বগুড়ায় ডিবি হেফাজতে হাসপাতালে আইনজীবী সহকারীর মৃত্যু

Slider রাজশাহী


মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ বগুড়ায় হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন আসামী হিসেবে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় হাবিবুর রহমান নামে এক আইনজীবী সহকারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, ডিবি পুলিশের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে হাবিবের। তবে পুলিশ বলছে, একটি হত্যা মামলার তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছিলো। নির্যাতন তো দূরের কথা জিজ্ঞাসাবাদের আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন হাবিব।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় মঙ্গলবার বিকেলে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে হাবিবুর রহমানকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। এরপর রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাবিবকে মৃত ঘোষণা করেন।স্বজনদের দাবি জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে তাকে যে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান তারা। আর নিহতের সহকর্মীদের অভিযোগ, কোন এজাহারে নাম না থাকা স্বর্ত্ত্বেও ওয়ারেন্ট ছাড়া এভাবে একজন মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ এর নামে হত্যা করা যা পূর্বপরিকল্পিত। জানা যায় ডিবি কার্যালয়ে নিহত হাবিব অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শহরের মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করায় ডিবি সদস্যরা। হাবিবের মৃত্যুর পর রাত আনুমানিক এগারোটায় অ্যাম্বুলেন্স রাখা নিহতের লাশের পাশেই পুলিশের সাথে নানা তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে যায় হাবিবের সহকর্মী ও স্বজনেরা চান ন্যায় বিচার। যদিও হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: আতিকুর রহমান জানান, অচেতন অবস্থায় হাবিবকে হাসপাতালে ভর্তি করেন গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। সাথে সাথেই তারা অক্সিজেন এবং সিপিআর দিয়েছেন। তবে ইনডোরে নেয়ার পরে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালের পক্ষে তেমন কোন চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি তবে প্রাথমিকভাবে নিহতের শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।সার্বিক প্রসঙ্গে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার পিপিএম বলেন, গত আগস্টে বগুড়া শাজাহানপুর জোড়া তালপুকুর এলাকায় ৮৫ বছরের বৃদ্ধা খুকি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হাবিবুর রহমানকে হেফাজতে নেয় গোয়েন্দা বিভাগ। কারণ এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত একজনকে আগেই হেফাজতে নিয়েছিল শাহজাহানপুর থানা পুলিশ তার জবানবন্দী থেকেই হাবিবসহ বেশ কয়েকজনের নাম উঠে আসে। নির্যাতন তো দূরের কথা ডিবি কার্যালয়ে পৌঁছে সাক্ষাৎকার গ্রহণের আগেই হঠাৎ বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন হাবিব। তারপরেও এ ঘটনায় তদন্তে কমিটি গঠন করে আরো গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হবে।প্রকাশ থাকে যে, নিহত হাবিব বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার জোড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে এবং জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এর অনেক দিন পূর্বে, ২০১৩ সালে বৃদ্ধা খুকির ছেলে বিপুল হত্যা মামলার প্রধান আসামী ছিলেন নিহত হাবিবুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *