কাপাসিয়া মাটি বেচাকেনার রমরমা ব্যবসা

Slider গ্রাম বাংলা


ঘন কুয়াশায় রাতের আঁধারে গাজীপুর কাপাসিয়া উপজেলার আমরাইদ ইয়াকুব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুর পাড়ের মাটি ও গাছ কেটে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল।এ ঘটনায় ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শহিদুল হক জানান, গত ২৪ জানুয়ারি ভোররাতে আমরাইদ গ্রামের হান্নান সরকারের ছেলে রিপন সরকার, আনোয়ার হোসেন সরকারের ছেলে মাসুদ সরকার, মাহবুব সরকারের ছেলে সুজা সরকার, আক্কাছের ছেলে মোস্তফা বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে পুকুর পাড়ের ১০ ফুট গভীর ও ৪০ ফুট প্রস্থ করে এক্সাভেটর দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করে দেয়।একই সাথে ১৫০টি আকাশি গাছ ও ১৮০টি বাঁশ কেটে নেয়।এতে বিদ্যালয়ের ১০ লক্ষাধীক টাকার ক্ষতি হয়।

বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জাহিদ হাসান বলেন, বিদ্যালয়ের পুকুর পাড় থেকে মাটি ও গাছ গাছালি কেটে নেওয়ার ঘটনায় ইএনও’র কাছে অভিযোগ দিয়েছি।তাছাড়া আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাটি কেটে নেওয়ার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছি।গত চল্লিশ বছর আগেই থেকে এই জায়গাটি বিদ্যালয়ে সম্পত্তি।১৯৮০ সালে পুকুর নির্মাণ করেছিলো বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, উপজেলার গিয়াসপুর এলাকার সেলিম মেম্বার এসব মাটি খরিদ করে কেটে নিয়েছে বলে জানা যায়।পরে সেলিম মেম্বার নিজেই আমাকে বলেছে, সে অভিযুক্তদের কাছ থেকে মাটি খরিদ করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কৃষকরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাপাসিয়ার লালচে রংয়ের এঁটেল মাটি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।তিন ফসলি কৃষিজমিতে খননযন্ত্র (ভেকু) বসিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। অন্যের ফসলি জমির ওপর দিয়ে ট্রাক চলাচলের জন্য বানানো হয়েছে রাস্তা। এর ফলে কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন হয়ে নালা জমিতে পরিণত হচ্ছে।নির্বিচারে যেভাবে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে, তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ফসলি জমি আশঙ্কাজনক হারে কমে যাবে। এতে কমে ফসল উৎপাদন। অবৈধভাবে মাটি কাটায় ঝুঁকিতে পড়ছে ব্রিজ, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি।

লোহাদী গ্রামের মোস্তফা মিয়া বলেন, আমার বাড়ীর পাশের জমির মালিক মাটি বিক্রি করেছেন। এই মাটি নেওয়ার জন্য আমাদের গ্রামের রাস্তা ব্যবহার করেছে ভেকু ও ডাম্প ট্রাক। মাটি ব্যবসায়ীরা আমাদের বলেন, মাটি নিলে রাস্তা হবে।এতে চলাচলে সুবিধা হবে। এসব বলে রাস্তার পাশে কিছু গাছ কেটেছে মাটি ব্যবসায়ীরা।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি ইকবাল সরকার জানান, আমি আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি।

মাটি ক্রেতা হাজী তাজ উদ্দীন মাস্টারের ছেলে সেলিম মিয়া বলেন, আমি কাপাসিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মাটি ক্রয় করে অন্যত্র বিক্রি করি। এই মাটি বিক্রেতারা অন্যায়ভাবে সরকারি স্কুলের মাটি বিক্রি করেছে তা আমার জানা ছিলোনা। তিনি বলেন, মাটি এখনো আমার জিম্মায় রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, যে কোনো জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে অনুমোদন লাগে। এছাড়া ঐ ছোট সড়ক দিয়ে ডাম্প ট্রাক চলাচল করার নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে।কৃষিজমি থেকে যারাই মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *