ২০, আহুতি বাটরা মৌজায় সরকারের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত এসএ ১২৫৭ নং দাগে ১০ শতাংশ করে ২০ জন ভুমিহীনকে ২ একর জমি ২০০৯ সালের ১৩ জুলাই বন্দোবস্ত দেয়া হয়। ভূমিহীনরা এক টুকরা চাষের জমির বরাদ্দ পেয়ে সুখের স্বপ্ন দেখলেও গত ৬ বছরে তাদের সে স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই রয়ে গেল। প্রশাসনসূত্রে জানা গেছে, বন্দোবস্ত দেয়ার পর ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরেজমিনে ভূমিহীনদের দখল দেয়ার জন্য গেলে মাগুরা গ্রামের জনৈক বাবুল সন্যামত গংরা ওই জমি তার দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে ঘটনাস্থলে বসেই ফোনে কথা বলেন। এসময় ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা ভূমিহীনদের অনুকূলে জমি দখলের জন্য পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলেও সহকারী কমিশনার (ভূমি)-র দায়িত্বে থাকা তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর বিশ্বাস অজ্ঞাতকারণে পুলিশ না পাঠিয়ে বরং ফোনে ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের ফিরে আসতে বলেন। কর্মকর্তারা ভূমিহীনদের জমি তাদের দখল বুঝিয়ে না দিয়েই ফিরে আসেন। ওই সময় উল্লেখিত জমিতে সরকার ছাড়া অন্য কোন মালিকের উপস্থিতি না থাকলেও পরবর্তীতে মাগুরা গ্রামের আইউব আলী মিয়ার ছেলে বাবুল সন্যামত ভূমিহীনদের জমি তার মালিকানা দাবি করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে বরিশাল দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ১২৫৭ ও ১২৬১ দাগের বিপরীতে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করে। যার নং- ২৮/০৯। ওই মামলায় বিজ্ঞ আদালত সরকারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করলে সরকারের পক্ষে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)-র দায়িত্বে থাকা তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর বিশ্বাস ২০১০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জমিতে নিষেধাজ্ঞা জারি না করার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেটেলমেন্ট অফিসের বর্তমান মাঠজরীপেও ওই জায়গা সরকারের অনুকূলেই রয়েছে। সরকারের পক্ষে বরিশাল জেলা প্রশাসকের অনুকূলে ১নং খতিয়ানে এসএ ১২৫৭ দাগে মাঠ জরীপে হাল দাগ হয়েছে ২১৭৪ নং। জমির পরিমাণ ২ একর ২ শতাংশ। মামলা দায়েরের পর ৬ বছর অতিবাহিত হলেও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবির গা-ছাড়া ভাবের কারণে ওই মামলা আর বেশি দূর আগায়নি। সরকারের আন্তরিকতার অভাবে তা কবে আলোর মুখ দেখবে সে বিষয়ে কেউ বলতে পারছেনা। এদিকে জমি বন্দোবস্ত দেয়ার পরেও ভূমিহীনরা তাদের বরাদ্দকৃত ভূমি বুঝে না পাওয়ায় সরকারের স্থানীয় প্রশাসনকেই দায়ী করছেন। তাদের আশঙ্কা- শেষ পর্যন্ত তারা বরাদ্দকৃত জমি পাবে তো? এব্যাপারে উপজেলা ভূমি অফিস সহকারী ফারজানা বেগম বন্দোবস্ত ভূমি নিয়ে মামলার কোন তথ্য দিতে পারেনি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি)-র অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবী চন্দ সাংবাদিকদের জানান, এঘটনা আমার ভাল জানা নেই। প্রকৃত ঘটনা জেনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আগৈলঝাড়ায় সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল
অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছে এক প্রভাবশালী দখলবাজ। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশের ঘটনাস্থল পরিদর্শন।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রতœপুর ইউনিয়নের তালেরবাজারের সংখ্যালঘু ব্যবসায়ী নাঘার গ্রামের নারায়ণ বাড়ৈর ছেলে মন্মথ বাড়ৈর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পার্শ্ববর্তী বরিয়ালী গ্রামের আজিজ সন্যামতের ছেলে জুয়েলের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল রোববার রাতের আঁধারে দখল করে। এসময় তারা প্রতিষ্ঠানের পুরাতন অবকাঠামো ভেঙে নতুন ঘর তৈরী করে। এঘটনায় মন্মথ বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে এএসআই নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে দখলবাজের কাজ বন্ধ করে দেয়।