কালীগঞ্জে শিশুকে বলাৎকার শেষে হাত-পা বেধে হত্যার চেষ্টা

Slider গ্রাম বাংলা


মো: সাজ্জাত হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গাজীপুরের কালীগঞ্জে ৬ বছরের শিশুকে বলাৎকার শেষে হাত-পা বেধে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মোটা অংকের টাকায় রফাদফায় নেমেছে স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আলী নেওয়াজ। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, গাজীপুরের নির্দেশ।

সরেজমিনে জানা যায়, রবিবার বিকালে উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চুপাইর (দিঘীরপাড়) এলাকায় কাওছার শেখের শিশু পুত্র (৬) বাড়ীর পাশে কাঠ বাগানে খেলতে গেলে স্থানীয় মো. জাহাঙ্গীরের ছেলে বখাটে মো. হাসিব (১৮) ও মো. সফিকুলের ছেলে বখাটে মো. সোহাগ মিয়া (১৬) জোরপূর্বক একটি পরিত্যক্ত জঙ্গলে নিয়ে বলাৎকার শেষে হাত-পা বেধে হত্যার উদ্দেশ্যে শিশুর পরিহিত হাফপ্যান্ট খুলে মুখের ভিতর দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে গভীর জঙ্গলে ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয় গৃহবধু শরিফা মাঠে চড়ানো ছাগল আনতে গিয়ে জঙ্গলের ভিতরে গোংড়ানীর শব্দ পেয়ে ভয়ে চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে শিশুটিকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য জরুরী ভিত্তিতে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনা স্থানীয় ভাবে জানা জানি হলে চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মো. আলী নেওয়াজ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঘটনা রফাদফায় নামেন। তিনি মূল অপরাধীদের বাঁচাতে প্রতিবেশী চাঁন মিয়ার ছেলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী রাজীব শেখ এর উপর বলাৎকারের দোষ চাপায়। এতে স্থানীয়রা ক্ষীপ্ত হয়ে মূল ঘটনা প্রকাশ্যে আনেন। পরে স্কুল শিক্ষক মিশন সফল করতে গাজীপুর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নাম ভাঙ্গিয়ে ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের পরোক্ষভাবে হুমকি দিয়ে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পরে গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করার সময় ঐ স্কুল শিক্ষক অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, বখাটে হাসিব ও সোহাগ খুব খারাপ প্রকৃতির লোক। তাদের পরিবারের লোকজন এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে পারে না। ঘটনার পর থেকে এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে।

এ বিষয়ে শিশুর মা মাহমুদা বেগম জানান, কিছু দিন পূর্বে প্রতিবেশী জাহাঙ্গীরের ছেলে হাসিব তার বাড়ীর ছাদের উপর নিয়ে বলাৎকার করে। পরে আমার ছেলে এ ঘটনা আমাদের কাছে বলে দিলে আমরা তার পিতার কাছে বিষয়টি জানাই। তার জের ধরেই গত রবিবার বিকেলে আমার ছেলেকে তারা বলাৎকার শেষে হাত-পা বেধে গভীর জঙ্গলে ফেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

এ বিষয়ে চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মো. আলী নেওয়াজ বলেন, আজ সকালে এডিশনাল এসপি আমাকে ফোন দিছে। বলল কি ঘটনা? আমি বিস্তারিত বলছি। বললাম স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যান নিয়ে আপোষ মিমাংসা করে কাগজ পাঠিয়ে দিব। এডিশনাল এসপি সাব বিষয়টি মিমাংসার জন্য আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আব্দুল মান্নান মোল্লা জানান, এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখ জনক। আমি ও চেয়ারম্যান সাহেব ঘটনাস্থলে গিয়ে ছিলাম। ভূক্তভোগী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। এখনো পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ পাই নাই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।

এ বিষয়ে গাজীপুর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. সানোয়ার হোসেন পিপিএম বার জানান, এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *