শেরপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি

রাজশাহী

মাসুদ রানা সরকার বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম দুনীতির অভিযোগ তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। বগুড়া জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেনকে আহ্বায়ক করে ওই কমিটি গঠন করা হয়।কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ওবায়দুল হক ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুবীর কুমার পাল। গত বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রশাসনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এই তথ্য জানায়। গঠিত ওই কমিটিকে আগামি সাত কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঘটনার বিবরণীতে জানা যায়, উপজেলা শাহ বন্দেগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ১২ টি অনিয়ম দুনীতির অভিযোগ এনে পরিষদের বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্য অনলাইনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।অভিযোগে বলা হয়,শাহ বন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা ক্রয়ের নামে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স, ব্যবসা বানিজ্যের ট্যাক্স বাবদ বিগত ২ বছর অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদেও তিনবছর ১% এর যে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তার সিংহভাগ টাকার কোন হদিস নেই। হতদরিদ্রদের কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকের পারিশ্রমিকের টাকা, ভিজিডি,ভিজিএফ, মা ও শিশু ভাতা, বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড বিতরণেও অনিয়ম করা হয়েছে। জন্ম নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, প্রত্যয়ন, ওয়ারিশিয়ান সনদ প্রাপ্তিতেও সীমাহীন ভোগান্তি ও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। এমনকি গ্রাম আদালতে বিচার প্রার্থীদের হয়রানি ও গোপনে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগে আরোও বলা হয় ইউনিয়ন পরিষদের কোন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়নি। এমনি কি পরিষদের মাসিক কোন সমন্বয় সভা করা হয় না। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে ইউপি সদস্যদের নানামুখী হুমকী ধামকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এই দিকে অভিযোগের বিষয়টি জানাজানি হবার পর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া এবং তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম আজাদ। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন,আমাদের আটজন ইউপি সদস্যের নাম উল্লেখ করে ওই অভিযোগটি দেওয়া হয়েছে। তবে এ সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। পাশাপাশি অভিযোগে আমার নাম ব্যবহার করায় থানায় আমি সাধারণ ডায়েরি করেছি। তবে সোহেল মেম্বার ওই অভিযোগটি জেলা প্রশাসক বরাবরে দিয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন।শাহ বন্দেগী ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আবুল কালাম আজাদ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি স্বীকার করলেও এটি ভুয়া অভিযোগ আখ্যায়িত করে বলেন, যে ইউপি সদস্যের নাম ব্যবহার করে অভিযোগ করা হয়েছে তিনি নিজেই সে বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাই থানায় জিডিও করেছেন। কে বা কারা ভুয়া মিথ্যা এই অভিযোগটি দায়ের করেছেন বলে দাবি করেন তিনি। জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন বলেন,অভিযোগ গুলো গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *