যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরাইল

Slider সারাবিশ্ব


অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ইসরাইল। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে সেখানে লড়াইয়ে দৈনিক চার ঘণ্টার বিরতিতে রাজি হয়েছে ইসরাইল।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বিরতি শুরুর তিন ঘণ্টা আগে এই বিষয়ে প্রত্যেক দিন ঘোষণা দেয়া হবে।

ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি আরো বলেন, উত্তর গাজা থেকে লোকেদের সরে যাওয়ার জন্য দুটি ‘মানবিক করিডোর’ থাকবে এবং ইসরাইলিরা আমাদের বলেছেন যে, বিরতির সময় গাজার উত্তরাঞ্চলে কোনো সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে না এবং এই প্রক্রিয়াটি আজ থেকেই শুরু হচ্ছে।

কিরবি আরো বলেছেন, ‘উত্তর গাজায় চার ঘণ্টার বিরতি কার্যকরে ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্ত ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ।’ আমরা অবশ্যই যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিন এই বিরতি অব্যাহত থাকবে বলে দেখতে চাই।’

আর মানবিক বিরতির ক্ষেত্রে ইসরাইলের হামলা বন্ধের সময়কালে গাজায় ওষুধ এবং খাবার প্রবেশের অনুমতি পাবে। এছাড়া দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে, গাজায় বসবাসরত এমন বাসিন্দারা উপত্যকা ছাড়ার সুযোগ পাবেন। গাজায় দৈনিক ১৫০ ট্রাক পৌঁছানো এই বিরতির লক্ষ্য বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার সন্ধ্যায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, বন্দীদের মুক্তি ছাড়া গাজায় কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না। তবে কতজন বন্দীকে মুক্তি দিতে হবে, সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি। তাছাড়া তিনি তাদের পরিচয়ের ব্যাপারে কোনো অগ্রাধিকার দিচ্ছেন কিনা তাও জানা যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল যুদ্ধবিরতি না দেয়ার পক্ষে। যুক্তরাষ্ট্র কেবল মানবীয় বিরতির কথা বলছে। তারা মনে করছে, যুদ্ধবিরতি হলে হামাস নিজেদের আবার সংগঠিত করার সুযোগ পেয়ে যাবে।

হামাসের হাতে প্রায় ২৪০ জন বন্দী রয়েছে। তবে ইসরাইলের হিসাব অনুযায়ী, হামাসের হাতে বর্তমানে প্রায় ১৮০ জন বন্দী আছে। ইসলামিক জিহাদের হাতে আছে প্রায় ৪০ জন বন্দী। এছাড়া সশস্ত্র আরো কয়েকটি পরিবারের হাতে আরো ২০ জন বন্দী রয়েছে। একাধিক গ্রুপের কাছে বন্দী থাকায় আলোচনায় জটিলতা হচ্ছে বলে ইসরাইল মনে করছে। কাতার মূলত বিদেশে থাকা হামাসের নেতাদের সাথেই মধ্যস্ততার আলোচনা চালাচ্ছে।

ওয়ালা নিউজ সাইট জানিয়েছে, সোমবার টেলিফোন আলোচনার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে তিন দিনের মানবীয় যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, তাদের হাতে আটক বন্দীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করার জন্য তাদের এই সময় প্রয়োজন।

কিন্তু নেতানিয়াহু এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন যে হামাসকে বিশ্বাস করা যায় না। তারা হয়তো বেশি বন্দী মুক্তি দেবে না। তাছাড়া একবার যুদ্ধবিরতি হলে আবার আক্রমণ শুরু করা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ তখন আন্তর্জাতিক চাপও থাকবে অনেক বেশি।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। ওই দিন হামাসের হামলায় ইসরাইলে ১৪ শ’র বেশি লোক নিহত হয়। এছাড়া প্রায় ২৪৫ জনের মতো লোককে বন্দী করে নিয়ে আসে। এখন পর্যন্ত দুই দফায় চারজনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস।

অন্যদিকে ইসরাইলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার লোক নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

সূত্র : আল জাজিরা, এএফপি, টাইমস অব ইসরাইল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *