শেষ সাক্ষাতে কারাগারে জাহাঙ্গীরের পরিবারের সদস্যরা, আজই কি ফাঁসি কার্যকর?

Slider রাজশাহী


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক তাহের আহমেদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হতে পারে আজ রাতে। রাজশাহী কারাগারে এ ধরনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির পরিবারকেও শেষ সাক্ষাতের জন্য ডাকা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর ফাঁসির আসামি জাহাঙ্গীরের পরিবারের ৩৫ সদস্য কারাগারে প্রবেশ করেছেন। এরআগে তাদেরকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। আর কারাগারের ভেতরে চলছে কর্মকর্তাদের বৈঠক।

কারা সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় যে কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা তারা এ বৈঠকে আছেন।

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার আব্দুল জলিল কোনো কথা বলতে চাননি। রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল একটি সভায় আছেন জানিয়ে মুঠো ফোনে আমাদের সময়কে বলেন, মৃত্যুদণ্ড ও কার্যকরের বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। আপাতত কিছু জানাতে পারছি না।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মো. ফারুক আমাদের সময়কে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। বিষয়টি নিয়ে তিনি কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেই কথা বলার পরামর্শ দেন।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে ড. এস তাহের হত্যা মামলায় চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি জাহাঙ্গীরের আটকের বৈধতা নিয়ে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

জাহাঙ্গীরের ভাই সোহরাবের করা রিটের শুনানি শেষে গত ১৭ জুলাই বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট খারিজ করে আদেশ দেন। পরে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া স্থগিত চাওয়া হয়। সেই আবেদন আজ খারিজ করে দেওয়া হলো।

এদিকে কারাগারে ঢোকার আগে ফাঁসির আসামি জাহাঙ্গীর আলমের ভাই মিজানুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, গত রোববারই তাদের চিঠি দিয়ে সাক্ষাতের জন্য ডাকা হয়েছে। রিট খারিজের পর আজ তারা এসেছেন। যারা সাক্ষাৎ করবেন তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নেওয়া হয়েছে। এখন বাইরে অপেক্ষা করছেন। ডাক পড়লে ভেতরে গিয়ে সাক্ষাৎ করবেন।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের আহমেদ। ২ ফেব্রুয়ারি তাঁর লাশ বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয়। এই হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন।

পরে দণ্ডপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও আসামি নাজমুল আলম ও তাঁর স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন।

তবে আপিলে সাজা কমে যাবজ্জীবন হওয়া দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখেন। এরইমধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করেছেন রাষ্ট্রপতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *