মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিকারাগুয়ার ১০০ মিউনিসিপাল কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই কর্মকর্তারা একটি জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া ও একজন বিশিষ্ট বিশপকে জেলে পাঠানোর কাজে জড়িত ছিলেন।
গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, এই কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সুশীল সমাজের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে। এমনকি সেন্ট্রাল আমেরিকান ইউনিভার্সিটি (ইউসিএ) নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এছাড়া বছরখানেক আগে প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগার কট্টর সমালোচক বিশপ রোলানদো আলভারেজকে ২৬ বছরের সাজা দেওয়া হয়।
পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা হয়, আজ নিকারাগুয়ায় নাগরিক স্বাধীনতার ওপর আঘাত আনায় ওর্তেগা-মুরিলো প্রশাসনের ১০০ কর্মকর্তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করছে পররাষ্ট্র দপ্তর। এই কর্মকর্তারা নাগরিক সংগঠন ও স্থানের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে। নাগরিকের স্বাধীনতা নিয়ে যারা কথা বলেছে তাদের আটক করেছে। যেমন বিশপ রোলান্দো আলভারেজ।
ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়, নিকারাগুয়ায় যারা গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলছে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা নিকারাগুয়ার জনগণের মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকারকে সম্মান করি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেন, নিকারাগুয়ায় সহিংস প্রচার, অবৈধ আটক ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েস্টার্ন হেমিসফায়ার অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক সহকারী সচিব ব্রায়ান নিকোলস বলেন, আমরা অবিলম্বে বিশপ আলভারেজের নি”শর্ত মুক্তি চাই।
নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি নিকারাগুয়ার সরকার।
এর আগেও ওর্তেগা প্রশাসনের কমকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজারিও মুরিলো, তার তিন সন্তান, সিনিয়র সরকারি কমর্কতা, পুলিশ ও সেনা কমকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডাও।
১৯৬০ সালে জেসুইটসরা ইউসিএ বিশ্ববিদ্যায়লটি প্রতিষ্ঠা করে। এটিই একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। ২০১৮ সালে এখান থেকে সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে। সহিংসভাবে সেই আন্দোলন দমন করে ওর্তেগা সরকার। এরপর থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। যেসব কর্মকর্তারা দেশের বাইরে গিয়েছিলেন তাদেরও আটকে দেওয়া হয়েছে।