‘এক আঙুল পানি বাড়লেই আমিও মারা যেতাম’

Slider জাতীয়


চোখের সামনেই ছটফট করতে দেখেছি। মাত্র ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যেই চারজন মারা গেছেন। তখন এখানে হাঁটু পানি ছিল। আর এক আঙুল পানি বাড়লেই আমার দোকানে পানি উঠতো—আমিও মারা যেতাম। আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন। রাজধানীর মিরপুরে বিদ্যুতায়িত হয়ে একই পরিবারের তিন জনসহ চার জন নিহতের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী মো. জামাল হোসেন এভাবেই ঘটনার বিবরণ দেন। ঘটনার সময় পাশে নিজের কফিশপের ভেতরে ছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমি দোকানে বসে ছিলাম। বৃষ্টির মধ্যেই অনেকে চলাচল করছিলেন। হঠাৎ দেখলাম চার জন মানুষ ছটফট করছে। তখন আমার দোকানের সামনে হাঁটু পরিমাণ পানি ছিল। তখনও বৃষ্টি হচ্ছিল। পানি কমার পর তাদের উদ্ধার করা হয়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট তারা সেখানেই পড়েছিলেন।’

এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে মিরপুর মডেল থানার সিরাজিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা হাজী রোড ঝিলপাড় বস্তির বিপরীত পাশে রাস্তার ওপর এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সিরাজিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার দেয়াল কেটে বস্তিতে বিদ্যুৎ নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রবল বৃষ্টিতে ওই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বিদ্যুতের চোরাই লাইনে ছিঁড়ে পানিতে পড়লে বিদ্যুতায়িত হয়ে চারজন মারা যান।

চোরা লাইনের বিষয়ে ঘটনাস্থলের পাশের সেই দোকানি জামাল হোসেন বলেন, আমার দোকান বেশি দিন হয় নাই। আমি এসে এই লাইনটি দেখেছি।

বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনার পর পাঁচ জন গুরুতর আহত হলে তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চারজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন >> মিরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৪ জন নিহত, আহত ৫

নিহতরা হলেন- মো. মিজান (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা বেগম (২৫), মেয়ে লিমা (৭) ও তাদের উদ্ধার করতে যাওয়া মোহাম্মদ অনিক (২০)। মিজানের আরেক ছেলে আহত হোসাইনকে (৭ মাস) প্রথমে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এরপর শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

৭ মাস বয়সী শিশু হোসাইন যখন হাবুডুবু খাচ্ছিল এক ব্যক্তি তার পা ধরে টেনে তুললেন। শিশুটির পরনে ছিল নীল হাফপ্যান্ট ও সাদা গেঞ্জি। মুহূর্তেই নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় পা টেনে তোলা নিষ্পাপ শিশুটির ছবি। যা দেখে স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা দেশ। আঁতকে ওঠেন অনেকেই। কেউ সমালোচনা করছেন ঢাকার দুই মেয়রের, আবার কেউ দোষ দিচ্ছেন নিয়তির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *