তৃণমূল মানুষের আস্থা অর্জন করে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তৃণমূলের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করে, তা ধরে রেখে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা তৃণমূলের মানুষ জনগণের ভোটে নির্বাচিত, জনগণের সেবক। জনগণের কল্যাণে কাজ করা আপনার আমার সকলেরই দায়িত্ব। আর এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে মানুষের সেবা করে এবং মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করে আপনারা এগিয়ে যাবেন।’

আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারী বাসভবন গণভবনে প্রথমবারের মত আয়োজিত ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

গণভবনে সারাদেশের স্থানীয় সরকারের পাঁচটি স্তরের জনপ্রতিনিধিদের বিশাল মিলনমেলায় তিনি বলেন, ‘মানুষ একবার যখন আপনাদের ভোট দিয়েছে তারা আবারো যেন আপনাকে ভোট দিতে পারে জনগণের সেই আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।’

তিনি বলেন, “আজকের যে উন্নয়ন সেটা দীর্ঘদিনের কষ্টের ফসল। এটা যেন কেউ আর নষ্ট করতে না পারে। কারণ ’৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যতটুকু এগিয়ে ছিলাম বিএনপি জামায়াত জোট আবার সেটা পিছিয়ে দিয়েছিল।”

তিনি বলেন, ‘মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আপনাদের দাঁড়াতে হবে। কেউ যেন এই মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত না হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’

তার সরকার ৫৬০টি মডেল মসজিদ করে দিচ্ছে এবং আমাদের মন্দিরগুলো সংস্কারেও অর্থ দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মসজিদ, মন্দির, গীর্জা বা প্যাগোডা যেটার যেখানে যা প্রয়োজন আমরা তা করে দেবো। আমাদের যারা অন্যান্য সম্প্রদায় তাদের সাথে এক হয়ে চলব, কেননা একই সাথে আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি।

বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও উপাসনালয়ে আগুন দেয়ার মত ঘটনার উল্লেখ করে জনপ্রতিনিধিদের তিনি এই বিষয়গুলো ভালোভাবে দেখার আহবান জানিয়ে বলেন, এই দেশ সকলে মিলে স্বাধীন করেছি। এই দেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ এবং সেভাবেই এগিয়ে যাবে।

বিদেশগামীরা যাতে তার সরকারের করে দেয়া প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রদত্ত সুবিধা নিয়ে বিদেশে যেতে পারেন এবং দালালের খপ্পড়ে পড়ে সর্বস্বান্ত না হন সেদিকেও লক্ষ্য রাখার আহবান জানান।

সারাদেশের তার সরকারের প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখার জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি জামায়াত জোট ২০০১ সালে সরকারে এসে এগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল।

তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বলেন, তার সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়ন করেছে আর আগামীবার ক্ষমতায় আসতে পারলে আর কোনো গ্রাম, কোন রাস্তা যেগুলো কাঁচা রয়েছে সেগুলো আর কাঁচা থাকবে না।

তিনি বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা এটা যেন অব্যাহত থাকে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতিসঙ্ঘ ঘোষিত এসডিজি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বদরবারে আরো উচ্চ আসনে নিয়ে গিয়ে বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব বলেও এ সময় তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ব্যর্থ হয় নাই, আমরা ব্যর্থ হতে দেবো না। আমাদের বাংলাদেশ, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি এগিয়ে যাবে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম স্বাগত বক্তৃতা করেন।

আরো বক্তৃতা করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, রাজশাহী সিটি কর্পোারেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ স্থানীয় সরকারের পাঁচটি স্তরের বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিবৃন্দ।

সরকার প্রতিবছর ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ‘সেবা ও উন্নতির দক্ষ রূপকার, উন্নয়নে-উদ্ভাবনে স্থানীয় সরকার’- এই স্লোগান নিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা, কর্মতৎপরতা, গুরুত্ব ও সর্বোপরি জনসচেতনতা তৈরি এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে দিবসটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বছর প্রথম বর্ষ হিসেবে এ কর্মসূচি ১৪ সেপ্টেম্বর পালিত হচ্ছে।

সূত্র : বাসস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *