আল-শিফা হাসপাতালে ইসরাইলের নির্মম হত্যাযজ্ঞ : ফিলিস্তিনি বালকের বর্ণনা

Slider সারাবিশ্ব

গাজা উপত্যকার আল-শিফা হাসপাতালে ইসরাইলের নির্মম হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দিয়েছেন একটি ফিলিস্তিনি বালক। সে কোনোমতে সেখান থেকে বের হতে পেরেছে। বালকটি হাসপাতালের ভেতরে তার বাবাসহ একদল লোককে যেভাবে ইসরাইলিরা হত্যা করেছে, তার করুণ বর্ণনা দিয়েছেন।

ফারুক মোহাম্মদ হামদ আল জাজিরাকে বলেন, তারা ছিলেন আটজন। তাদেরকে গাজার মধ্যস্থলে অবস্থিত আল-শিফা হাসপাতালে পোশাক খুলে ফেলা হয়। তারপর তাদেরকে হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে ঘোরানো হয়। সবশেষে তাদেরকে হাসপাতালের টপ ফ্লোরে নিয়ে যাওয়া হয়।

বালকটি জানান, ‌”সেখানে তাদেরকে প্রায় তিন ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়। তারপর তারা বলে, ‌’তোমরা নিরাপদ, দক্ষিণে যেতে পারো।'”

তিনি বলেন, ‘আমরা দাঁড়ালাম। সাথে সাথে তারা গুলিবর্ষণ করল। আমরা আবার ফ্লোরে শুয়ে পড়লাম। তারপর স্নাইপাররা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করে মজা পেতে থাকল।’

তিনি বলেন, মারা যাওয়ার আগে আমার বাবা আমাকে যতটা সম্ভব দৌড়াতে বললেন, তিনিও তখন দৌড়াচ্ছিলেন।

বালকটি বলেন, আমি দৌড় শুরু করেছিলাম। কিন্তু তার আগে চেয়ে দেখলাম, বাবার নিথর লাশ পড়ে আছে।

ত্রাণের জন্যে অপেক্ষারতদের ওপর হামলায় ১৯ জন নিহতের খবর অস্বীকার ইসরাইলের
গাজায় ত্রাণের জন্যে অপেক্ষারতদের ওপর হামলায় ১৯ জন নিহতের খবর অস্বীকার করেছে ইসরাইল।
এর আগে গাজায় হামাস পরিচালিত সরকার শনিবার বলেছে, ত্রাণকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি হামলায় ১৯ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ২৩ জন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ত্রাণবাহী ট্রাকের জন্যে অপেক্ষা করার সময়ে ইসরাইলি দখলদার সেনা সদস্যদের ট্যাংক থেকে হামলা চালানো হয়।

তবে ইসরাইল জড়ো হওয়া লোকজনের ওপর এ ধরনের হামলার খবর অস্বীকার করেছে।
ইসরাইলের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ত্রাণ কনভয় লক্ষ্য করে ইসরাইলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা ঠিক নয়।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে ত্রাণ কনভয়ের ওপর কোনো বিমান হামলা চালানো হয়নি। কিংবা ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি হামলা চালানোরও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে এএফপি টিভি ফুটেজে জনাকীর্ণ আল শিফা হাসপাতালে রক্তাক্ত ফিলিস্তিনিদের নিয়ে আসতে দেখা গেছে।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ব্যাপক হামলা চালানা হয়েছে। হতাহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

এদিকে গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ এবং সেখানকার বাসিন্দাদের ভয়ঙ্কর ক্ষুধা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। জাতিসঙ্ঘ সতর্ক করে বলেছে, জরুরি পদক্ষেপ না নিলে সেখানে মে মাস নাগাদ দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।
অন্যদিকে ত্রাণ সংস্থাগুলো গাজায় প্রবেশে ব্যাপক বাধার কথা জানিয়ে বলেছে, গাজায় ত্রাণ বিতরণ দিন দিনই ভয়ঙ্কর ও মাঝে মাঝে প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে।
সূত্র : আল জাজিরা, এএফপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *