এবারও জনগণ ভোট দিতে পারবে না, যদি…

Slider রাজনীতি


ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার থাকলে গত দুটি নির্বাচনের মতো এবারও জনগণ ভোট দিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি মন্তব্য করেন।

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ‘ফরমায়েশি সাজার প্রতিবাদে এবং ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে গত দুটি নির্বাচনে ভোট চুরি-ডাকাতি হয়েছে- এটা প্রমাণিত হয়েছে। আবারও প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করে এই সরকার বৈতরণী পাড় হতে চেষ্টা করছে। কিন্তু এবার বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে, এবার তা হবে না। এর জন্য অবশ্যই জনগণের ভোটে সরকার নির্বাচিত হতে হবে। জনগণকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু এই সরকার থাকলে তা হবে না।’

বিচারিক আদালত তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দণ্ড দেওয়া প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘মূল বিষয় হলো এই সময়ে এই রায়টা কেন? মূলত টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া- দেশের সব মানুষ যখন তাদের অধিকারের কথা বলতে শুরু করেছে, যখন পরিষ্কার করে ঘোষণা দিয়েছে; এখন আর অন্য কোনো দাবি নয়, এখন একটাই দাবি এই ফ্যাসিস্ট, ভয়াবহ গণতন্ত্রের শত্রু এই অবৈধ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। ঠিক তখনই চলমান আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্যেই তারেক রহমান ও তার স্ত্রী স্বনামধন্য চিকিৎসক ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এ রায়।’

চলমান আন্দোলনে বানের পানির মতো মানুষ আসতে শুরু করেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দুর্বার আন্দোলন গড়ে, তরঙ্গের পর তরঙ্গের মতো আন্দোলন গড়ে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সব দল একত্রিত হয়েছে। চলমান যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে যারা আছেন, তারা ছাড়াও সিপিবি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একই দাবি করেছে।’

প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুন। দেশ ও জনগণের পক্ষে থাকুন। অন্যায় আদেশ মানবেন না। নিপীড়িত জনগণের পাশে দাঁড়ান।

তিনি বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং অধিকারের জন্য কথা বলেন দেশের মানুষ ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকারের জন্য আজ সংগ্রাম করছে। তারেক রহমান আজ শুধু একজন নেতাই না, তিনি আজ দেশের ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির সংগ্রামের নেতা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ সার্বভৌমত্বে যারা বিশ্বাস করে, তারা মনে করে জিয়াউর রহমান সার্বভৌমের পতাকা টিকিয়ে রেখেছে, সেই লক্ষ্যে এখন দায়িত্ব পালন করছে তারেক রহমান।’

নেতাকর্মীরা এখনো হামলা মামলার হয়রানির শিকার হচ্ছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘রাতে নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারে না, জামিনে থাকলেও গ্রেপ্তার করছে। কারাগারে এখন ২৪ ঘণ্টা লকআপে রাখা হচ্ছে।

এ সময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, একজন ছাত্রদল নেতার শরীরে দেখলাম ৪৮টি গুলির চিহ্ন, তার হাতে পায়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটানো হয়েছে- এর নাম গণতন্ত্র? গত কয়েক বছরে অনেক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে, সাংবাদিকরা ঠিকমতো ভয়ে লিখতে পারে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরীর পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের শহীদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক আল মোজাদ্দেদী আলফে ছানী প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *