ঘূর্ণিঝড় মিধিলি : সারা দেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা

Slider সারাদেশ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া সদরঘাট থেকে সারাদেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সবধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণার কথা জানান ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মো: ইসমাইল হোসেন।

তিনি জানান, পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত সারাদেশের নদীপথে সবধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে।

সকল নৌযানকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে অনুরোধ জানান মো: ইসমাইল হোসেন।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) অধিদফতর আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলেছে, ঘূর্ণিঝড়টি আজ (শুক্রবার) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এতে আরো বলা হয়, যা আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যার দিকে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রপ্রাপ্ত দুপুর নাগাদ উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের উপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অভিভারি (৮৯ মিলিমিটার বা এর বেশি) বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।

এতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

এদিকে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটার বা এর বেশি) বর্ষণ হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

অন্যদিকে, আবহাওয়া অধিদফতরের সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর নৌ বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া, দেশের অন্যত্র একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *