রেলে অগ্রিম টিকিট কারো মুখে হাসি, কেউ শঙ্কায়

Slider জাতীয় ঢাকা

wqedwqd

কমলাপুর স্টেশন থেকে: সেহরি খেয়ে ভোরে যারা কমলাপুরে স্টেশনে এসেছেন তারা শঙ্কায় পড়েছেন টিকিট পাবেন কিনা! মধ্যরাতেই কমলাপুর স্টেশনে টিকিটের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হয়েছে।

তবুও ভোরে যারা এসেছেন, তারা আশায় বুক বেধে দাঁড়িয়েছেন। বাড়ি তো যেতে হবে!

শুক্রবার (১০ জুলাই) কমলাপুর স্টেশনে বিক্রি হচ্ছে ১৪ জুলাইয়ের অগ্রিম টিকিট। আর এ টিকিট পেতে রাত থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন শতাধিক মানুষ।

শুক্রবার সকাল ৯টায় টিকিট কাউন্টার খুললেও তার আগেই কমলাপুর স্টেশনে কাণায় কাণায় পূর্ণ হয়ে যায়; যেনে তিল ধারণের ঠাঁই নেই!

কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজকে টিকিট কাটতে আসা লোকের সংখ্যা তুলনামূলক অনেক বেশি। দিন যত যাবে, ভিড় তত বাড়বে কমলাপুরে।wqedwqd

এদিকে, এ পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশনে সুশৃঙ্খলভাবে টিকিট বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, টিকিট কাটার সময় নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় নষ্ট হচ্ছে। প্রতি টিকিট কাটার জন্য ২ থেকে ৩ মিনিট সময় ব্যয় হচ্ছে, যা একমিনিটে সম্ভব মনে করেন যাত্রীরা।

এ বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তা পূরণ করে ছাড়তে হয়, যা সেকেন্ড ব্যবধানে সম্ভব হয় না।

মোহাম্মদপুর থেকে আসা হাসিবুল ইসলাম বলেন, কোন ট্রেনের কয়টা টিকিটের আসন খালি আছে, এটা যদি প্রতিমূহূর্তে জানানো যেতো, তাহলে সুবিধা হতো। তাহলে যারা লাইনে দাঁড়াচ্ছেন, তারা বুঝতে পারতেন, টিকিট পাবেন কি পাবেন না।

এদিকে, শুক্রবার ১৪ জুলাইয়ের টিকিট পেয়ে কেউ বিজয়ের হাসি হাসছেন, আবার কেউ শঙ্কায় আছেন টিকিট পাবেন কিনা!

শুক্রবার সকাল ১১টা না বাজতেই যাত্রীদের পক্ষ থেকে এসি টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।

ধানমণ্ডি থেকে আসা রিফাতুল ইসলাম জানান, তিনি এসি টিকিট চাইলে কাউন্টার থেকে জানানো হয়েছে, তা শেষ হয়ে গেছে। প্রতিবছরই এসি টিকিট নিয়ে বড় অনিয়ম হয় বলে অভিযোগ এ যাত্রীর।

রিফাতুল ইসলামের মতো এমন অভিযোগ অন্যান্য যাত্রীদেরও।

শুক্রবার দ্বিতীয় দিন ১৪ জুলাইয়ের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এভাবে আরো তিন দিন অগ্রিম টিকিট দেওয়া হবে। ১৩ জুলাই পর্যন্ত অগ্রিম টিকিট দেওয়া হবে, যা ছেড়ে যাবে ১৪ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত। আর ফিরতি টিকিট বিক্রি করা হবে ২০ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত।

জানা গেছে, স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন বাংলাদেশ রেলওয়েতে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হয়ে থাকে। পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

উন্মুক্ত কোটায় নয় হাজার ৩৫ টিকিট
রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কমলাপুর থেকে আন্তঃনগর ট্রেনের মোট টিকিটের সংখ্যা ১৪ হাজার ৫১২টি। এর মধ্যে অনলাইন টিকিট যাবে তিন হাজার ২৩৯টি। ভিআইপি কোটায় ৭৩৩ ও রেলওয়ে স্টাফদের জন্য সংরক্ষিত কোটায় বরাদ্দ ৭৩২ টিকিট। সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত কোটায় টিকিট বিক্রি হবে ৯ হাজার ৩৫টি। রেলস্টেশনের ১৮ নম্বর কাউন্টার থেকে স্লিপের মাধ্যমে ই-টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন যাত্রীরা।

অভিযোগ ও তথ্যকেন্দ্র
কমলাপুর রেলস্টেশনে র‌্যার-৩-এর পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে, একটি অভিযোগ কেন্দ্র। এখানে যাত্রীদের অভিযোগ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঈদের আগ পর্যন্ত এই ক্যাম্প থাকবে। স্টেশনের চারপাশ জুড়ে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন র‌্যাবের সদস্যরা।

এখানে কর্মরতরা জানান, টিকিট কালোবাজারীসহ যাত্রীরা কোনো অভিযোগ করলে আমাদের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও যাত্রী নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সহায়তার জন্য রেলওয়ে চট্টগ্রাম পুলিশের পক্ষ থেকে ঢাকা রেলওয়ে থানার মাধ্যমে পুলিশ তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এখানেও দায়িত্ব পালন করছেন কয়েকজন। যে কোনো সহায়তার জন্য ০১৭৬৯-৯৩৬৫৩৯ এই মোবাইল ফোন নম্বরে যাত্রীদের যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে আরেকটি পৃথক সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে কমলাপুর রেলস্টেশনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *