মৃত্যুর ৭ দিন আগে মাকে যা বলেছিলেন সালমান শাহ

Slider বিনোদন ও মিডিয়া


বাংলা সিনেমার রাজকুমার সালমান শাহ’র ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার। মাত্র ২৫ বছর বয়সেই ১৯৯৬ সালের আজকের এদিনে অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে মারা যান তিনি। সালমান নেই- এ সত্য এখনো বিশ্বাস করতে পারেন না তার শুভাকাঙ্ক্ষী-ভক্তরা। অমর এই নায়কের চলে যাওয়ার কি স্বাভাবিক মৃত্যু, আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড তা আজও রহস্য।

তবে ক্ষণজন্মা এই নায়কের পরিবার মনে করে, এটি স্বাভাবিক কোনো মৃত্যু ছিল না। ‘হত্যা’ করা হয়েছে তাকে। এমন অভিযোগ এনে সালমানের মা নীলা চৌধুরী আইনের আশ্রয়ও নিয়েছেন। যা নিয়ে হয়েছে নানা তদন্ত। তবে মেলেনি অভিযোগের সত্যতা। প্রতিটি তদন্তেই সালমান শাহ’র আত্মহত্যার তথ্য উঠে এসেছে।

সালমানের মা নীলা চৌধুরী বলেন, ‘সালমান শাহ মৃত্যুর মাত্র সাত দিন আগে কোনো এক রাতে আমাকে বলছিল- মা, আমাকে তারা তোমার কাছে ফিরতে দেবে না। আমি তখন প্রশ্ন করেছিলাম- তারা কারা। তখন সে কিছুই বলেনি। এত কোনো সন্দেহ নেই যে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আজিজ মোহাম্মদ ভাই, সালমান শাহর স্ত্রী সামিরাসহ চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে তার স্ত্রী সামিরা, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনের আরও অনেকে। একটা মানুষ খারাপ হলে তাকে মানুষ এতদিন মনে রাখত না। সালমান শাহকে খুন করে সামিরা ঘর করে বেড়াচ্ছে। তার ঘরও টিকছে না। ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমি ছেলের হত্যার বিচার চেয়ে যাব।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় সালমান শাহ’র রহস্যমৃত্যু ঘটে। সেই রহস্যের জট এখনও খোলেনি। দফায় দফায় তদন্ত, প্রতিবেদন দাখিল হয়েছে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি নায়কের পরিবার কিংবা ভক্তরা। কারণ সেসব প্রতিবেদনে বরাবরই বলা হয়েছে, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন।

সালমান শাহ’র জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, সিলেটের দড়িয়াপাড়ায়। তার পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। সিনেমার জন্যই তিনি সালমান শাহ নামটি ধারণ করেছিলেন।

সালমান শাহ’র শোবিজে যাত্রাটা শুরু হয় ১৯৮৫ সালে বিটিভির নাটক ‘আকাশ ছোঁয়া’ দিয়ে। এরপর বেশ কয়েকটি খণ্ড ও ধারাবাহিক নাটকে দেখা গেছে তাকে। ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে সিনেমায় এই নায়কের আত্মপ্রকাশ।

মাত্র ৪ বছরের ক্যারিয়ারে সালমান শাহ উপহার দেন ২৭টি সিনেমা। এ তালিকায় আছে- ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ (১৯৯৩), ‘তুমি আমার’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘সুজন সখী’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্নেহ’, ‘প্রেম যুদ্ধ’ (১৯৯৪), ‘কন্যাদান’, ‘দেনমোহর’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘আঞ্জুমান’, ‘মহামিলন’, ‘আশা ভালোবাসা’ (১৯৯৫), ‘বিচার হবে’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘প্রিয়জন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘জীবন সংসার’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ (১৯৯৬), ‘প্রেমপিয়াসী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘শুধু তুমি’, ‘আনন্দ অশ্রু’ ও ‘বুকের ভেতর আগুন’ (১৯৯৭)।
facebook sharing button
twitter sharing button
whatsapp sharing button

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *