বিএনপিকে সমর্থন নয়, নিজেরাই হরতাল ডেকেছে জামায়াত

Slider রাজনীতি


জোটের শরিক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই সমমনা দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে কর্মসূচি দিতো বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। কখনও বিএনপি হরতালের ডাক দিলে জামায়াত সমর্থন দিয়ে মাঠে থাকতো। জামায়াত হরতালের ডাক দিলে বিএনপি সমর্থন দিতো। তবে রবিবার (২৯ অক্টোবর) বিএনপির হরতালে সমর্থন করে একাত্মতা ঘোষণা করেনি জামায়াত। বরং নিজেরাই পৃথকভাবে হরতাল ডেকেছে তারা।

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম শনিবার সন্ধ্যায় দলের পক্ষ থেকে হরতালে ঘোষণা দেন। রবিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। এক বিবৃতি তিনি বলেন, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং জামায়াত ঘোষিত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে পুলিশের বাধাদান ও মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদে রবিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।

আরামবাগে জামায়াতের সমাবেশ (ছবি: ফোকাস বাংলা) আরামবাগে জামায়াতের সমাবেশ (ছবি: ফোকাস বাংলা)

এদিকে শনিবার দুপুরে সংর্ঘষের কারণে বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেলে রবিবার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে দলটি। নয়াপল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে ‘আওয়ামী লীগ ও পুলিশ যৌথ হামলা চালিয়েছে’ অভিযোগ এনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টনের মঞ্চ থেকে হ্যান্ডমাইকে হরতালের ঘোষণা দেন। পরে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও হরতালের ঘোষণা দেওয়া হয়।

অন্যদিকে সমাবেশের অনুমতি না পেলেও সমাবেশ করতে সক্ষম হয় জামায়াত। রাজধানীর শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে চেষ্টা করে দলটি। বাধার মুখে পড়ে আরামবাগে দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু করে জামায়াতে ইসলামী। পুলিশের সঙ্গে একবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর বিকালে সমাবেশ শেষ করে সংগঠনটি। তবে মহাসমাবেশ থেকে কোনও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেননি জামায়াতের নেতারা। মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে নটরডেম কলেজের দিকে যাওয়ার পথে ও আরামবাগ মোড়ে পুলিশের দুইটি ব্যারিকেড থাকায় সমাবেশ শেষে শান্তিপূর্ণভাবে কমলাপুর রোড দিয়ে বের হয়ে যান দলের নেতাকর্মীরা।

আরামবাগে জামায়াতের সমাবেশস্থল ঘিরে রাখে পুলিশ আরামবাগে জামায়াতের সমাবেশস্থল ঘিরে রাখে পুলিশ

হরতাল ঘোষণার বিবৃতিতে জামায়াত জানায়, রাজধানী ঢাকার শাপলা চত্বরে জামায়াত ঘোষিত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৩ শতাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। মিটিং মিছিল করা যে কোনও রাজনৈতিক দলের সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার। জামায়াতের মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের বাস, লঞ্চ ও ট্রেন থেকে নামিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই গ্রেফতার সম্পূর্ণ বেআইনি, অগণতান্ত্রিক, অনাকাক্ষিত ও অনভিপ্রেত। সরকারের এই অন্যায় গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

জামায়াতের সমাবেশ জামায়াতের সমাবেশ

সেই সঙ্গে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিএনপির মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদ করছি। রবিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। হরতালের এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য আমি সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তি এবং দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি।

হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গাড়ি এবং ওষুধের দোকান হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানায় জামায়াত।

রবিবার দেশব্যাপী শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *