আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফের সিরিজ ড্র করলো বাংলাদেশ

Slider খেলা

আফগানিস্তানের বিপক্ষে আরাধ্য জয় অধরাই থেকে গেলো। ঘোচালো না ৪৪ বছরের আক্ষেপ, বাড়লো অপেক্ষা। যদিও চেষ্টা ছিল, ম্যাচ জুড়ে উত্তেজনাও ছড়ালো বটে, তবে মেলেনি কাঙ্খিত জয়ের দেখা। রোমাঞ্চ ছড়িয়েও অমীমাংসিতই রয়ে গেল। আফগানিস্তানের সাথে আজো ড্র করেছে টাইগাররা, ম্যাচ নিষ্পত্তি হয়েছে ১-১ গোলে।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ফিফা দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ প্রীতি ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচ গোল শূন্য ড্র হওয়ায় এই ম্যাচের ওপরই নির্ধারণ করছিল সিরিজের ভাগ্য। ফলে বৃষ্টিভেজা মাঠেই উত্তেজনা ছড়ালো শুরু থেকেই।

দুই দলের খেলোয়াড়রা মেজাজ হারাচ্ছিলেন শুরু থেকেই, যা চললো পুরো ম্যাচ জুড়ে। ম্যাচের ৬ষ্ঠ মিনিটেই ফাউল করে হলুদ কার্ড খেয়ে বসেন আফগানিস্তানের এক ফুটবলার। তবে ১৭তম মিনিটে যা হয়, তা ফুটবলের জন্য খুব একটা ভালো নয়! মাঠ থেকে মাঠে বাইরেও ছড়ায় উত্তেজনা, হয় ধস্তাধস্তিও!

আফগান অধিনায়ক নূরের কাছ থেকে বল কেড়ে সামনের দিকে রাকিবের কাছে দিয়েছিলেন বিশ্বনাথ। এই সময় আফগানিস্তানের এক খেলোয়াড় ফাউল করে বসেন রাকিবকে। ঘটনার শুরু এখান থেকেই। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েন খেলোয়াড়েরা।

যা পৌঁছায় দুই দলের ডাগ-আউটেও। আফগানিস্তানের কুয়েতি কোচ আব্দুল্লাহ আল মুতাইরি তো নিজ ডাগ-আউট ছেড়ে বাংলাদেশের ডাগ-আউটের দিকে তেড়ে আসেন। বাংলাদেশের কোচিং স্টাফরাও বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। দু-এক মিনিট ধস্তাধস্তিও হয় দুই পক্ষের মধ্যে।

এমনকি একটা সময় আফগান কোচ নিজ ফুটবলারদের মাঠ ছেড়ে উঠে আসার নির্দেশও দিয়ে দেন। যদিও তা সামলে নেন বাকি স্টাফরা।

এদিকে ম্যাচ পরিচালনায় নিয়োজিত নেপালি রেফারিরা অবশ্য পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশের সহকারী কোচ হাসান আল মামুন ও আফগান কোচ আব্দুল্লাহ আল মুতাইরিকে দেখান লাল কার্ড।

এমন ঘটন আফগানিস্তান দলকে কিছুটা মুষড়ে দিয়েছিল। যার সুযোগে বাংলাদেশ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। চালাতে থাকে আফগান রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ। যদিও গোল আসেনি প্রথমার্ধে। বরং ৪৪তম মিনিটে হলুদ কার্ড পান বাংলাদেশের মুরসালিন শেখ।বিরতি থেকে ফিরে ম্যাচের ৫২ মিনিটে হঠাৎ আফগানিস্তান ম্যাচে লিড নেয়। কর্নার কিক থেকে গোল করে জাভার সারজা আফগানদের এগিয়ে দেন। পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। যার ফলও আসে দশ মিনিটের মাঝেই। বাংলাদেশকে সমতায় ফেরান মোরসালিন।

ম্যাচের ৬২ মিনিটে রাকিবের কাছ থেকে বল নিয়ে বিশ্বনাথ ঘোষ আফগান রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে তা এগিয়ে দেন মুরসালিনের দিকে। ভুল করেননি এই তরুণ মিড ফিল্ডার, সেটি থেকেই গোল আদায় করে নেন তিনি। যা জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তার চতুর্থ গোল।

এরপর অবশ্য আফগানিস্তান সেভাবে আর আক্রমণে উঠতে পারেনি। তারিক কাজী, ইসা ফয়সাল, তপু বর্মণ আর বিশ্বনাথ ঘোষের বদৌলতে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ ছিল আঁটসাট। যদিও বাংলাদেশ দল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রাখলেও তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।

মোরসালিনের গোলের আগে আরেকটি ভালো সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের বক্সের একটু সামনে ফ্রি কিক পেয়েছিল স্বাগতিকরা। তবে বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া কয়েক মিনিট সময় নিয়ে ফ্রি কিকটি মারলেও পোস্টের ওপর দিয়ে বল চলে যায় বাইরে।

ফলে আর কোনো গোল না হলে অমীমাংসিত থেকে যায় ম্যাচের ফল। আগের ম্যাচে গোলশূন্য অবস্থাতে ম্যাচ শেষ হওয়ায় দুই ম্যাচের সিরিজ শেষ হয় ড্রতে। ফলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের অপেক্ষা দীর্ঘ হলো বাংলাদেশের। সর্বশেষ ১৯৭৯ সালে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ঢাকায় বাংলাদেশ জিতেছিল ৩-২ গোলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *