কে এই ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন?

Slider সারাবিশ্ব


রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন পুতিনের সাবেক এই ঘনিষ্ঠ সহযোগী। যুদ্ধের শুরুতে তিনি পুতিনের পক্ষে থাকলেও পরবর্তী সময়ে বিপক্ষে অবস্থান নেন। এরপরই শিরোনাম হতে থাকেন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের।

১৯৬১ সালের ১ জুন সেন্ট পিটার্সবার্গে জন্মগ্রহণ করেন প্রিগোজিন। তার বেড়ে ওঠাও সেখানে। শৈশবেই বাবাকে হারান প্রিগোজিন। তার মা স্থানীয় হাসপাতালে কাজ করে সংসার চালাতেন।

১৯৭৯ সালের নভেম্বরে ১৮ বছর বয়সী প্রিগোজিন প্রথম চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন। দুই বছর পর ১৯৮১ সালে আবার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি। এ ছাড়া ডাকাতি, জালিয়াতি ও কিশোর-কিশোরীদের অপরাধে জড়িত করার জন্য ১২ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন প্রিগোজিন।

১৯৯০ সাল থেকে পুতিনের সঙ্গে পরিচয় প্রিগোজিনের। ক্রেমলিনের বিভিন্ন খাবারের চুক্তি পাওয়ার মাধ্যমে ধনী হয়ে ওঠেন তিনি। এক সময় তিনি ‘পুতিনের শেফ’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দোনবাসে রাশিয়াপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিদ্রোহের সময় প্রিগোজিন একজন নির্মম সেনাপতি হিসেবে আলোচনায় আসেন। তখনই তিনি গড়ে তুলেন ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ। এই বাহিনী ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে লড়াই করে। বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার স্বার্থের পক্ষে কাজ করে।

রাশিয়া ও ইউক্রেন ছাড়াও মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, সুদান, লিবিয়া, মোজাম্বিক, ইউক্রেন ও সিরিয়াতে সক্রিয় ওয়াগনার যোদ্ধারা। বিগত বছরগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ‍কুখ্যাতি পেয়েছেন প্রিগোজিন।

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর আলোচনায় আবারও আসেন প্রিগোজিন। পূর্ব ইউক্রেনের সলেদার শহর দখলের রুশ অভিযানের নেতৃত্বে ছিল ওয়াগনার যোদ্ধারা। এটি বাখমুত থেকে কয়েক মাইল উত্তর-পূর্ব দিকে।

কিন্তু এরপর রাশিয়ার সেনাবাহিনী, সেনাপ্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমালোচনা করে প্রিগোজিন। মে মাসে হঠাৎ করেই প্রিগোজিন ঘোষণা দেন যে বাখমুত থেকে তার যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করা হবে। পরবর্তী সময়ে তিনি ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক বিদ্রোহ ঘোষণা করেন।

সর্বশেষ বুধবার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রিগোজিন মারা গেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। রুশ কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যু নিশ্চিত না করলেও ওয়াগনারের টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোন থেকে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে রাজধানী মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গগামী একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। বিমানে সাতজন যাত্রী ও তিনজন ক্রু ছিল। যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন প্রিগোজিন ও ওয়াগনারের উপপ্রধানও।

ব্যক্তিগত বিমানটি উড্ডয়নের আধা ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার পর ওই উড়োজাহাজে আগুন ধরে যায়। রাশিয়া জানিয়ে ১০ আরোহীর মরদেহই তারা উদ্ধার করেছে। আপাতদৃষ্টিতে প্রিগোজিনের মরদেহ পাওয়া গেছে বলে ধারণা তাদের। তবে ডিএনএ পরীক্ষা না করে তারা নিশ্চিত করতে চাইছেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *