পূর্বাচলে দুই বছরের মধ্যেই শেখ হাসিনা স্টেডিয়াম

Slider বাংলার সুখবর


‘শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম’ এখনো অবয়ব পায়নি। নৌকার আদলে দৃষ্টিনন্দন বিশাল আকৃতির এই স্টেডিয়ামের অবয়ব পেতে আরও ২ বছর সময় লাগবে। রাজধানীর পূর্বাচলে এই স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। বর্তমানে গ্রাউন্ডসের কাজ চলছে। প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বপ্নের এই স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম জানান, শুধু স্টেডিয়ামই নয়, এখানে একাডেমি, ৫ ফেডারেশন ও হোটেল হবে। বিসিবির অফিসও থাকবে। ২ বছর লাগবে স্টেডিয়ামটি তৈরি হতে। আগামী বছর গ্রাউন্ডস ও মাঠের কাজ শেষ হলে খেলা চালানোর উপযোগী হবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, পূর্বাচলে বিশাল জায়গাজুড়ে স্টেডিয়াম তৈরির কাজ এগিয়ে চলেছে। টিন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে স্টেডিয়ামের জায়গা। বাইরে ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ চলছে। ভেতরে মাঠ সমান বা উপযোগী করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব তদারকির জন্য কাজ করছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গ্রাউন্ডস কমিটির কর্মকর্তা ও কিউরেটর। তারা সবাই অস্ট্রেলিয়ার কিউরেটর টনি হেমিংয়ের নেতৃত্বে কাজ করছেন। এ ব্যাপারে কথা হয় স্থানীয় একজন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) কিউরেটরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘টনির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তার সঙ্গে আমার আগেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। সে এই কাজ করার জন্য বেস্ট। গ্রাউন্ডসের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে।’

শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামটি যেখানে রয়েছে, সেই জমির মধ্যে দুটি বাড়ি রয়েছে। টিনের ছাপড়া ঘরের মতো। স্টেডিয়াম নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই স্থাপনা সরাতে নোটিশ দেওয়া

হয়েছে। তারা চলে যাবে অন্যত্র। এই স্টেডিয়ামের ব্যাপারে আশপাশের মানুষেরা বেশ উৎসুক। ওই এলাকায় স্টেডিয়াম হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার ঘটবে। শেখ হাসিনা স্টেডিয়াম হলে মিরপুরে বিভাগীয় ক্রিকেট ও পূর্বাচলে আঞ্চলিক ক্রিকেটের কার্যক্রম চলবে।

বিসিবি সূত্র বলছে, অভিজ্ঞ কিউরেটর টনি হেমিংয়ের নির্দেশে পুরো গ্রাউন্ডসের কাজ শেষ করা হবে। তিনি ঠিক ২ বছরের জন্যই এসেছেন। ক্রিকেট মাঠ ও মাটির প্রস্তুতিতে বিশেষজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ কিউরেটর তিনি। অস্ট্রেলিয়ার পার্থে কাজ করেছেন। আইসিসির একাডেমি ও দুবাইয়ে পিচ কিউরেটর ছিলেন। তিনি এই কাজে সেরা সেটা তার পূর্বের অভিজ্ঞতাই বলছে।

গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম জানান, এই স্টেডিয়ামের খরচ প্রচুর। ট্যাক্স মওকুফ হয়ে গেলে সে খরচ কমবে। আর স্থাপনার আগে খেলার মাঠ, পিচ ও প্র্যাকটিস ফিল্ড আগে হবে। যেটা আগামী বছরে প্রস্তুত হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘আউটডোর ফিল্ড, প্র্যাকটিস ফিল্ড হবে। আমরা দুটোকেই প্রস্তুত করার কাজ শুরু করব। এরপর বর্ষার আগেই মাঠের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাও সম্পন্ন করা হবে। এখনো যদি উইকেট তৈরি করতে পারি, তা হলে আগামী বছর ক্রিকেট মৌসুমে ক্রিকেট খেলা সম্ভব হবে। উইকেট আর আউটফিল্ড তৈরি হয়ে গেলে বাকি কাজগুলো খেলা চালিয়েও করা সম্ভব হবে। বিশ্বের অনেক জায়গায় স্টেডিয়ামের রি-ডেভেলপমেন্ট হয়, সেখানে খেলা চলা অবস্থায় মাঠের বাইরের কাজগুলো চলমান থাকে।’

শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ হবে দেশের মাটি দিয়ে। মাহবুব আনাম বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি দিয়ে উইকেট বানাতে পারলে সবচেয়ে ভালো হবে। আমরা আগেই প্রমাণ করেছি, এটি সম্ভব। আপনি যদি আমাদের সিলেট ও বগুড়ার উইকেট দেখেন, সেখানকার উইকেট আমাদের মাটি দিয়েই তৈরি।’

বিসিবি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম হবে শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামটিতে কেবল মাঠই নয়, একাডেমি ভবন হচ্ছে। বিসিবির একটা নিজস্ব অফিস থাকবে। একটি হোটেল থাকবে। এ ছাড়া ক্রিকেটার্স ক্লাব, তার সঙ্গে একাডেমি ও একটা অতিরিক্ত মাঠ হচ্ছে। তার বাইরেও ৫টি ফেডারেশনের অফিস থাকবে।

বিসিবির পরিচালক মাহবুব আনাম আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নামে এই স্টেডিয়ামটা আমরা উৎসর্গ করেছি। যে সহযোগিতা বা অনুদান আমাদের এই স্টেডিয়ামের জন্য তিনি করেছেন, সেটাকে স্মরণীয় করে রাখতে চাই। সুতরাং স্টেডিয়ামের নামকরণে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। হয়তো ভেতরের বাণিজ্যিক বিষয়গুলো থাকে, সেখানে হবে। কিন্তু নামকরণের বিষয়ে আমরা অনড়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *